সোমবার, ১লা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেরপুরে বৌভাতে আনা সব উপহার ফেরত দিলেন ছেলের বাবা

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, ২৭শে এপ্রিল ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

বিয়েবাড়িতে উপহার গ্রহণের জন্য রিসিপশন থাকার রীতি অনেক পুরোনো। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এ রীতিতেও এসেছে ভিন্নতা। অনেকেই উপহারের বদলে নতুন টাকা, প্রাইজ বন্ড বা নগদ অর্থ দিয়ে থাকেন। কিন্তু এ বিষয়টিকে পুরো ‘অসামাজিক রীতি’ উল্লেখ করে ছেলের বৌভাতের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের আনা সব উপহার ফেরত দিয়েছেন এক বাবা।

ব্যতিক্রমী এ ঘটনা ঘটেছে শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের বাজুপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে এবাদুল ইসলামের বৌভাত অনুষ্ঠানে। ঘটনাটি বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিলেও খুব স্বাভাবিকভাবেই দেখছে ছেলের পরিবার।

ছেলের পরিবার ও আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার (২৪ এপ্রিল) একই ইউনিয়নের উত্তরবন্দ গ্রামের আমের আলীর মেয়ে আয়েশা বেগমের সঙ্গে এবাদুল ইসলামের বিয়ে হয়। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বরের বাড়িতে বৌভাত অনুষ্ঠানে তিন শতাধিক মানুষকে দাওয়াত দেওয়া হয়। তবে অতিথিদের আনা উপহার নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এতে খাবার খাওয়ার পর বাধ্য হয়ে উপহার ফেরত নিয়ে গেছেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।

দাওয়াত খেতে আসা আব্দুর রব বলেন, ‘বিয়ের দাওয়াতে গেলে তো আর খালি হাতে যাওয়া যায় না। কোনো উপহার বা নগদ টাকা দিতে হয়। এ বৌভাতের অনুষ্ঠানেও তেমন প্রস্তুতি নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু উপহার দেওয়ার মতো জায়গা বা কোনো মানুষ না পেয়ে অবাক হয়েছি। পরে বরের বাবাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উপহার নেওয়া হচ্ছে না বলে জানান।’

আরো পড়ুন: এসএসসি পরীক্ষা: কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

বরের বড় ভাই লালচান হোসাইন লাভলু বলেন, ‘প্রতিটি বিয়েবাড়িতে উপহারসামগ্রী ও অর্থ সংগ্রহে একটি টেবিল বসানো হয়। এতে আমন্ত্রিত অতিথিরা সামাজিক অবস্থানের কথা চিন্তা করে বাধ্য হয়ে উপহারসামগ্রী বা টাকা দেন। সামাজিকতা রক্ষায় যা অনেক সময় তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। অমানবিক সামাজিক এ রীতি বর্জন করতেই আমার ছোট ভাইয়ের বৌভাতে কোনো উপহার নেওয়া হয়নি। আমরা শুধু নব-দম্পতির জন্য দোয়া চাই।’

বরের বাবা লুৎফর রহমান বলেন, ‘দাওয়াত করে মানুষকে খাওয়াতে এনে যদি চেয়ার-টেবিল বসিয়ে উপহার নেওয়ার নামে লজ্জা দেই, তবে এটা হোটেল ব্যবসা ছাড়া আর কিছু না। টাকা দিয়েই যদি খেতে হয়, তবে মানুষ হোটেলে গিয়েই খেতে পারে। আমন্ত্রিত অতিথিদের আমি আমার সাধ্যমতো আপ্যায়নের চেষ্টা করেছি। বিনিময়ে কারও কাছ থেকে উপহার নেওয়া হয়নি।’

এম/

 

শেরপুর বৌভাত উপহার

খবরটি শেয়ার করুন