ছবি-ফাইল
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের চিতারবাজার মেইনরোডে অবস্থিত গোবিন্দ মিষ্টান্ন ভান্ডারে পাওয়া যায় ‘ইলিশ পেটি। স্বাদেও দারুণ। এজন্য খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা পেয়েছে বিশেষ আকারের এ মিষ্টি। ইলিশ মাছের পেটির মতো দেখতে হওয়ায় মিষ্টির নাম রাখা হয়েছে ‘ইলিশ পেটি’।
গোবিন্দ মিষ্টান্ন ভান্ডার নামের মিষ্টির দোকানটি বোয়ালমারী উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে। বোয়ালমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে একটি পাকা রাস্তা ওই দোকানের সামনে দিয়ে চলে গেছে চিতারবাজার পর্যন্ত।
মোটরসাইকেলে ওই দোকানে যেতে ১৫-১৯ মিনিট সময় লাগে। পৌরসভার ওয়াপদা মোড়ে অবস্থিত ভ্যানস্ট্যান্ড থেকে সারাক্ষণ ভ্যান চলাচল করে। ভ্যানে সময় লাগে ২৫-৩০ মিনিট।
উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের কোন্দারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা গোবিন্দ কুন্ডু একজন মিষ্টি ব্যবসায়ী। ১৯৯৭ সালে চিতারবাজারে নিজ নামে গোবিন্দ মিষ্টান্ন ভান্ডার গড়ে তোলেন।
কয়েক বছর আগে তিনি মারা যান। এরপর গোবিন্দ কুন্ডুর ছেলে গুরুদাস কুন্ডু পৈতৃক পেশাকে ভালোবেসে দোকানটি পরিচালনা করে আসছেন। বর্তমানে দোকানটিতে মিষ্টি তৈরির চারজন কারিগর আছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, ক্রেতারা মিষ্টি কিনছেন। বিক্রেতারাও মিষ্টি বিক্রিতে ব্যস্ত। দোকানে থরে থরে ইলিশ পেটি মিষ্টি সাজানো। এছাড়া রয়েছে ছানার সন্দেশ, রসগোল্লা, চমচম, কালোজাম, দধি, রসমালাই ও মালাই চপ।
গোবিন্দ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক গুরুদাস কুন্ডু বলেন, প্রতিদিন ১৫-১৬ ধরনের মিষ্টি তৈরি করা হয়। এরমধ্যে ইলিশ পেটি মিষ্টির দাম সবচেয়ে বেশি। ৭২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। ২৪-২৫ পিসে এককেজি হয়।
তিনি আরও বলেন, ইলিশ পেটি মিষ্টি নির্ভেজাল ক্ষীর দিয়ে তৈরি করা হয়। তাই এর স্বাদ ও গুণগত মান বজায় থাকে। এছাড়া ছানার সন্দেশ ও মালাই চপে ছানা ছাড়া অন্যকিছু মেশানো হয় না।
যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য মিষ্টির অর্ডার নেওয়া হয়। গ্রাম এলাকা হলেও সবমিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৬০-৮০ কেজি মিষ্টি বিক্রি হয়। দিনের মিষ্টি দিনেই শেষ হয়ে যায়। এজন্য আগের দিনের বাসি মিষ্টি বিক্রি করা হয় না বলেও জানান গোবিন্দ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘মানুষ ইলিশের পেটি মিষ্টির নাম শুনে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন। নতুন আবার দেখতে ও খেতে বেশ ভালো। তাই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।’
আরো পড়ুন: কোন খাবারগুলো মাংসের চেয়েও বেশি প্রোটিনে ভরপুর!
বোয়ালমারী শহরের বাসিন্দা শামীম প্রধান বলেন, ‘লোকমুখে গোবিন্দ মিষ্টান্ন ভান্ডারের ইলিশ পেটি মিষ্টির নাম শুনে খাওয়ার জন্য গিয়েছিলাম। স্বাদে অতুলনীয়। সেই স্বাদ। দোকানে বসে খেয়েছি। ভালো লাগায় পরিবারের জন্যও নিয়ে এসেছি।’
এ বিষয়ে দাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মুশা বলেন, চিতারবাজারের গোবিন্দ মিষ্টান্ন ভান্ডারের ইলিশ পেটি মিষ্টি খুবই ভালো। উপজেলার এবং উপজেলার বাইরে থেকেও অনেকেই মিষ্টি কিনতে যান ওই দোকানে। তবে দোকানটির অবস্থান উপজেলা সদরে হলে মিষ্টিপ্রেমীরা ইলিশ পেটি মিষ্টির স্বাদ ভোগ করতে পারতেন। আরও বেশি জনপ্রিয়তা পেতো।
এসি/ আই. কে. জে/