সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:৪১ অপরাহ্ন, ১৫ই আগস্ট ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পেছন থেকে দেশটির শাসনক্ষমতার কলকাঠি নাড়ছে। সম্প্রতি দেশটিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ার উল হক কাকারকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাঁর এ নিয়োগ সেনাবাহিনীর উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনেই হয়েছে। 

শনিবার (১২ই আগস্ট) এশিয়ান লাইটের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন দুর্বল। কোন অরাজনৈতিক ব্যক্তি বা সেনাপ্রধানের পক্ষে এ অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। বিশ্বব্যাংকের মতে, এ বছর দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ০.৫ শতাংশেরও কম। তাই দেশটির জেনারেল হেডকোয়ার্টার (জিএইচকিউ) সরাসরি দেশটির শাসন ক্ষমতায় আসতে চায় না। বরং তারা স্পেশাল ইনভেস্টমেন্ট ফেসিলেশন কাউন্সিল (এসআইএফসি) এর একজন সদস্য হিসেবে পেছন থেকে দেশকে চালাতে  চায়। 

এছাড়া সম্প্রতি জঙ্গী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান-ই-পাকিস্তানের (টিটিপি) সক্রিয় সদস্যরা পাকিস্তানির উপজাতীয় অঞ্চলে অবস্থান করছে। টিটিপি এর সদস্যরা পাকিস্তানে শরিয়াভিত্তিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। একারণে দেশটি নিরাপত্তা ঝুঁকিতেও রয়েছে। 

পাকিস্তানের সেনা প্রধান জেনারেল অসীম মুনিরের সামনে ইমরান খান ও টিটিপি একই সমস্যার দুটো দিক। 

ইমরান খানকে আটক এবং তাকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার পর তাঁর জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা পাকিস্তানি সেনবাহিনীর জন্য একটি সমস্যা। 

এদিকে পাকিস্তানির আগামী নির্বাচনের প্রচারণায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ যোগ দিতে পারেন। তার ছোট ভাই শাহবাজ শরীফ আগেই ঘোষণা করেছিলেন, যদি দল ক্ষমতায় আসে তাহলে আবারও নওয়াজ প্রধানমন্ত্রী হবেন। 

নওয়াজ শরীফ তার ছোট ভাই শাহবাজ শরীফের চেয়ে আরও দক্ষ রাজনীতিবিদ। তিনি নিজের অনুপস্থিতিতেও পাঞ্জাব প্রদেশে প্রভাব ধরে রেখেছেন। পাকিস্তানের অধিকাংশ সেনাসদস্য এ প্রদেশের। এ প্রদেশকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেরুদন্ডও বিবেচনা করা হয়। 

ইমরান খানের অনুপস্থিতে নওয়াজ শরীফ অবশ্যই নির্বাচনের মাঠে সুবিধা পাবেন। এছাড়া পিটিআই এখন বিভক্ত হয়ে দূর্বল হয়ে পড়েছে। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আটক এবং নির্বাচনে তাকে অযোগ্য ঘোষণার পর এখনো তার সমর্থকরা সফল আন্দোলন করে তাকে মুক্ত করতে পারেনি। 

তবে পিটিআই থেকে যারা বের হয়ে গেছে তারা পিটিআইয়ের শুরু থেকে ছিল না। পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যরা এটিতে এখনো আছে। যদি তারা দেশটির সেনা বাহিনীর সমর্থন পান তবে আবারও পিটিআই শাসক্ষমতায় আসতে পারে। 

দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সেনাবাহিনীর সাথে সম্পর্ক খারাপ করে ভুল করেছিল। তার সবচেয়ে বড় ভুল ছিল ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স এর প্রধানকে অপসারণ করা। 

সহজভাবে বলতে গেলে আগামী কয়েকমাস পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হবে। এটা নওয়াজ এবং জার্দারির জন্য খারাপ সংবাদও হতে পারে। তবে দেশটিতে গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন ঘটতে পারে কেননা পাকিস্তানের জিএইচকিউ শুরা হোয়াইট হাউজ এবং পেন্টাগনের সদিচ্ছা বজায় রাখতে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে। 

এম.এস.এইচ/

পাকিস্তান

খবরটি শেয়ার করুন