ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ দেড় মাস ধরে চলছে হামাস-ইসরায়েল সংঘাত। এরমধ্যে প্রথমবারের মতো অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা গোলাবর্ষণ সত্ত্বেও বর্তমানে দু-পক্ষ একটি সমঝোতা চুক্তির কাছাকাছি রয়েছে বলে দাবি করেছেন হামাসের চেয়ারম্যান ও রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) কাতারের গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হানিয়া বলেন, আমরা (ইসরায়েলের সঙ্গে) একটি সমঝোতা চুক্তির কাছাকাছি রয়েছি। কাতারের মাধ্যমে আমরা এই চুক্তির প্রস্তাব পেয়েছি এবং তাতে সম্মতিও দিয়েছি।
সম্ভাব্য এই সমঝোতা চুক্তিতে কী কী শর্ত রয়েছে তা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি হানিয়া; তবে হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি থাকা হামাস নেতাকর্মীদের ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারটি শীর্ষে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার (২০ নভেম্বর) ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলের এক প্রতিবেদনের বরাতে জানা যায়, হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করতে সমঝোতায় আসতে আগ্রহী ইসরায়েল।
জানা যায়, হামাস যদি তাদের থাকা জিম্মিদের মুক্তি দেয়, তাহলে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি প্যালেস্টাইনদের ছেড়ে দেবে তারা। এখন অপেক্ষা কেবল হামাসের জবাবের।
জিম্মিদের মুক্ত করতে হামাসের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছানোর ব্যাপারটি ইসরায়েল যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে উল্লেখ করে ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলটি জানিয়েছে, বল এখন হামাসের কোর্টে। হামাস ইতিবাচক সাড়া দিলে সহজেই সমঝোতা হতে পারে।
এর আগে একই দিন আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকেও এই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি জানিয়েছিলেন, গাজায় ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করতে আমেরিকা তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
‘দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতার একটি পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। আমরা আশা করছি এটি হবে। তবে এখনও অনেক কাজ বাকি রয়ে গেছে,’ হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন কিরবি।
আরো পড়ুন: ভারতে সুড়ঙ্গ ধসে আটকা ৪১ শ্রমিক, ৯ দিন পর মিললো খাবার
তবে এখনও পর্যন্ত ‘দু’পক্ষের সমঝোতার বিষয়ে দিন তারিখ ধার্য করা হয়নি।
গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলে প্রবেশ করে নির্বিচারে সামরিক-বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করে তারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে আমেরিকা, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।
যুদ্ধের শুরুর দিকে হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড জানিয়েছিল, তাদের জিম্মায় প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলি রয়েছে। তবে পরে হামাস ঘোষণা করে, ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার কারণে নিহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন জিম্মি।
সূত্র: বার্তাসংস্থা এএফপিকে, আনাদোলু এজেন্সি, রয়টার্স
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন