সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাঙ্গনের মুখে পাকিস্তান-চীন অর্থনৈতিক জোট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:১১ অপরাহ্ন, ২৫শে এপ্রিল ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন (প্রাইভেট) লিমিটেডের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে চীন ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের উপর পাকিস্তানের দেওয়ানী আদালত ২৪.৮ লাখ মার্কিন ডলার জরিমানা আরোপ করে। এ ঘটনা দুই দেশের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সমস্যাকে আবারও সামনে নিয়ে আসে। পাকিস্তানের আর্থিক সংকটের ফলে ইতিমধ্যেই সিপিইসি এর অধীন অনেক প্রকল্প যেমন, মেইন লাইন ১ (এমএল-১), করাচি ও পেশোয়ারের মধ্যকার রেললাইন এবং করাচি সার্কুলার রেলওয়ে (কেসিআর) স্থবির হয়ে পড়েছে।

তাছাড়া দুই দেশের সরকারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্যও দেখা দিয়েছে। বৃহৎ অবকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগের মাত্রাও কমিয়ে দিয়েছে চীন।

তাছাড়া চীনা নাগরিকদের উপর সন্ত্রাসী হামলাও অবস্থাকে খারাপের দিকে নিয়ে গেছে। পাকিস্তানের আর্থিক দুরবস্থার কারণে ঋণ প্রদানেও ব্যর্থ দেশটি।

চীনের সাথে করা চুক্তিগুলো পাকিস্তানের জন্য অনেক ব্যয়বহুল। তাছাড়া অভিযোগ উঠেছে যে, দুইটি সিপিইসি পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য চীনা ঠিকাদারেরা পাকিস্তানের উপর অতিরিক্ত ৩০ কোটি মার্কিন ডলারের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে।

পাকিস্তান ইতিমধ্যে চীনা ঋণফাঁদে জড়িয়ে পড়েছে এবং চীনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার কারণে দেশটি ব্যাপক ঋণের সম্মুখীন হচ্ছে। 

২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত, পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক ঋণ পরিষেবার ৮০ শতাংশেরও বেশি চীনের কাছে গেছে। তবে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ঋণ মওকুফের জন্য আর্জি জানিয়েছে পাকিস্তান। 

গত বছর, জ্বালানি, যোগাযোগ এবং রেলপথের সাথে জড়িত ৩০টিরও বেশি চীনা কোম্পানি, সঠিক সময়ে অর্থ প্রদান না করা হলে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করার হুমকি দেয় পাকিস্তানকে।

চীনা প্রকল্প ও অর্থায়নে অসন্তুষ্ট পাকিস্তানের জনগণ। চীনের সাথে এফটিএ স্বাক্ষর করেও লাভবান হয়নি পাকিস্তান। ২০০৩ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ঘাটতি ১০৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও, এফটিএ কার্যকর হওয়ার পর তা বিস্ময়করভাবে ৫৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা বারবার এই এফটিএ এর সমালোচনা করেছেন।

২০২০ সালে, বিশ্বব্যাংক জাম্বিয়ার একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রতারণামূলক অনুশীলনের জন্য চায়না ইলেকট্রিক ডিজাইন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট কোং লিমিটেডকে ১৮ মাস পর্যন্ত ব্যাংক-অর্থায়নকৃত প্রকল্পে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করে।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে, এডিবি চায়না সিএমসি ইঞ্জিনিয়ারিং, নর্থওয়েস্ট সিভিল এভিয়েশন এয়ারপোর্ট কনস্ট্রাকশন গ্রুপ এবং চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিংকে নেপালের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করে।

চীনা কোম্পানি ও শ্রমিকেরা যে দেশে কাজ করে সে দেশের আইন লঙ্ঘনের জন্য কুখ্যাত। শ্রমের অভাব, দুর্নীতি এবং পরিবেশের ক্ষতি করা চীনা প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য। পাকিস্তানের অর্থনীতির এরূপ খারাপ অবস্থার সময় চীনের অহেতুক পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ চীনের প্রতি পাকিস্তানের অবিশ্বাসকে আরো বৃদ্ধি করছে।

এমএইচডি/ আই. কে. জে/

আরো পড়ুন:

আগামী নির্বাচনে লড়াইয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাইডেনের

পাকিস্তান চীন অর্থনৈতিক জোট

খবরটি শেয়ার করুন