সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেন বাসে বমি হয়, ঠেকানোর উপায় কী

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:৫১ অপরাহ্ন, ৪ঠা অক্টোবর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

অনেকেরই বাসে উঠলেই বমি পায়। এর জন্য কোথাও যেতে চায় না। গাড়িতে উঠলে এমন বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া অথবা মাথা ঘোরাকে মোশন সিকনেস (motion sickness) বলে। ভ্রমণের আনন্দই মাটি হয়ে যায় মোশন সিকনেসের কারণে, পড়তে হয় বিব্রতকর অবস্থায়।

চলুন জেনে নেই বাসে বমি হওয়ার কারণ ও এর প্রতিকারের উপায়।

বাসে বমি কেন হয়?

সাধারণত বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসে উঠলে এই ধরনের মোশন সিকনেস হয়। গতি ও জড়তার ফলে মস্তিষ্কে সমন্বয়হীনতায় বাহনগুলোতে বমির সমস্যা হতে পারে। অন্তঃকর্ণ আমাদের শরীরের গতি ও জড়তার ভারসাম্য রক্ষা করে।

যখন আমরা গাড়িতে চড়ি তখন অন্তঃকর্ণ মস্তিষ্কে খবর পাঠায় যে সে গতিশীল। কিন্তু চোখ বলে ভিন্ন কথা। কারণ তার সামনের বা পাশের মানুষগুলো কিংবা গাড়ির সিটগুলো থাকে স্থির। চোখ আর অন্তঃকর্ণের এই সমন্বয়হীনতার ফলে তৈরি হয় মোশন সিকনেস। এছাড়া অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে বমি হতে পারে, অসুস্থতার জন্য বমি হতে পারে, বাজে কোনও গন্ধের কারণেও বমি হতে পারে।

যাত্রা পথে বমি থেকে মুক্তির উপায়

১) গাড়িতে সামনের দিকে বসার চেষ্টা করুন। পেছনের দিকে বসলে বেশি গতিশীল মনে হয়।

২) জানালার পাশে বসার চেষ্টা করুন। জানালা খোলা রাখুন, বাইরের বাতাস ভিতরে আসতে দিন। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকুন। গাড়ির ভেতরের দিকে খুব বেশি সময় তাকিয়ে থাকবেন না।

৩) যেদিকে গাড়ি চলছে সেদিক পেছন দিয়ে বসবেন না, এতে বমি ভাব বেশি হয়।

৪) অন্য যাত্রীর বমি করা দেখলে যদি বমি পায় তাহলে সেদিকে মনোযোগ দিবেন না।

৫) গাড়িতে উঠলে বমি হবে এমন চিন্তা করবেন না। নিজেকে শান্ত রাখুন, লম্বা লম্বা শ্বাস নিতে পারেন। বমির কথা ভুলতে গান শুনতে পারেন।

৬) হালকাভাবে চোখ বন্ধ করে রাখুন। ভ্রমণের আগের রাতে ভালোভাবে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

৭) ভ্রমণের আগে হালকা কিছু খেয়ে বাসে উঠুন। কখনই খালি পেটে ভ্রমণ করবেন না। ভ্রমণের আগে ভারী কিছু খাবেন না। যাত্রাপথে বাইরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, এসিডিটি হয় এমন খাবার না খাওয়াই ভলো।

৮) গাড়ি চলন্ত অবস্থায় বই পড়া ও মোবাইলে ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

৯) আদা বমি রোধের জন্য অনেক উপকারী, আদা হজমে সাহায্য করে। আদা কুঁচি চিবুতে পারেন। বমি ভাব দূর হয়ে যাবে। প্রয়োজনে আদা চা খেতে পারেন।

১০) দারুচিনি চিবুতে পারেন। দারুচিনি খাবার হজমে সাহায্য করে, তাই খাবার হজমের সমস্যাজনিত কারণে বমি হলে দারুচিনি খেতে পারেন।

আরও পড়ুন : ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই ভুলগুলো করছেন নাতো চুলের সাথে

১১) টক জাতীয় ফল খেলেও বমি ভাব দূর হয়। এছাড়া লেবু পাতার গন্ধ, কমলা লেবুর গন্ধেও বমি ভাব দূর হয়। গরম লেবুর পানিতে একটু লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন। মাথাব্যথা, বমি এবং বমিবমি ভাব দূর করতে এই পানি উপকারী। কিন্তু গ্যস্ট্রিকের সমস্যার কারণে বমি হলে লেবু না খাওয়াই ভালো।

১২) যখনই বমি ভাব হবে মুখে এক টুকরা লবঙ্গ দিন। এতে বমি ভাব চলে যাবে। সাথে মুখের দুর্গন্ধ ও চলে যাবে।

১৩) অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে তখন বমি ভাব হলে পুদিনাপাতা খেতে পারেন। পুদিনাপাতা দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন।

১৪) খুব দীর্ঘ ভ্রমণ হলে বিরতি নিতে পারেন। বিরতির সময় হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন।

১৫) চুইংগাম খেতে পারেন। এতে মুখ এবং মন ব্যস্ত থাকবে এবং বমি ভাব হবে না।

১৬) খুব বেশি সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বমি নিরোধক ওষুধ খেতে পারেন।

এই কয়েকটি জিনিস লক্ষ রাখলেই বাসে বমি হওয়া থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আশা করি উপকার হবে। আপনার যাত্রা শুভ হোক। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

এস/ আই. কে. জে/ 

বাসে বমি কারণ ও প্রতিরোধে

খবরটি শেয়ার করুন