শনিবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** সাগরের ঢেউয়ে জীবন বেঁধে ইতালিযাত্রা, বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ *** ভিন্নমতের জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা হবে: আলী রীয়াজ *** ঢাকাসহ দেশের কোথায় কোথায় বৃষ্টি হতে পারে আজ *** কোটা পদ্ধতি থাকা উচিত, আন্তর্জাতিকভাবেও এটি স্বীকৃত: সারা হোসেন *** আরাকান আর্মিকে সম্পৃক্ত না করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন অসম্ভব: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা *** দলিত সম্প্রদায়ের অবস্থার পরিবর্তনে সরকারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: আনু মুহাম্মদ *** আর্সেনিকে ধান দূষণের ঝুঁকিতে, ক্যান্সারসহ স্বাস্থ্যে প্রভাব নিয়ে যা বলছে গবেষণা *** নতুন মুসলিম রাষ্ট্র গঠন নিয়ে জোর জল্পনা-কল্পনা *** ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি *** বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে: পাকিস্তান

কে টু-তে বিশ্বরেকর্ড ভাঙতে মুমূর্ষু গাইডকে রেখেই পর্বতারোহণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:১০ পূর্বাহ্ন, ১২ই আগস্ট ২০২৩

#

ছবিঃ সংগৃহীত

অস্ট্রিয়ান পর্বতারোহী ভিলহেম স্টেইন্ডল ও ফিলিপ ফ্ল্যামিগের প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, পর্বতারোহীরা মোহাম্মদ হাসানকে পাশ কাটিয়ে ওপরের দিকে উঠে যাচ্ছেন। এসময় হাসান প্রায় মুমূর্ষু অবস্থা ছিলেন। তবে হাসানকে মৃত্যুর মুখে ফেলে রেখে চলে যাওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্রিস্টিন হারিলা।  

নরওয়ের প্রখ্যাত একজন পর্বতারোহীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। বিশ্বরেকর্ড ভাঙার উদ্দেশ্যে পর্বতশৃঙ্গে ওঠার সময় তিনি ও তার দল আহত একজন গাইডকে মাঝপথে ফেলে রেখে গেছেন। তবে ক্রিস্টিন হারিলা নামক ওই পর্বতারোহী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাকিস্তানের কেটু পর্বতশৃঙ্গে আরোহণের সময় মোহাম্মদ হাসান নামক ওই গাইড পর্বতের গায়ের একটি ছোট পথ থেকে পড়ে যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, আহত হাসানের পাশ দিয়ে একদল পর্বতারোহী হেঁটে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, এর কয়েক ঘণ্টা পর হাসান মারা যান। তবে ক্রিস্টিন হারিলা দাবি করেছেন, তিনি ও তার দল হাসানকে ওই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন।

হারিলা আট হাজার মিটারের উঁচু বিশ্বের সকল পর্বতশৃঙ্গে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে উঠে বিশ্বরেকর্ড গড়তে কেটু চড়তে গিয়েছিলেন। কিন্তু ২৭ জুলাই আরোহণের সময় হাসান সঙ্কীর্ণ একটি শৈলশিরা থেকে পড়ে যান। পাহাড়ের গায়ে ওঠার জন্য এ ধরনের সরুপথকে বটলনেক বলে।

অস্ট্রিয়ান পর্বতারোহী ভিলহেম স্টেইন্ডল ও ফিলিপ ফ্ল্যামিগের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, পর্বতারোহীরা হাসানকে পাশ কাটিয়ে ওপরের দিকে উঠে যাচ্ছেন। এ দুই পর্বতারোহীও সেদিন কেটুতে ছিলেন। কিন্তু খারাপ আবহাওয়া ও হিমবাহের কারণে তারা সেদিন আরোহণ বন্ধ রাখেন।

ওইদিন তারা স্টেইন্ডলের কেটু চড়া নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি বানানোর উদ্দেশ্যে ভিডিও ধারণ করছিলেন। তাদের ক্যামেরার পর্দা ছোট থাকায় তারা পরদিন ড্রোনে ধারণ করা ভিডিওতে বিস্তারিত দেখতে পেয়েছিলেন বলে জানান।

