প্রিয়তমা আমার,
তোমার শেষ চিঠিতে তুমি লিখেছো, রবিবার ভোরের ট্রেনে তুমি আসছো। রবিবার যে আমার কত প্রতীক্ষার ফল তুমি তা টের পাচ্ছ কি?
আমি সারা দিনমান শুধু তোমাকে একবার দেখার জন্য তৈরি হচ্ছি। কেন যেন প্রতিটি ক্ষণকেই ভীষণ রকমের ভালোলাগার অনুভূতি দিয়ে জড়াচ্ছি আর ভাবছি, কী করবো, কোথায় যাবো? নীলক্ষেত না দোয়েল চত্বর! কোন পোশাকটা পরবো, আরো কতো কী!
শেষ যেদিন তোমাকে দেখেছিলাম, তুমি গোলাপি শাড়িতে দ্যুতিময় করে গেছো আমাকে। সেই দ্যুতিতে চারটি বছর ধরেই আমি আলোকিত। ধরেই নিয়েছিলাম সেই বাতি হয়তো নিভেই গেছে। হয়তো কোনো দিন আর দেখা হবে না, কোনোদিন ভাগ্য বুঝি আর একসাথে করবে না আমাদের।
মনে পড়ে, তোমার সাথে যে দিনই দেখা হতো বৃষ্টিস্নাত থাকতো সারাদিন। ভুল করে হঠাৎ লেগে যাওয়া তোমার আঙুলের ছোঁয়া সারাক্ষণ সিক্ত করে রাখতো আমাকে। দেখা হবে ভাবতেই সেই ছোট বালকের মতো আজও শিহরিত হই, পুলকিত হই, আনন্দিত হই! আচ্ছা বলতে পারো, আমার মনের বয়স কেন বাড়ছে না? তুমি থুরথুরে বুড়ি হলেও কি তোমাকে একবার দেখার আয়েশ আমার মিটবে না?
আমার মেম সাহেব, বারবার কী মনে হচ্ছে জানো! সেই ছোট্ট বেলার প্রেম আমার কালো মেম, কোথায় গেলে হারিয়ে?
তুমি আসছো। আমাকে ভীষণ আবেগে ভাসিয়ে দিতে তুমি আসছো! তোমাকে দেখার জন্য আমার দু’চোখ বহুকাল ধরে প্রতীক্ষিত, তৃষ্ণার্ত! তুমি এসো।
প্রিয় নীল শাড়িতে, নীল চুড়িতে, নীলাঞ্জনা হয়ে তুমি এসো।
এই জীবনে জীবনকাঠি হয়ে তুমি এসো,
আমার বুকের পাঁজরে চুপটি করে বসো!
আর আমাকে তোমার ভালোবাসার চাদরে জড়িয়ে নাও। ভালো থেকো। আমার মেম সাহেব।
——ইতি
চিরকাল তোমার অপেক্ষায় তোমার জন্ম-জন্মান্তরের প্রেমিক।
আরও পড়ুন : যাওয়ার আগে হয়তো তোমায় আর দেখতে পাবো না —ইতি এম.এন. খন্দকার
এস/ আই. কে. জে/