শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজিএমইএ এর নির্বাচন নিয়ে জটিলতা

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, ৮ই আগস্ট ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) আগামী পর্ষদ নির্বাচন নিয়ে যেন জটিলতার শেষ নেই। ২০২৩ সালের মে মাসে এর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি ফারুক হাসান গত এপ্রিলে নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়ে নেন।

সেই হিসেব অনুযায়ী বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ শেষ হবে অক্টোবরে। তবে তার আগেই অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই করতে হবে নির্বাচন। বিজিএমইএর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, নির্বাচনের ৯০ দিন আগে নির্বাচন বোর্ড গঠন এবং ৮০ দিন আগে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে এসবের কিছুই এখনো বর্তমান পর্ষদ করেনি। বরং নতুন করে মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করছে বর্তমান পর্ষদ। এতে করে সংগঠনটির নির্বাচন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। 

এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দাবি করেছে বিজিএমইএর নির্বাচনকালীন জোট ফোরাম। গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দেয় তারা। এতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচনপ্রক্রিয়া শুরু না করায় বর্তমান সভাপতির বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনার পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান ফোরামের নেতারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফোরামের প্যানেল লিডার ফয়সাল সামাদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হলো। এমন প্রেক্ষাপটে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিজিএমইএর নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু না করায় আমরা বিব্রত বোধ করছি। আইন অমান্য করে নির্বাচনপ্রক্রিয়া এখনো কেন শুরু করা হচ্ছে না, সেটি পরিষ্কার করছেন না সভাপতি। যদি তাঁর কাছে কোনো উত্তর না থাকে, তাহলে শিল্পের স্বার্থে গ্রহণযোগ্য সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া উচিত এবং যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা দরকার।’

২০২১ সালের এপ্রিলে নির্বাচনে জয়ী হয়ে নির্বাচনকালীন জোট সম্মিলিত পরিষদ জয়ী হয়। সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে দুই বছরের জন্য পর্ষদ গঠিত হয়। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে তৈরি পোশাকশিল্পের বর্তমান অবস্থা, শ্রমিক গতিবিধি ও পবিত্র রমজান মাসের শ্রম পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার কারণ দেখিয়ে পর্ষদের মেয়াদ ছয় মাস বাড়াতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে বর্তমান পর্ষদ। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কয়েকটি শর্তে তা অনুমোদন দেয় বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগ। 

এতে বলা হয়, বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ ১২ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হলো। বর্ধিত মেয়াদের ১৫ দিন আগেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। নির্বাচনের জন্য মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না। 

এ বিষয়ে বিজিএমইএর একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, বিজিএমইএর বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বর্তমানে বাণিজ্য সংগঠন আইন সংশোধনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে রয়েছে। পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে সেটি পাস হতে পারে।

এদিকে বিজিএমইএর আগামী পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের জন্য সম্মিলিত পরিষদের নেতারা তুসুকা ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরশাদ জামাল ও ফোরাম সুরমা গার্মেন্টসের পরিচালক ফয়সাল সামাদকে প্যানেল লিডার হিসেবে চূড়ান্ত করেছে।

এব্যাপারে জানতে চাইলে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম বলেন, ‘নির্বাচন দিতে আমাদের কোনো বাধা নেই। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে সবুজসংকেত না পাওয়ায় নির্বাচন বোর্ড গঠন করা হয়নি।’

এ বিষয়ে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিজিএমইএর বর্তমান পর্ষদ পুনরায় অতিরিক্ত সময় চেয়েছে। আবার সময় দেওয়া যায় কি না, সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। মন্ত্রণালয় এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।’

এম.এস.এইচ

বিজিএমইএ

খবরটি শেয়ার করুন