বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২১ বছর পর ভারত থেকে মা-বাবার কাছে ফিরলেন মতিউর

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৮:১১ অপরাহ্ন, ২১শে জুলাই ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

১৫ বছর বয়সে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন মতিউর রহমান। এর পর থেকে পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজ করেও তাঁর হদিস পাননি। দীর্ঘ ২১ বছর পর অবশেষে ভারত থেকে মা-বাবার কাছে ফিরেছেন মতিউর। শুক্রবার পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তিনি দেশে ফেরেন। সঙ্গে ছিলেন ভারতের শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশনের সমাজকর্মী নীতিশ শর্মা ও মানসিক চিকিৎসক সারওয়ালি কে কোনডুউইলকার।

বর্তমানে ৩৬ বছরের মতিউর ঠাকুরগাঁও উপজেলা সদরের আখানগর ইউনিয়নের দেবীডাঙ্গা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য শহিদুল ইসলামের বড় ছেলে। ২০০২ সালে তিনি নিখোঁজ হন। মানসিক অসুস্থতা থাকলেও তখন তিনি নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। পরিবারের ধারণা, ঠাকুরগাঁওয়ের আখানগর ইউনিয়নের কান্তিভিটা ধোনতলা সীমান্ত হয়ে ভারতের পাচির সীমান্ত এলাকা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরে প্রবেশ করেন মতিউর।


ছবি: সংগৃহীত

সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের জুন মাসে ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে মতিউরকে উদ্ধার করেন ‘শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশন’-এর সমাজকর্মীরা। এর পর সংস্থাটির পক্ষ থেকে মতিউরের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এর পর তাঁকে সিজোফ্রোনিয়ার রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এ ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসার মাধ্যমে গত ডিসেম্বরে তিনি কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। তখন তাঁর কাছেই পরিবারের পরিচয় জানতে পারেন ফাউন্ডেশনের কর্তারা। এর পর সমাজকর্মী নীতিশ শর্মা বাংলাদেশে তাঁর দুই বন্ধুর মাধ্যমে মতিউরের পরিবারের খোঁজ পান। তাদের সহযোগিতায় প্রথম ভিডিও কলের মাধ্যমে মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথাও বলেন মতিউর। এর পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে তিনি দেশে ফিরলেন।

বাংলাবান্ধায় প্রবেশের সময় বিজিবি-বিএসএফ সদস্য ছাড়াও ইমিগ্রেশনের ওসি খায়রুল ইসলাম এবং মতিউরের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মতিউর রহমান বলেন, ‘আমি কখন ভারতে গেছি, কীভাবে গেছি– কিছুই মনে নেই। ভারতে শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশন আমার চিকিৎসা করে। এর পর আমি পরিচয় দিলে তারা দেশে ফেরার ব্যবস্থা করেন। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে, মা ও বাবাকে কাছে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।’

আরো পড়ুন: রোববার ইতালি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

তাঁর মা মর্জিনা বেগম বলেন, ‘আমি হারানো কলিজার টুকরাকে ফিরে পেয়েছি। যারা আমার ছেলেকে উদ্ধার ও চিকিৎসা করে ফেরত দিয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’ মতিউরের বাবা শহিদুল ইসলাম ছেলেকে ফেরত পেয়ে বাংলাদেশ সরকার, ভারত ও সেখানকার শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশনের সমাজকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশনের সমাজকর্মী নীতিশ শর্মা বলেন, ২০১৯ সালে তারা মহারাষ্ট্র থেকে রাস্তায় ঘোরাঘুরির সময় মতিউরকে উদ্ধার করেন।

ফাউন্ডেশনের মানসিক চিকিৎসক সারওয়াালি কে কোনডুউইলকার বলেন, উদ্ধারের সময় মতিউর মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তাঁকে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা হয়েছে।

এম/


ভারত মতিউর ভারত ঠাকুরগাঁও

খবরটি শেয়ার করুন