বিবিসিকে স্টেইন্ডল বলেন, "আমরা একজন জীবিত মানুষকে বটলনেকে আড়াআড়িভাবে শুয়ে থাকতে দেখেছিলাম। আর মানুষজন তাকে মাড়িয়ে পর্বতের ওপরে উঠতে থাকেন। কোনো উদ্ধারকারী মিশনও পরিচালনা করা হয়নি। আমি আসলেই থ হয়ে গিয়েছিলাম। একইসঙ্গে মনটাও মারাত্মক খারাপ হয়ে গিয়েছিল। মানুষজন তাকে এড়িয়ে উঠে গেল, উদ্ধারের কোনো তৎপরতাও দেখাল না — এসব দেখে আমি কাঁদতে শুরু করি। 

অস্ট্রিয়ার ডের স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফিলিপ ফ্ল্যামিগ বলেছেন, "কেবল একজন লোক হাসানের পড়ে যাওয়া দেখে চিকিৎসা করছিলেন। আর 'বাকিরা সবাই' 'প্রতিযোগিতা'মূলক আচরণ করতে করতে ওপরে উঠতে শুরু করেন।"

তবে হাসানকে মৃত্যুর মুখে ফেলে রেখে চলে যাওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হারিলা। তিনি বলেন, "|মোহাম্মদ হাসানের মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করা যায় না। হারিলা আরও জানান, "ভুয়া তথ্য ও ঘৃণা ছড়ানো বন্ধ করতে তিনি একটি বিবৃতি দেবেন।"

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে নরওয়েজিয়ান এ পর্বতারোহী বলেন, "হাসান আরও একটি পর্বতারোহী দলের সঙ্গে ছিলেন। ওই 'বেদনাদায়ক দুর্ঘটনা'র আগে কয়েক মিটার সামনে অপর দলটির দেখা পান হারিলা।"

হারিলা বলেন, "ঠিক কী হয়েছিল তা তিনি দেখতে পাননি। কিন্তু এরপরই তিনি জানতে পারেন, হাসান 'উল্টো হয়ে ঝুলে আছেন', তার হার্নেস 'তার হাঁটুর কাছে চলে গিয়েছিল'। ওই সময় হাসানের গায়ে অভিযাত্রীদের পরার ডাউনস্যুট ছিল না এবং তার পেট বরফের সংস্পর্শে এসেছিল।"

হারিলার দল দেড়ঘণ্টা ধরে হাসানকে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বাঁধতে চেষ্টা করেছিল। ওই সময় তারা তাকে অক্সিজেন ও গরম পানি সরবরাহ করে। হারিলা আরও বলেন, 'আশপাশ দিয়ে একটি হিমবাহ ভেঙে পড়ে।'

হারিলা জানান, "তার দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তিনি বুঝতে পারলেন, সাহায্য করার জন্য অন্যরা এগিয়ে আসছে। এজন্য সরু বটলনেকে ভিড় না বাড়ানোর জন্য তিনি ওপরের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।" তবে হারিলার ক্যামেরাম্যান তার অক্সিজেন কমে আসার আগ পর্যন্ত হাসানকে সাহায্য করার জন্য সেখানেই থেকে গিয়েছিলেন।

হারিলা বলেন, "আমরা যখন ফিরে আসি তখন হাসানকে মৃত অবস্থায় পাই। ওই সময় তার মৃতদেহ বহন করে নিচে নামিয়ে আনার মতো পরিস্থিতি আমাদের ছিল না।"

ওই ক্যামেরাম্যান অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ার পর হাসানের সঙ্গ যখন ছেড়ে এসেছিলেন তখন এবং তাদের পাহাড়ের শীর্ষ থেকে নামার সময় হাসানের সঙ্গে কেউ ছিল কি না, সে বিষয়ে কিছু জানাননি ক্রিস্টিন হারিলা।

এসকে/  


পাকিস্তান নরওয়ে কে টু পর্বত

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন