ছবি: সংগৃহীত
ভারতের মাটিতে বসতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের এখনও চার মাস বাকি। তবে সেখানে টাইগারদের দল কেমন হতে পারে তা নিয়ে এখন থেকেই গরম ক্রিকেটপাড়া। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন থেকে শুরু করে বিসিবি পরিচালক ও সাবেক টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন যেই গণমাধ্যমকর্মীর মুখোমুখি হোন না কেন সবাইকেই এখন কথা বলতে হচ্ছে বিশ্বকাপ দল নিয়ে।
আসন্ন বিশ্বকাপে কেমন দল হতে পারে তা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিসিবি সভাপতি মিরপুরে গণমাধ্যম কর্মীদের কিছুটা ধারণা দিয়েছেন। কিন্তু আসন্ন বিশ্বকাপ দল গঠনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব যার ওপর, সেই নান্নু এখন এ নিয়ে কথা বলতে নারাজ। সাবেক এই অধিনায়কের দাবি, বিশ্বকাপ দল নিয়ে নাকি এখনো কিছু ভাবছেনই না তারা। আপাতত আসন্ন সিরিজ গুলো নিয়েই চিন্তা ভাবনায় রয়েছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে গতকাল শুক্রবার (১৯ মে) নিজের বাসায় সাংবাদিকদের নান্নু বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে আমরাই এক মাত্র দল যাদের এখন থেকেই বিশ্বকাপের দল গঠন নিয়ে আলোচনা চলছে। আপনাদের এটাও দেখতে হবে ব্যাক টু ব্যাক অনেকগুলো সিরিজ আছে, এগুলোর পর ফিটনেস, পারফরম্যান্সসহ আরো কিছু রয়েছে যা দেখে বিশ্বকাপ দল গঠন করতে হবে। সুতরাং এটা (বিশ্বকাপ দল গঠন) নিয়ে এখন আমরা এখন চিন্তা ভাবনা করছি না, এখন আমরা আফগানিস্তান সিরিজে আছি এটা নিয়েই এগোচ্ছি, আর তা নিয়েই চিন্তা ভাবনা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চারদিকে কী কথা হচ্ছে তা নিয়ে ভাবছি না এখনো চার মাস সময় রয়েছে। আমাদের এখন আফগানিস্তান সিরিজ রয়েছে সামনে। ব্যাক টু ব্যাক সিরিজ নিয়ে আমরা চিন্তা ভাবনা করছি। আফগানিস্তান সিরিজে তিনটা ফরম্যাটেই আমরা খেলব। আর এটা নিয়েই আমরা দল গুছানোর কাজ করছি। সুতরাং বিশ্বকাপ নিয়ে এখন আমি কিছু বলতে পারবো না।’
এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে টাইগারদের প্রধান কোচের দায়িত্বে আসার পর থেকেই শোনা যাচ্ছে এক ফরম্যাটে খারাপ করার পর অনেক ক্রিকেটারকে তিন ফরম্যাটের দল থেকেই বাদ দেওয়া হয়। এর সর্বশেষ উদাহরণ হতে পারেন নুরুল হাসান সোহান। তিনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে করেন ৫ ম্যাচে ৪১ রান। আর ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টে চার ইনিংসে করেছিলেন ৫৬ রান। এমন পারফরম্যান্সের পর দলের বাইরে চলে যান তিনি।
