প্রতীকী ছবি
চট্টগ্রাম থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভিসা আবেদনের দ্বার উন্মুক্ত হচ্ছে। বর্তমানে কয়েকটি দেশের ভিসার আবেদনপত্র চট্টগ্রাম থেকে করা গেলেও গুরুত্বপূর্ণ অনেক দেশের ক্ষেত্রে এখনো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চট্টগ্রাম বিভাগের বিরাট সংখ্যক বিদেশ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে ঢাকামুখী হতে হচ্ছে। একই সঙ্গে সারা দেশের লোকজনকেও ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন দেশে অ্যাম্বাসি ও ভিসা অফিসে ধরনা দিতে হয়। এতে লোকজনের সময় ও অর্থের সঙ্গে সঙ্গে হয়রানির শিকার হতে হয়। চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে যাত্রী সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারের বিরাট সংখ্যক চট্টগ্রামসহ তৎসংলগ্ন বৃহত্তর নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার লোকজন অবস্থান করে। তাদের অধিকাংশের যাতায়াত আবার চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে হয়ে থাকে।
জানা যায়, প্রতিদিন শুধু চট্টগ্রাম বিভাগের প্রায় ৫ হাজার ভিসা ইস্যু করে থাকে সৌদি দূতাবাস। সূত্রে জানা যায়, সৌদি দূতাবাস সেই বিবেচনায় চট্টগ্রাম থেকে ভিসা আবেদনের কার্যক্রম শুরু করার বিষয় বিবেচনাধীন রয়েছে। এমনকি সৌদি এয়ারলাইনসও চট্টগ্রাম থেকে তাদের ফ্লাইট শুরু করার সম্ভাব্যতা যাচাই করছে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে তাদের কার্যক্রম শুরু হবে বলে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়।
চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও বর্তমানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজারেও বিপুল সংখ্যক লোকজন যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউকে, মালয়েশিয়াসহ উন্নত বিশ্বে পড়াশোনা, ভ্রমণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অথচ ভিসা আবেদনসহ আনুষ্ঠানিক কাজ সম্পন্ন করতে সকলকে ঢাকামুখী হতে হয়। ভিএফএস নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে কানাডা ইউকে থাইল্যান্ডের ভিসা আবেদন গ্রহণ করা গেলেও সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকা, ইতালি, গ্রিস, মাল্টা, স্লোভাকিয়ার ভিসা আবেদন করা যাচ্ছে। ভিএফএস চট্টগ্রাম সেন্টারের মাধ্যমে ঐ সকল দেশে সকল ধরনের ভিজিট, মেডিক্যাল, স্টুডেন্ট, বিজনেস, পরিবার, রিইউনিয়নসহ সকল ধরনের ভিসার আবেদন গ্রহণ করা হয়।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রামসহ তৎসংলগ্ন জেলাসমূহের কয়েক কোটি লোকের মধ্যে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী ঢাকায় গিয়ে তাদের ভিসাসহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। তাছাড়া প্রতিনিয়ত মধ্যপ্রাচ্যসহ উন্নত বিশ্বে বাংলাদেশের শ্রমবাজার, শিক্ষা, ভিজিট, ব্যবসা, মেডিক্যালসহ বিভিন্ন কাজে লোকজনের যাতায়াত বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের লোকজনের আনুপাতিক হারে বিশ্বব্যাপী যাতায়াত বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের আর্থিক, সময় ও হয়রানি লাঘবে প্রধান দেশসমূহের ভিসা সেন্টার চট্টগ্রামে করার আহ্বান জানান। চেম্বার সভাপতি বলেন, বর্তমান সরকার চাচ্ছে জনগণের সুবিধা যেন কাছে পৌঁছানো যায়। এদিকে সৌদি সরকার বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি দক্ষ শ্রমিক নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাই তাদের দেশের ভিসা সেন্টার চট্টগ্রাম করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি ইতিপূর্বে থাকা অস্ট্রেলিয়ার ভিসা সেন্টার পুনঃস্থাপনের আহ্বান জানান।
হজ এজেন্সি অব বাংলাদেশ (হাব) এর চট্টগ্রাম অঞ্চলের চেয়ারম্যান শাহ আলম বলেন, চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বে যাত্রী অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বলেন, জনগণের সুবিধার্থে দেশসমূহের ভিসা সেন্টার চট্টগ্রামে করা জরুরি। তিনি একই সঙ্গে বিদেশি এয়ারলাইনস সংখ্যাও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বাড়ানোর দাবি জানান।
আরো পড়ুন: পঞ্চগড়ে লাল মরিচের বাম্পার ফলন
এদিকে জানা যায়, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে ছয়টি ফ্লাইট মধ্যপ্রাচ্যে যায়। এর মধ্যে হয়েছে—মাস্কট, আবুধাবি, শারজা, মদিনা, জেদ্দা ও দুবাই। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে একটি বেসরকারি এয়ারলাইনস কলকাতা যায়। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্টেশন ম্যানেজার মো. সলিমুল্লা জানান, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে ২৪ ঘণ্টা রাখার জন্য আরো কিছু সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির কাজ চলছে। ইতিমধ্যে সৌদি ও কাতার এয়ারলাইনস চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট চালুর পাইপলাইনে রয়েছে।
এম/