সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৯ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাপানিদের কেন বয়স বাড়ে না

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:১৬ অপরাহ্ন, ৬ই আগস্ট ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

অধিকাংশ জাপানি বা কোরিয়ার নারীকে দেখে তাদের প্রকৃত বয়স বোঝা যায় না। আসলে এসব দেশের মানুষ প্রাকৃতিক খাবারের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা তাদের প্রতিদিনের জীবনযাপনের অংশ। তবে এসবের বাইরেও ত্বকচর্চার ক্ষেত্রে তাদের কিছুটা নিজস্বতা রয়েছে। আজকের আয়োজনে থাকছে জাপানিদের কিছু ‘স্কিনকেয়ার সিক্রেটস’-

ধাপে ধাপে ক্লিনজিং

জাপানিরা কয়েকটি ধাপে ত্বককে পরিষ্কার করে থাকেন। প্রথমে জেলের মাধ্যমে মুখের সমস্ত ময়লা এবং মেকআপ উঠিয়ে নেন। এরপর ফেনাজাতীয় ক্লিনজার দিয়ে ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করেন। তৃতীয় ধাপে সিরাম, আর ক্লিনজিং প্রক্রিয়ার শেষটা করেন জেল বেজড কোনো ক্রিম দিয়ে। এটি আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বককে সুরক্ষা প্রদান করে।

লিভ-ইন মাস্ক

জাপানের মেয়েরা লিভ-ইন মাস্ক ব্যবহার করতে অনেক বেশি পছন্দ করেন। এটা অনেকটা শিট মাস্কের মতোই। সাধারণত রাতে এই মাস্ক লাগানো হয়, যা পরবর্তী ১০-১২ ঘণ্টার জন্য ত্বকের ওপর কাজ করে।

মেকানিকাল স্ক্রাবকে না

জাপানে ত্বকে স্ক্রাব করার চেয়ে পিলিং বেশি জনপ্রিয়। অতিরিক্ত স্ক্রাবিংয়ে ত্বকের সবচেয়ে ওপরের অংশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

আরো পড়ুন : ত্বকের রং পরিবর্তন কি বড় কোনো রোগের লক্ষণ?

উষ্ণ হাত

ত্বকের যত্নে এটি তাদের কাছে অপরিহার্য। সরাসরি ত্বক স্পর্শ করার আগে কিংবা এতে কিছু লাগানোর আগে জাপানিরা সব সময় হাত দুটোকে উষ্ণ করে নেন। এর জন্যে দুই হাতের তালু একসঙ্গে ঘষে প্রথমে গরম করে নেন। এরপর আঙ্গুলের ডগার সাহায্যে স্কিনকেয়ার প্রডাক্ট লাগিয়ে নেন তারা।

ফেশিয়াল ম্যাসাজ

নিয়ম করে কিনজিং আর ময়েশ্চারাইজিংয়ের পাশাপাশি ফেশিয়াল ম্যাসাজকে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকেন জাপানের মানুষ। ত্বকের ওপর তারা একেবারেই ঘষাঘষি করেন না। বরং অনেকটা আলতোভাবে থাপ্পড় লাগানোর মতো করে পুরো মুখে হাত বুলিয়ে নেন। এই প্রক্রিয়ার ফলে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং স্বাভাবিকভাবে কোষ সৃষ্টির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।

প্রাকৃতিক তেল

জাপানিদের ত্বকচর্চায় একটি আবশ্যকীয় উৎপাদন হলো ন্যাচারাল অয়েল বা প্রাকৃতিক তেল। এসব তেলের ব্যবহারে যে তৈলাক্ত ত্বক আরও তেলতেলে হয়ে ওঠে, এমনটি কিন্তু নয়। বরং এই তেল তাদের মেকআপ, সানস্ক্রিন, লিপস্টিক ইত্যাদিতে থাকা তেলকে আরও ভালোভাবে ত্বকে মিশে যেতে সাহায্য করে। ফলে তাদের মুখে থাকা পোরস স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পরিষ্কার থাকে।

মেকাপ ছাড়া একদিন

সপ্তাহে অন্তত একদিন জাপানি মেয়েরা ত্বকে কোনো মেকআপ ব্যবহার করেন না। এর ফলে ত্বকে অক্সিজেনের প্রবাহ ঠিক থাকে। এদিনে তারা শুধু খুব ভালো মানের ক্লিনজার ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে থাকেন।

রাইস ওয়াটার

রূপচর্চায় চাল ধোয়া পানির ব্যবহার আজকাল আমাদের দেশেও অনেকে করছেন। কিন্তু জাপানের মেয়েরা বেশি ব্যবহার করে থাকে সেদ্ধ চালের পানি, আমরা যাকে বাংলায় ভাতের মাড় বা ফেন বলে থাকি। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আনার পর সেদ্ধ চালের পানি তারা মুখে ম্যাসাজ করে থাকেন। এটি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়িয়ে তোলে এবং ত্বককে ধীরে ধীরে ফর্সা আর উজ্জ্বল করে।

পেটে না গেলে, ত্বকেও যাবে না

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জাপানের নারীরা খুব সাধারণ সৌন্দর্যচর্চা করে আসছেন। এক্ষেত্রে তাদের একটা গোল্ডেন রুল হলো, যে দ্রব্য খাওয়ার যোগ্য নয়, তা আসলে মুখের ত্বকেও মাখা যাবে না। এর কারণ হলো, আমাদের ত্বক অজস্র ছিদ্রযুক্ত। ত্বকে আমরা যা কিছুই প্রয়োগ করি, তা এসব ছিদ্রের মাধ্যমে আমাদের রক্তকণিকায় মেশে। তাই ত্বকচর্চায় ব্যবহৃত পণ্যের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

সবচেয়ে বড় কথা, প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে জাপানিরা দারুণ সচেতন। প্রকৃতি আর বৈজ্ঞানিক ফর্মুলা মিলিয়ে তাদের প্রতিটি পণ্য তৈরি করা হয়। ফলে তাদের প্রসাধন সামগ্রীতে সেভাবে কোনো প্রিজারভেটিভস থাকে না। প্রাকৃতিক নির্যাস সমৃদ্ধ পণ্যসামগ্রীর পাশাপাশি শসা, স্ট্রবেরির মতো একদম হাতের কাছের উপকরণ থেকে তৈরি মাস্কও খুব পছন্দ তাদের। তবে এসব ফল উৎপাদনের সময় বিভিন্ন কীটনাশক ও রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। জাপানিরা তাই ত্বকে এসব ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ সতর্ক থাকেন।

সূত্র- অল অন্টারিও

এস/ আই.কে.জে/

কোরিয়ান নারী

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন