ছবি-সংগৃহীত
কুড়িগ্রামে চায়না ঝুড়ি জাতের কমলা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মো. আবু রায়হান ফারুক। তিনি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের কাজী মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে ২ বিঘা জমিতে আছে শতাধিক কমলা গাছ। থোকায় থোকায় ঝুলছে কমলা। চারা রোপণের মাত্র দেড় বছরে কমলা আসতে শুরু করেছে। বাগানের বয়স আড়াই বছর। এ বছর বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করেছেন। ২০ দিন পর বাগান থেকে প্রায় ১৫-২০ মণ কমলা বিক্রির আশা করছেন তিনি। যা বাজার মূল্যে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। উৎপাদন ব্যয় বাদে দ্বিগুণ লাভ হবে বলে আশা তার।
সরেজমিনে জানা যায়, আবু রায়হান ফারুক পড়াশোনা শেষ করে কৃষি কাজ বেছে নেন। বাবার জমিতে শুরু করেন সমন্বিত ফল চাষ। প্রায় ৬ একর জমিতে আছে দেশি-বিদেশি নানা জাতের ফল গাছ। আম, মাল্টা, আঙুর চাষের পাশাপাশি কমলা চাষের উদ্যোগ নেন। প্রথমে বগুড়া শহর থেকে একটি চায়না ঝুড়ি কমলা জাতের গাছ সংগ্রহ করেন।
একটি গাছ থেকে কলম পদ্ধতি ব্যবহার করে ২ বিঘা জমিতে ১০০ কমলা গাছ রোপণ করেন। সেই গাছ থেকে দেড় বছরের মধ্যে কমলা পেতে শুরু করেন। কমলা বাগানে বাড়তি কোনো ঝামেলা নেই। সময়মতো জৈব সার, কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
আবু রায়হান ফারুক বলেন, ‘চাকরির পেছনে না ছুটে আমি কৃষির পথ বেছে নিই। কমলা চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের ফলের গাছ আছে। তবে কমলার বাজার ভালো থাকায় চাষের আগ্রহ বেড়ে যায়। আমার ২ বিঘা জমিতে চায়না ঝুড়ি কমলা জাতের শতাধিক গাছ আছে। এটি মিষ্টি জাতের কমলা।’
আরো পড়ুন: সড়কের ডিভাইডারে ব্যাতিক্রমী শাক-সবজি চাষ
তিনি বলেন, ‘শুরু থেকে এ পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা খরচ করেছি। আশা করছি এ বছর কমলা বিক্রি করে দ্বিগুণ লাভ হবে। আমাদের দেশের কমলার চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। যদি দেশের মধ্যে কমলার বাণিজ্যিক চাষ করা যায় তাহলে চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাইরের দেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।’
কমলা বাগান দেখতে আসা মোহাম্মদ কবীর হোসেন বলেন, ‘ফারুকের কমলা বাগান দেখে খুবই ভালো লেগেছে। চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষিতে মনোযোগ দিলে ভালো আয় করা সম্ভব। আমিও কমলা বাগান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কৃষি বিভাগ যদি পাশে থাকে তাহলে কমলা চাষিরা আরও উপকৃত হবেন।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, ‘কমলা চাষ জেলায় এক নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। কমলা চাষের এখন পর্যন্ত কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি। তবে ফারুকের কমলা বাগানে কৃষি বিভাগের সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে।’