বৃহস্পতিবার, ২রা অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** হোগলাপাতার নান্দনিক সাজে পরিবেশবান্ধব পূজামণ্ডপ, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা *** গ্রেটা থুনবার্গসহ গাজামুখী নৌবহরের বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে ইসরায়েল *** গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন সুষ্ঠু নির্বাচন: আবদুল আউয়াল মিন্টু *** ইসরায়েলি যুদ্ধজাহাজ কাছাকাছি এলাকায়, গাজামুখী নৌবহরে হস্তক্ষেপের শঙ্কা *** বিমানবন্দরে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি, এম এ মালিককে সতর্ক করল বিএনপি *** অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের চিকিৎসা চলছে লন্ডনে *** ভারতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে অসুর রূপে উপস্থাপন নিন্দনীয় ও অসম্মানজনক: ধর্ম উপদেষ্টা *** স্বস্তি ফিরছে খাগড়াছড়িতে, যান চলাচল শুরু *** পুলিশের হাতে কামড় দিয়ে পালানো আসামি অবশেষে... *** ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিজস্ব ভবনে কার্যক্রম শুরু

১৩৭টি সিগারেটের চেয়েও বেশি ক্ষতি ১টি মশার কয়েলে!

স্বাস্থ্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৭:৩৪ অপরাহ্ন, ২৯শে জুলাই ২০২৩

#

প্রতীকী ছবি ।। সুখবরডটকম

গরম পড়তেই মশার উপদ্রব? মশারি টাঙানোর অভ্যেস নেই। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার মতো ডেঞ্জারাস সব রোগের হাতছানি। মশা মারার কয়েলে মারাত্মক ক্ষতি। বারোটা বাজছে ফুসফুস, হার্টের।

নাহ্, সময়টা একেবারেই দারুণ নয়। মনোরম তো নয়ই। এখন শ্রাবণমাস যদিও বৃষ্টির দেখা নেই এবং চারিদিকে অসহ্য গরমের সমাহার। দিনেরবেলা চড়া রোদের বিরাশি সিক্কার থাপ্পড়। আর রাতে মৃদুমন্দ মলয় বাতাস। অবাঞ্ছিত অতিথিদের আগমনের এক্কেবারে মোক্ষম সময়। দরজা জানলা খোলা থাকলেই হল। সন্ধে নামলেই পিলপিলিয়ে ঢুকছে তারা। কানের কাছে গান ফ্রি। আর হুল ফোটালে তো কথাই নেই। নিপুণ কায়দায় শরীরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে ডেঞ্জারাস সব রোগ।

ডেঙ্গু। দারুণ জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, চোখের পিছনে ব্যথা, মাংসপেশিতে ও হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা। এছাড়া র‍্যাশ, বমি বমি ভাব। ম্যালেরিয়া। পি ফ্যালসিফেরাম সবচেয়ে প্রাণঘাতী। মাথায় আক্রমণ করে। মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এনসেফেলাইটিস। সংক্রমণের পর রোগটি কেন্দ্রীয় নার্ভাস সিস্টেমে ঢুকে পড়ে। মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডে বাসা বাঁধে। মৃত্যু হতে পারে। চিকুনগুনিয়া। এডিস ইজিপটাই মশার আক্রমণে এই রোগটি হয়। মাথাব্যথা, জ্বর, উদ্যমহীনতা, বমিভাব, মাংসপেশিতে ব্যথা ও অস্থিসন্ধিতে ব্যথা। লিমফেটিক ফাইলেরিয়াসিস। মারাত্মক ইনফেকশন। মানুষের পা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকগুণ ভারী হয়ে যায়।

সামান্য একটি মশার কয়েলের ধোঁয়ায় থাকা রাসায়নিক দ্রব্য, ১৩৭টি সিগারেটে থাকা নিকোটিনের চেয়েও ক্ষতিকর। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এমন মতকে উপেক্ষা করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার দোকানে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে অনুমোদনহীন ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এসব মশার কয়েল।

