ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের হিন্দু নারীরা তাদের সম্পত্তি, উত্তরাধিকার এবং বিবাহ সংক্রান্ত আইন সম্পর্কেই অবগত নয়। যে সংবিধান প্রণয়ন করতে ৬৯ বছর লেগেছিলো, সে সংবিধানে দেশটির বৃহত্তর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য কোনও আইনেরই উল্লেখ নেই। দেশটির মোট জনসংখ্যা ২২ কোটি। এই জনসংখ্যার ১.৮ শতাংশ হলো হিন্দু সম্প্রদায়।
সিন্ধু প্রদেশে বসবাসরত সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের জন্য পৃথক আইন রয়েছে। এ আইন বহু বছরের নানা বিতর্কের পর প্রণীত হয়। পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান এবং কেপির হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য প্রযোজ্য হিন্দু বিবাহ আইন, ২০১৭ সম্পর্কে অনেক হিন্দুই এখন পর্যন্ত অবগত নন।
তবে আইনটি হিন্দু মহিলাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রায় ১০০০ জনেরও বেশি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের অপহরণ করা হয় প্রতি বছর। তাদের জোরপূর্বক ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়। এখানকার হিন্দুরা এখনও এ আইন সম্পর্কে জানেন না বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন।
হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী বিয়ের নথি সংগ্রহ আবশ্যক করা হয়েছে। তবুও এদেশের অনেক হিন্দু মহিলাই কোনও রকম প্রমাণ কিংবা সরকারি নথিপত্র ছাড়াই বিবাহিত জীবন কাটাচ্ছেন এবং বাল্যবিবাহসহ সামাজিক ও গার্হস্থ্য সহিংসতার শিকার হচ্ছেন।
এ আইন কঠোর সামাজিক সীমাবদ্ধতা থেকে হিন্দু নারীদের উদ্ধার করে। অন্যদিকে আইনের ধারা ১২ (৩) অনুযায়ী, স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে কেউ যদি অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হয় তবে বিবাহ বাতিল ঘোষণা করা হবে। এ আইন জোরপূর্বক বিয়ে, ধর্মান্তরিতকরণ ইত্যাদিকে আটকানোর জন্য কার্যকর।
পাকিস্তানে এক সামাজিক প্রথা প্রচলিত যা সবসময় পুরুষদেরকেই সাহস জোগায়। ফলে অপহৃত বা ধর্মান্তরিত মেয়েকে তার অপরাধীকেই বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডে নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থিদের বিশাল জয়
তবে এ আইন হিন্দু ধর্মের জাতিভেদকে উপেক্ষা করেছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা বিধান এবং তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধকে নিয়ন্ত্রণের জন্য এ আইন বাস্তবায়নের প্রয়োজন রয়েছে। এমনিতেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থ হয়ে বারবার সমালোচনার মুখে পড়েছে পাকিস্তান।
খবরটি শেয়ার করুন