বাজারে গরুর মাংসসহ দাম কমেছে মুরগি মাছ ডিমের। দীর্ঘ সময় পরে এ নিম্নমুখী প্রবণতায় কিছুটা স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছেন ক্রেতা। যদিও এখনো বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে চাল চিনি আটা ও ময়দার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো।
শুক্রবার (১লা ডিসেম্বর) রাজধানীর রামপুরা মালিবাগ ও মগবাজারের ভিবিন্ন বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে। একই সঙ্গে শীতের সবজিও অনেকটা ক্রেতার নাগালে।
স্বস্তির বাজারে ক্রেতাদের টানছে গরুর মাংস। এখন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার দোকানে ৬০০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়। যা এক মাস আগের চেয়ে কেজিতে দেড়শ টাকা কম। তবে সাধারণ বাজারে এখনো আগের নিয়মে পরিমাণমতো হাড্ডিসহ মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা।
গরুর মাংসের পাশাপাশি দাম কমেছে মুরগির। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৭৫ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৭০ থেকে ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সাদা ও বাদামি রঙের ডিমের ডজন পাওয়া যাচ্ছে যথাক্রমে ১১০ ও ১২০ টাকার মধ্যে।
মাংসের দাম কমার প্রভাব পড়েছে মাছের দামে। বেশি কমেছে চাষের মাছে। মাঝারি মানের চাষের পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। বড় আকারের চাষের তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা। আর মান ও আকারভেদে চাষের রুই মাছের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। তবে চিংড়ির দাম তেমন কমেনি। প্রতি কেজি কিনতে এখনও গুনতে হচ্ছে ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা।
অন্যদিকে বাজারে নতুন করে পাতাসহ পেঁয়াজ আসা শুরু হয়েছে। এতে অন্যান্য পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। এখন বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১১০ এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সেপ্টেম্বর মাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১২টাকা করে নির্ধারণ করা হয় সেই সময়, যখন বাজারে প্রতিটি ডিমের দাম সাড়ে ১৩ টাকা ছিল। এরপর বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার প্রথম ডিম আমদানির অনুমতিও দেয়। এরপর থেকে ক্রমাগত কমে এখন প্রতিটি ডিমের দাম ১০ টাকায় নেমেছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বড় বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজনপ্রতি ১২০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতিটি ১০ টাকা পিস। পাইকারিতে দরদাম করে ১১৫ টাকাও কেনা যাচ্ছে। তবে পাড়া মহল্লার একদম খুচরা দোকানে এখনো বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে ট্রেডিং কর্পোরেশন আব বাংলাদেশের তথ্য বলছে, গত একমাসে বাজারে ডিমের দাম সাড়ে ২১ শতাংশ কমেছে। গত মাসে প্রতি হালি ডিমের দাম ছিল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, যা এখন ৩৭ থেকে ৪৩ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে চলতি বছরের আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। তাতে চালের বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। মোটা চালের দাম আগের মতো রয়েছে। প্রতি কেজি মোটা চাল কিনতে গুনতে হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। অর্থাৎ নতুন চাল বাজারে এলেও মাসখানেক আগে যে খুচরা পর্যায়ে সবধরনের চালের দর কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছিল, এখনো সেই দরেই বিক্রি হচ্ছে।
বিশ্ববাজারে গমের দাম বাড়ায় আটা ও ময়দার দামও বেড়েছে। খোলা আটা কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে কেজিতে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। আর প্যাকেট আটার কেজি কিনতে খরচ হচ্ছে কমবেশি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। একইভাবে খোলা ময়দা ৬০ থেকে ৬৫ এবং প্যাকেট আটা ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে অস্থিতিশীল চিনির বাজারে কোনো সুখবর নেই। খোলা চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা দরে। অন্যদিকে বাজারে প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ নাই বললেই চলে। মিললে তার জন্য গুনতে হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা।
এসকে/