ফাইল ছবি
নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উদযাপিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সংগঠন।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে ঢাকাসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা, রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ, কেক কাটা, বস্ত্র বিতরণ, খাদ্য বিতরণ, আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়েও একই কর্মসূচি পালিত হয়।
শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার জ্যেষ্ঠ কন্যা। বর্তমানে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
বিকেলে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। এতে অংশ নেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন, মতিয়া চৌধুরী, আবদুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির (নানক), মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনসহ কেন্দ্রীয় ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু কামনাসহ আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সফলতা কামনা করে দোয়া করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্টের দক্ষিণ হলে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আবদুন নূরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনির প্রমুখ বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, গান, কবিতাপাঠ ও বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট। সংগঠনের সভাপতি ও কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ও জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় মসজিদের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মোনাজাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে সকাল নয়টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডার বৌদ্ধ মন্দিরে, খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে এবং বেলা ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। এসব কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের নিয়ে কেক কেটেছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ সুবিধাবঞ্চিত পথ শিশুদের নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় ‘স্মার্ট চিলড্রেন কার্নিভ্যালে’ এ কেক কাটা ও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আইসিটি সচিব মো. সামসুল আরেফিন, বিসিসি নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনি বলেন, গতিশীল নেতৃত্ব, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, মানবিক মূল্যবোধ, বিচক্ষণতা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু দেশেই নন, বহির্বিশ্বেও অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
বিরোধীদলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করে বলেন, পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা সহায় হোন যাতে তিনি (শেখ হাসিনা) দেশ থেকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য, দুর্নীতি, সন্ত্রাস নির্মূল করতে পারেন এবং দেশবাসীকে সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার ও উন্নত জীবন গঠনে সহায়তা করতে পারেন।
একে/ আই.কে.জে
