ছবি : সংগৃহীত
বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম দেশ চীন। দেশটিতে চা খুবই জনপ্রিয় পানীয়। তবে চা পাগল এই দেশে দ্রুত বাড়ছে কফির চাহিদা ও কফিপ্রেমীর সংখ্যা। এটি বুঝতে পেরে গত কয়েক মাসে দেশটিতে হাজারেরও বেশি কফিশপ খুলেছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
পরিসংখ্যান বলছে, চীনে গত কয়েক মাসে যে পরিমাণ কফিশপ খোলা হয়েছে, সংখ্যার বিচারে তা আমেরিকাকেও ছাপিয়ে গেছে। আলেগ্রা গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, চীনে গত এক বছরে ব্রান্ডেড কফিশপের সংখ্যা ৫৮ শতাংশ বেড়ে ৪৯,৬৯১-এ পৌঁছেছে।
বেইজিং বা সাংহাইয়ের মতো বড় শহরের পাশাপাশি মাঝারি শহরগুলোতেও বাড়ছে কফির কদর। চীনে কফির এমন ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে। স্টারবাকস, টিম হর্টনসের মতো নামি কফি ব্র্যান্ডগুলোর সুযোগ এসেছে চীনে বিনিয়োগ করার। যদিও স্থানীয় কফিশপের চ্যালেঞ্জের মুখে তাদের কম-বেশি পড়তেই হবে।
আরো পড়ুন: ৫২ বছর পর সিংহাসন ছাড়ছেন ডেনমার্কের রানি
আন্তর্জাতিক কফি সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে চীনে কফির চাহিদা বেড়েছে অন্তত ১৫ শতাংশ। চীনা বাজার গবেষণা সংস্থা কান্তার ওয়ার্ল্ডপ্যানেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেসন ইয়ু বলেন, পশ্চিমা জীবনধারাকে আপন করে নিচ্ছেন চীনা ক্রেতারা। আর সেই জীবনধারায় পানীয় হিসেবে কফি অন্যতম।
রমরমা ব্যবসা, কফিশপ খোলার হিড়িক
কার চেয়ে কে বেশি কফিশপ চালু করতে পারে, তা নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে চীনে। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে সমান তালে লড়ছে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও।
গত এক বছরে চীনের লুকিন কফি ৫ হাজার ৫৯টি আউটলেট খুলেছে। চায়নিজ চেইন কটি কফি খুলেছে ৬ হাজার ৪টি। আমেরিকার স্টারবাকসের ৭০০টি স্টোর রয়েছে চীনে। এই সংখ্যাকে নয় হাজারে উন্নীত করার লক্ষ্য তাদের। এছাড়া, কানাডীয় সংস্থা টিম হর্টনসের লক্ষ্য চীনে তিন হাজার কফিশপ খোলা।
উৎপাদকদের পালে হাওয়া
বিশ্বের কিছু অঞ্চলে প্রতিকূল আবহাওয়ায় কফি উৎপাদন কমেছে। তাই বাজারে এখন দাম কিছুটা চড়া। চীনের বাজারে গত আট মাসে সর্বোচ্চ লেনদেন করেছে অ্যারাবিকা কফি। আর রোবাস্টা কফি গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যবসা করলো গত সপ্তাহে। অবশ্য, ক্রেতাদের কথা ভেবে বেশিরভাগ কফি আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আমদানি করে চীন।
আমেরিকার কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, নতুন মৌসুমে ৫০ লাখ ব্যাগ কফির প্রয়োজন হয়েছে চীনে। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীর সপ্তম কফি পানকারী দেশে উঠে আসতে পারে চীনের নাম। আমেরিকা ও ব্রাজিলে বছরে দুই কোটি ব্যাগ কফি লাগে। কিন্তু চীনের এই ক্রমবর্ধমান বাজার জানান দিচ্ছে, চায়ের দেশটিতে কফি আনতে পারে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
এইচআ/