বাড়তি লাভের আশায় নিম্নমানের এসব কয়েল বিক্রির দাবি বিক্রেতাদের। আর ক্রেতারা বলছেন ক্ষতিকর দিক থেকে সঠিক তথ্য না জানার কারণেই কয়েল কিনছেন তারা।

মশার উপদ্রপ থেকে বাঁচতে কয়েল জ্বালিয়ে এভাবেই দৈনন্দিন কাজ করেন অনেকেই। কিন্তু তারা জনেন না অজান্তেই তাদের দেহে প্রবেশ করছে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য।

কয়েল উৎপাদন ও বাজারজাত করার ক্ষেত্রে দেশের সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকলেও তা মানছে না কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সমৃদ্ধ এসব কয়েলের অধিকাংশ কয়েলেই নেই (বিএসটিআই) অনুমোদন।

সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে যে, বিক্রেতারা বলছেন- "আমরা এতো কিছু চিন্তা করি না। ভালো কয়েলে মশা মরে তাই কয়েলটি বিক্রি করি। কোম্পানী যেটা দেয় আমরা সেটাই বিক্রি করি। এখন কোনটা ভালো কোনটা খারাপ সেটা দেখি না। যেগুলোতে (বিএসটিআই) অনুমোদন আছে সেটাতে লাভটা একটু কম হয়। তাই একটু বেশী লাভের জন্য আমরা এটা বিক্রি করি।"

বিজ্ঞাপন আর মশা মারার গ্যারান্টি দিলেও এসব কয়েলের প্যাকেটের গায়ে নেই কোনো কোম্পানীর সঠিক ঠিকানা কিংবা রেজিস্ট্রেশন নম্বর। এক্ষেত্রে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। আর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নিয়মনীতি মেনে কয়েল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।

আরো পড়ুন: রক্তে প্লাটিলেট সংখ্যা ঠিক রাখতে যা মেনে চলা জরুরি

এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশার কয়েলে সহনশীল মাত্রায় রাসায়নিক ব্যবহারের নির্দেশনা অধিকাংশ কোম্পানী না মানার কারণে নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন ব্যবহারকারীরা।

মশা মারতে আপনি তো আর বাড়িতে কামান দাগতে পারেন না। অগত্যা মশা মারার কয়েল। সেই কয়েল ব্যবহার করে মশা মারতে গিয়ে ডেকে আনছেন নিজের মৃত্যু। শ্বাসকষ্ট। কাশি। ফুসফুসের সমস্যা। ফুসফুসের ক্যানসারের সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। কয়েলের সূক্ষ্ম গুঁড়ো শ্বাসনালি এবং ফুসফুসের পথে গিয়ে জমা হয়। বিষাক্ত সংক্রমণ। দীর্ঘদিন ব্যবহারে চোখের ভয়ানক ক্ষতি হয়। মানুষের শরীরে স্লো পয়জনিং করে। হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। প্রায় সমস্ত মশার কয়েলেই থাকে অ্যালেট্রিন। এটি মস্তিষ্ক ও রক্তের ভেদ্যতা বাড়িয়ে দেয়। কয়েলের ধোঁয়া শিশুদের জন্য আরও বেশি বিপজ্জনক বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

একটি মশার কয়েল আট ঘণ্টা জ্বালালে ১৩৭টি সিগারেটের নিকোটিনের সমান ক্ষতি হবে। পাশাপাশি দূষিত হবে বায়ুও। কড়া নজড়দারির মাধ্যমে শীগ্রই অনুমোদনহীন মশার কয়েল বাজারজাত করণের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি আহ্বানও জানানো হয়েছে।

এম এইচ ডি/ আইকেজে 

ডেঙ্গু মশার কয়েল সিগারেট নিকোটিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ম্যালেরিয়া চিকুনগুনিয়া

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250