সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানি সেনা সদস্যরা বারবার টিটিপি’র হামলার শিকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:০২ অপরাহ্ন, ২৪শে জুলাই ২০২৩

#

গত এক সপ্তাহ ধরে পাকিস্তানের জোব এবং বেলুচিস্তানের অন্যান্য এলাকায় পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের উপর ক্রমাগত হামলা চালাচ্ছে তেহরিক ই তালেবান (টিটিপি) সদস্যরা। এতে অনেক সেনা সদস্য নিহত হন। এ ঘটনা স্পষ্টতই ইঙ্গিত করে যে, টিটিপি সদস্যদের থামাতে সেনাসদস্য বিশেষ করে আইএসআই সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। 

এ ধরনের হামলা সেনাসদস্যদের জন্যেও একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। চীনা অর্থায়নে পরিচালিত সিপিইসি এর পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল এবং পশ্চিম সীমান্তবর্তী ফাঁড়ি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল এই জোব। 

এ অঞ্চলে টিটিপি সদস্যদের আক্রমণ ও নতুন উদ্বেগের জন্ম দেয়। দেখা যাচ্ছে, টিটিপি সদস্যরা নতুন অস্ত্রে সুসজ্জিত এবং তারা হামলার ক্ষেত্রেও নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করছে। পাঁচজন প্রশিক্ষিত এবং সুসজ্জিত সন্ত্রাসী এই এলাকায় হামলা চালায়৷ তাদের কাছে নাইট ভিশন স্কোপসহ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এবং আমেরিকান অস্ত্রশস্ত্রও রয়েছে।

আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনি অনেক অস্ত্র ফেলে রেখে গিয়েছিলো। সেগুলো তালেবানের সাথে সাথে টিটিপি সদস্যরাও লাভ করে। 

পাকিস্তানের সাথে চুক্তি বাতিল করে এবং পাকিস্তানকে হুমকি প্রদান করে ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত টিটিপি সদস্যদের আক্রমণে ১০০ জনেরও বেশি সৈন্য নিহত হয়েছে। চলতি বছরে তিনজন সিনিয়র আইএসআই অফিসার নিহত হন টিটিপি সদস্যদের হাতে। টিটিপি আক্রমণ নিয়ন্ত্রণে তালেবানকে রাজি করাতে সেনাসদস্যদের ব্যর্থতার ফল ভুগতে হচ্ছে সবাইকে।

গত কয়েক বছর ধরে টিটিপিকে মোকাবেলার ক্ষেত্রে সেনা সদস্যদের ব্যর্থতা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও হুমকির সম্মুখীন করে। এ দায়ভার বর্তায় আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আনজুমের উপর।

তার পূর্বসূরি, লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদ তালেবানের বিজয়ে তাদের সাথে কাজ করেছিলেন। আফগান অভিযানের সময় তিনি টিটিপি সদস্যদের সাথেও কাজ করেছিলেন। টিটিপির সাথে গোপন শান্তি চুক্তিটি তার নির্দেশে স্বাক্ষরিত হয় এবং যখন তাকে কোর কমান্ডার হিসেবে পেশোয়ারে স্থানান্তরিত করা হয় তখনও তিনি জঙ্গি গোষ্ঠীর সাথে আলোচনার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। সেসময় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে, টিটিপির বেশ কয়েকজন কট্টর সিনিয়র নেতাকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, হামিদ যখন আইএসআই প্রধান এবং পেশোয়ার কর্পস কমান্ডার ছিলেন তখন টিটিপি পাকিস্তানের উপজাতীয় এলাকায় তাদের প্রভাব বৃদ্ধি করে। তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তবে খানের পতনে গোটা সমীকরণ পালটে যায়।

গত বছরের নভেম্বরে জঙ্গি গোষ্ঠী যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রত্যাহার করার পর থেকে সেনাবাহিনীর উপর হামলা ধারাবাহিকভাবে চলছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে জোব এলাকায় প্রথম সন্ত্রাসী হামলা হয়। চলতি বছরের মে মাসে, জামায়াত-ই-ইসলামীর প্রধান সিরাজুল হক আত্মঘাতী বোমা হামলার কবলে পড়েন, যদিও তিনি হামলা থেকে রক্ষা পান। ২ জুলাই, সন্ত্রাসীরা জোব-ডেরা ইসমাইল খান হাইওয়েতে পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনীর চেকপোস্টে হামলা করে। এতে তিনজন পুলিশ সদস্য এবং একজন ফ্রন্টিয়ার কর্পস অফিসার নিহত হন। ১২ জুলাই তারা দ্বিতীয় আক্রমণ চালায় এবং এতে ১২ জন সেনা সদস্য নিহত হন। পরবর্তীতে ১৬ জুলাই মধ্যরাতে তারা আবার সেনা সদস্যদের উপর হামলা চালায়।



পাকিস্তানি সেনা সদস্য টিটিপি

খবরটি শেয়ার করুন