সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে এগিয়ে চলেছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:০২ অপরাহ্ন, ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

প্রতীকী ছবি

নারী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে বিশ্বের উন্নয়ন সম্ভব। নারীরা যত বেশি করে শিক্ষাগ্রহণ করবে এবং কর্মক্ষেত্রে অংশ নিবে, বিশ্ব তত দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে। ভারত এই নারী ক্ষমতায়নের পথেই এগিয়ে যাচ্ছে।

এক্ষেত্রে ভারতের বর্তমান রাষ্ট্রপতি, শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মু নারী ক্ষমতায়নের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ছোট এক উপজাতি পরিবার থেকে এসে আজ বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে পরিচালনা করছেন তিনি। একইসাথে তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রতিরক্ষা বাহিনির কমান্ডার-ইন-চিফ। সূচনালগ্ন থেকেই ভারত লিঙ্গবৈষম্যকে মেনে নেয় নি। ভারতের সংবিধানেও ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলের জন্যেই নির্বাচনের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। 

বর্তমানে ভারতে অনেক নারী প্রতিনিধিরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচিত নারী প্রতিনিধিরা ভারতের সর্বক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। দেখা যায়, ভারতের গ্রামীণ সমাজব্যবস্থায় মোট ১৪ লাখ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে ৪৬ শতাংশই মহিলা। 

নারীদেরকে নিজ পায়ে দাঁড় করানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে সরকারি ও বেসরকারিভাবে। মূলত এ উদ্যোগগুলোর কারণেই নারীরা আজ স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পেরেছেন এবং আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছেন। 

করোনা মহামারীতে পুরো বিশ্ব স্থবির হয়ে গেলেও এ উদ্যোগ এবং উদ্যোক্তারা কিন্তু থেমে থাকেন নি। বিভিন্ন সংস্থা নারী কর্মীদের নিয়ে তখন মাস্ক ও স্যানিটাইজার তৈরি করে৷ ভারতে নার্স ও মিডওয়াইফদের মধ্যে ৮০%ই মহিলা। তারা দুর্যোগকালীন সময়ে সাহসিকতার সাথে মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন।

ভারত সরকার নারীদের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন যোজনা গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুদ্রা যোজনার অধীনে প্রদত্ত ঋণের প্রায় ৭০% প্রদান করা হয় মহিলাদেরকে। তাছাড়া উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে প্রায় ১০০ মিলিয়ন রান্নার গ্যাসের সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে বছর বছর মহিলাদের কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তাছাড়া দেশের মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মধ্যেও এক চতুর্থাংশই নারী৷ চন্দ্রযান হোক কিংবা মিশন মঙ্গল, ভারতের এ পদক্ষেপগুলোর সাফল্যের পেছনেও রয়েছে নারীরা। বর্তমানে সারা ভারতের উচ্চ শিক্ষিত নাগরিকদের মধ্যে পুরুষদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে নারীরা৷ 

মহিলা পাইলটেরা এখন যুদ্ধবিমান চালাচ্ছেন। সশস্ত্র বাহিনির সকল শাখায় রয়েছে নারীদের সাহসিকতার প্রমাণ। 

ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার গ্রামীণ কৃষি পরিবারগুলোর দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, এসব পরিবারের ভিত্তি হিসেবে রয়েছেন মহিলারা। তারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিসেবেও কাজ করে চলেছেন। 

পরিবেশের সাথেও নারীদের রয়েছে এক আত্মিক সম্পর্ক। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারে নানারকম উদ্ভাবনী পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে নারীরা। এক্ষেত্রে অমৃতা দেবীর নাম উল্লেখযোগ্য। রাজস্থানের মেয়ে অমৃতা দেবী চিপকো আন্দোলন শুরু করেন, যার মূল লক্ষ্য ছিল অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাঠ কাটা প্রতিরোধ করা। পরিবেশ রক্ষার্থে কাজ করে চলেছে মিশন লাইফ নামের একটি সংগঠন। এ সংগঠনেও আইনজীবী হিসেবে নিয়োজিত আছেন মহিলারা। 

বৈশ্বিক অর্থনীতিকেও এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখছেন নারী উদ্যোক্তারা। ভারতে ১৯৫৯ সালের শুরুর দিকে মুম্বাইয়ের সাতজন মহিলারা তৎকালীন সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে শ্রী মহিলা গৃহ উদ্যোগ নামে এক আন্দোলন গড়ে তোলেন।

দুগ্ধজাতীয় খাবার তৈরিতেও মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেখা যায়৷ গুজরাটে প্রায় ৩৬ লাখ মহিলা এ কাজের সাথে যুক্ত। 

তবে আজও গৃহ এবং কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নানা অসুবিধার মুখোমুখি হতে হয়। আর তাই সকলের উচিত সম্মিলিতভাবে মহিলাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গঠন করা।

বর্তমানে ভারত নারী উন্নয়ন ধারণা থেকে সরে এসে নারী নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের উপর লক্ষ্য রাখছে। এর মাধ্যমে ভারত নি:সঙ্কোচে স্বীকার করে নিচ্ছে যে নারীদের মধ্যে নেতৃত্ব গুণাবলি রয়েছে এবং নারীরা যেকোন উন্নয়নমূলক কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, নারী অগ্রগতির ফলে মহিলারা কেবল পরিবারের আয়ই বৃদ্ধি করছে না, একইসাথে দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। 

নারী ক্ষমতায়নের সুযোগ সৃষ্টিতে মোদী বিশ্বকর্মা প্রকল্পের কথা তুলে ধরে দক্ষতা উন্নয়নের গুরুত্বের উপর জোর প্রদান করেন।

এসকে/ এএম/ 


ভারত রাষ্ট্রপতি করোনা নারী ক্ষমতায়ন শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মু

খবরটি শেয়ার করুন