ছবি: সংগৃহীত
নওগাঁয় প্রশাসনকে শর্ত বেঁধে দিয়ে বন্ধের ৩৩ ঘণ্টা পর জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূলপাল্লার সকল রুটে বাস চলাচল সচল করেছে বাস পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্টান্ডে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভবনে আয়োজিত মালিক-শ্রমিক যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে নওগাঁর মান্দা উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচলে বাঁধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাস ও অটোরিকশার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘট ডেকেছিল বাস পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা। যা চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল স্থানীয়দের।
পরে বাস মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে সিএনজি চালকদের বিরোধ মেটাতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নওগাঁ সার্কিট হাউসে দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলমান ওই বৈঠকে বাস মালিক সমিতি ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা প্রশাসনকে কিছু শর্ত বেঁধে দেন। সেই শর্তে সম্মত হলে বুধবার দুপুরে শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্টান্ডে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভবনে সকল বাস মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে যৌথ সভা করেন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। এ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বিকেল ৩টার পর থেকে পর্যায়ক্রমে সকল রুটে বাস চলাচল শুরু হয়।
নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিউজ্জামান মতি গণমাধ্যমকে বলেন, মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সিএনজি চালকেরা সেটি উপেক্ষা করে যাত্রী পরিবহন করছিল। এটি নিয়ে প্রায়ই তাদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ লেগেই থাকে। যার পরিণতি স্বরূপ বেশ কয়েকবার ধর্মঘট করতে বাধ্য হয়েছি আমরা। এই অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে দীর্ঘদিনের দাবি ছিল আমাদের। প্রশাসন এটি পুরোপুরি বন্ধে কিছুটা সময় চেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে প্রশাসনকে বেঁধে দেওয়া শর্ত অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বালুডাঙ্গা বাসস্টান্ড থেকে কোনো সিএনজি অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচল করতে পারবে না। এছাড়াও মান্দার ফেরিঘাটে সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত রাজশাহী রুটে কোনো সিএনজি যাত্রী পরিবহন করতে পারবে না। এভাবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত সমঝোতায় সিএনজি মহাসড়কে চলবে। পূজার পর মহাসড়কে সিএনজির চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হবে।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) গাজিউর রহমান বলেন, গত সোমবার বাসের এক শ্রমিককে সিএনজি চালকরা টেনে নামিয়েছিল। পরে ওই বাস শ্রমিক আরেক সিএনজি চালককে মেরেছিল। এ ঘটনার জের ধরে বাস চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়াটা অযৌক্তিক বলে মনে হয়েছে। তাই ওই ঘটনায় কার দোষ ছিল সেটি পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
তিনি আরও বলেন, সিএনজি মালিক ও বাস মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে বিগত দিনে একটি সমঝোতা ছিল। সমঝোতার বিষয়টি উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করলে তারা আমাদেরকে অবগত করেছেন। সেটি মেনে আগামীতে যাতে উভয়পক্ষ সুশৃঙ্খলভাবে সড়কে চলাচল করতে পারে, সেই বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন