সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের চলমান ধারবাহিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তর।
শনিবার (২রা ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশের পরিকল্পিত ও সর্বাত্মক প্রয়াস সন্তোষজনক।
সেই সঙ্গে পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ের শুরু থেকেই দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারের ভূমিকায় থেকেছে আমেরিকা।
বিবৃতিতে ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজান হামলা থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ধর্মীয় জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের উত্থান এবং তা মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টা সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। তবে বিবৃতিতে মূলত বাংলাদেশের ২০২২ সালের পারফরম্যান্সকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বেশি।
বিশেষত আল-কায়েদার অনুসারী গোষ্ঠী জামাআতুল মুজাহিদীন (জেএমবি) এবং আইএসের অনুমোদিত জেএমবি শাখা, নব্য জেএমবির মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আমলে নেওয়ায় ২০২২ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী সহিংসতার অল্প কিছু ঘটনা ঘটেছে, বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে জঙ্গিবাদ দমনে আমেরিকা এবং আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সঙ্গে নিয়মিত বিভিন্ন তথ্য শেয়ারের পাশাপাশি কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিসিটিউ), অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটসহ (এটিইউ) বিভিন্ন পুলিশ ইউনিট গঠন করেছে বাংলাদেশ সরকার। পাশপাশি সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত মামলাগুলো পরিচালনা করতে তৃণমূল পর্যায়ে সন্ত্রাসবাদবিরোধ আদালতও (এটিটি) গঠন করেছে।
এ প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ তার আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সন্ত্রাসবাদের নেটওয়ার্ক দমনে আমেরিকার সঙ্গে নিয়মিত তথ্য শেয়ারসহ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। সন্ত্রাসবাদ দমনে দেশটি সিসিটিউ, এটিইউ, এটিটিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে এবং বাংলাদেশকে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা ও সহায়তা দিয়েছে আমেরিকা।
আরো পড়ুন: ১২৮ ভোট পেয়ে বাংলাদেশ আইএমও’র কাউন্সিল সদস্য নির্বাচিত
জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধেও বাংলাদেশের ভূমিকায় সন্তোষজনক— উল্লেখ আমেরিকা বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট কানাডাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এগমন্ড গ্রুপের এশিয়া-প্যাসিফিক শাখার সদস্য এবং ২০২২ সালে দেশটিতে জঙ্গি অর্থায়ন সংক্রান্ত কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়নি।
তবে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদী আইনের মামলায় যারা বন্দি হয়ে কারাগারে রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে খানিকটা ঝুঁকি এখনও রয়ে গেছে বলে মনে করছে পররাষ্ট্র দপ্তর। কারণ এই কারাবন্দিদের যদি সন্ত্রাসবাদী মতাদর্শ থেকে সরানো না যায়, সেক্ষেত্রে কারাগারগুলো জঙ্গি তৈরির নতুন আস্তানা হবে বলে আশঙ্কা আমেরিকার।
অবশ্য সিসিটিইউ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ২০২৩ সাল থেকে কারাগারগুলোতে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদী মামলার আসামিদের জন্য বিশেষ কাউন্সেলিং কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। বিবৃতিতে সেই কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
এসকে/