ছবি-সংগৃহীত
দেশে উৎপাদিত রূপবান শিম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে ইউরোপের দেশ ইতালিতে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা ও সম্মান বৃদ্ধির কাজ করছেন সীতাকুণ্ডের কৃষকেরা। এ উপজেলায় আগাম রূপবান শিমে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় এসব শিম উৎপাদন হচ্ছে।
সীতাকুণ্ড উপজেলার চাষিরা বলছেন, ‘কষ্টের ফসল আকাশপথ হয়ে ইউরোপের দেশ ইতালির মাটিতে যাচ্ছে, এটি আমাদের জন্য অনেক আনন্দের এবং গর্বের।’
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, প্রথমবারের মতো সীতাকুণ্ডের রূপবান শিম ইতালির মাটিতে। এটি কৃষকের বড় সফলতা। চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে এবার শীতকালীন শিম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে আগাম রূপবান শিম।
উপজেলার পাহাড়ের পাদদেশ থেকে শুরু করে সাগরের বেড়িবাঁধসহ মহাসড়কের দুপাশ ও জমির আইলের মধ্যে শিম চাষ হয়েছে। যদিও কৃষকদের দাবি, রূপবান শিম বেশি উৎপাদন হয় পাহাড়ি এলাকায়। উপজেলার বারৈয়ারঢালা, পৌরসভা, বারবকুণ্ড, কুমিরা, বাঁশবাড়িয়ায় রূপবান শিমের ফলন বেশি। এ ছাড়া কার্তিকোটা, বাটা, পুঁটি, লইট্টা, ছুরি শিমও উল্লেখযোগ্য।
বাঁশবাড়িয়ার কৃষক মহিউদ্দিন বলেন, ‘প্রায় ২৫০ শতক জমিতে রূপবান শিমের চাষ করেছি। এতে মোট খরচ হয়েছে ৭ লাখ টাকা। ধারণা করছি, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবো।’
চাষি মো. সোলেমান বলেন, ‘আমি অনেক বছর ধরে পাহাড়ে শিম চাষ করে আসছি। এবার ২৫০ শতক পাহাড়ি জায়গায় শিম চাষ করেছি। এ পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছি। পাশাপাশি লাউ, বরবটি, ঝিঙাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করেছি।’
আরো পড়ুন: কমলা চাষ করে সফল গাইবান্ধার যুবক আব্দুল হালিম
কৃষকেরা জানান, রূপবান শিম ওঠার শুরুতে তারা প্রতি কেজি পাইকারি বিক্রি করেছেন ১৬০-১৭০ টাকা দরে। এখনো ১৩০-১৪০ টাকা দরে শিম বিক্রি করছেন। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হাওয়ায় এর উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি। চাষিদের অনেক কষ্ট করতে হয়। কোথাও ছড়া, কোথাও পিচ্ছিল পথ ও অনেক উঁচু টিলা বেয়ে শিমের ক্ষেতে যেতে হয়।
পৌরসভার ইদিলপুর গ্রামের কৃষক হাসান শিশির বলেন, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আছে। তারা আমার কাছ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে ৫০০ কেজি শিম নিয়েছেন। শুনেছি ইতালিতে রপ্তানি করতে প্রথমবারের মতো তারা এই শিম নিয়ে যাচ্ছেন।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক মোহামুদুল হোসাইন বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সীতাকুণ্ড থেকে ৫০০ কেজি শিম ইতালিতে পাঠাচ্ছি। আমরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের সবজি রপ্তানি করে থাকি।’
এসি/ আই. কে. জে/