নান্নু অবশ্য জানিয়েছেন সোহান তাদের ভাবনার মধ্যেই আছেন। ২৪ জনের যে পুল আছে সেখানে রয়েছেন সোহানও। ২৪ জনের কাউকেই চোখের আড়াল করা হয়নি। এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘আমাদের কিন্তু ২৪ জনের একটা পুল আছে। যেখানে সোহানসহ আরো অনেক ক্রিকেটার আছে। যাকে যখন দরকার পড়ে তখন তাকে নেওয়া হয়েছে। আমাদের পুলের ক্রিকেটারদের কাউকে কিন্তু চোখের আড়াল করা হয়নি। তাই চিন্তার কোনো কারণ নেই। এটা ন্যাশনাল পুল, পুলের মধ্যে আছে যখন চোখের আড়াল হয়নি। হাথুরুসিংহে যখন আবার কোচ হয়ে আসে এখানে আগে যে খেলোয়াড় ছিল সবার খোঁজখবর নিয়েছে, কে কেমন করছে। আমাদেরও একটা দায়িত্ব আছে কে কীভাবে খেলছে। গত তিন বছরে কিরকম পারফরম্যান্স করেছে। দেশে এবং দেশের বাইরে কী করেছে। এগুলোই সে জানতে চেয়েছিল।’
তবে শুক্রবার তার কথায় মনে হয়েছে আসন্ন বিশ্বকাপ নিয়ে তারা ভাবছেই না এখন। তাদের মূল লক্ষ্য আগামী মাসে ঘরের মাঠে আফগানিস্তান বধ করা। কারণ জুন মাসে পূর্ণাঙ্গ সফরে আফগানরা আসছে বাংলাদেশ সফরে। আর এ সফরের প্রথমেই সাদা পোশাকে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টাইগারদের বিপক্ষে মাঠে নামবেন তারা। আর এ ফরম্যাটে সাকিব-তামিমদের আফগানদের বিপক্ষে নেই কোনো সুখস্মৃতি। এর আগে একবার এ ফরম্যাটে তাদের বিপক্ষে খেলেছিল বাংলাদেশ দল তা-ও চার বছর আগে। সেবার ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে একেবারে পাত্তাই দেননি আফগানরা। এবারও বাংলাদেশ ঘরের মাঠে নামবে, আর সেরা দল নিয়েই আফগানদের পরাস্ত করতে চায় টাইগাররা। এমনই বোঝা গেল টাইগারদের প্রধান নির্বাচকের কথায়। আসন্ন টেস্ট ম্যাচ নিয়ে নান্নু বলেন, ‘এখানে কোনো পরীক্ষা হবে না। আফগানিস্তান খুব ভালো দল। যেহেতু আমাদের একটা খারাপ অভিজ্ঞতা আছে গত টেস্ট ম্যাচটা হেরেছি। কোনোভাবেই তাদের হালকাভাবে নেওয়া হবে না। সম্ভাব্য সেরা দলই আফগানিস্তানের বিপক্ষে দাঁড় করানো হবে।’
কিন্তু ইংল্যান্ডে আইরিশদের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ডান হাতের তর্জনীতে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন ৬ সপ্তাহের জন্য। তাই টেস্টে তাকে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। টেস্টে না থাকলেও সাকিবকে অন্য দুই সংস্করণে পাওয়া যাবে বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচক। তবে তার প্রত্যাশা ঘরের মাঠে টেস্টে বাংলাদেশ ভালো খেলবে।
আরো পড়ুন: প্রথম দিনই মাঠে নামছে আর্জেন্টিনার যুবারা
তিনি বলেন, ‘বিগত টেস্ট ম্যাচটা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এখানে (মিরপুরে) যথেষ্ট ভালো খেলেছি। ভারতের সঙ্গে আমরা ভালো খেলেছি। খুব কাছে গিয়ে হেরে গিয়েছিলাম। আমার মনে হয়, মিরপুরে আমরা ভালো চ্যালেঞ্জ দিতে পারব। দেশের মাটিতে খেলা আশা করি ভালো করবো বলে আশা করছি।’
প্রসঙ্গত, জুনের ১০ তারিখ আফগানিস্তান দল ঢাকায় পৌঁছাবে। মিরপুরের শের-ই-বাংলায় একমাত্র টেস্ট ম্যাচ শুরু হবে ১৪ জুন। এই টেস্ট খেলে ভারত চলে যাবে আফগানিস্তান। এরপর ১ জুলাই পুনরায় বাংলাদেশ সফরে আসবে তারা। জুলাইতে ৩টি ওয়ানডে ও ২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলবে দুই দল।
এম/