ছবি : সংগৃহীত
দিনাজপুরে জমে উঠেছে লিচুর বেচাকেনা। এরই মধ্যে বাজারে এসেছে মাদ্রাজি, বেদানা, বোম্বাই ও চায়না-থ্রি জাতের লিচু। বর্তমানে খুচরায় ১০০ লিচু সর্বনিম্ন ৪০০ ও সর্বোচ্চ এক হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। শুরুতেই ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। তবে দাম বেশি হওয়ায় অস্বস্তিতে আছেন ক্রেতারা।
যদিও বাজারে ওঠা এসব লিচুর অনেকগুলো এখনও পরিপূর্ণভাবে পাকেনি। কৃষি বিভাগের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, মাদ্রাজি ছাড়া অন্য জাতের লিচু বাজারে আসার সময় হয়নি এখনও। তাদের হিসাবে, ১০ই জুন থেকে বাজারে আসার কথা ছিল।
তবে চাষি ও বাগানিরা বলছেন, এবার অতিরিক্ত গরম ও ঝড়ে অনেক লিচু নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে আগেভাগেই বাজারজাত করছেন।
লিচুর সবচেয়ে বড় বাজার বসেছে শহরের কালিতলা এলাকার নিউমার্কেটে। এখানে ১০-১১ দিন আগে থেকে বিক্রি শুরু হয়েছে। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সরব বাজার। প্রতিটি দোকানে সবুজ পাতা বিছিয়ে তার ওপর লিচু সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে হাঁকডাক দিচ্ছেন বিক্রেতারা।
রবিবার (২রা জুন) সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি দোকানে পাওয়া যাচ্ছে মাদ্রাজি, বেদানা, বোম্বাই ও চায়না-থ্রি ও হাড়িয়া জাতের লিচু। তবে পরিপূর্ণ পেকে যেমন লাল বর্ণ কিংবা খয়েরি হয়ে ওঠে, তা খুব একটা দেখা যায়নি। বেশিরভাগই সবুজ। কিন্তু আঁটি পরিকক্ব দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলেন, মাদ্রাজি লিচুর হাজার তিন থেকে তিন হাজার ৫০০, বোম্বাই তিন থেকে তিন হাজার ৮০০, বেদানা পাঁচ হাজার ৫০০ থেকে আট হাজার, হাড়িয়া সাত থেকে নয় হাজার এবং চায়না-থ্রি আকারভেদে আট থেকে ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। হিসাবে সর্বনিম্ন তিন টাকা থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত পিস বিক্রি হচ্ছে। সেটিও আবার পাইকারিতে। খুচরা বাজারে এগুলোর পিস চার থেকে ১৭-১৭ টাকা পড়ছে। এই দামে ক্রেতারা অখুশি হলেও কৃষক ও ব্যবসায়ীরা খুশি।
দাম নিয়ে অস্বস্তির কথা জানিয়ে সদরের মিশনরোড এলাকা থেকে লিচু কিনতে আসা সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ছেলেটা ঢাকায় থাকে। তার জন্য কিছু ফল পাঠাবো। সঙ্গে নিজেরাও খাবো। কিন্তু লিচুর যে দাম, তাতে কিনতে পারিনি।’
সদরের সুইহারি এলাকার অলোক দাস বলেন, ‘১০০ মাদ্রাজি লিচু কিনেছি ৩৫০ টাকায়। বেদানা জাতেরগুলো ভালো। কিন্তু দাম অনেক বেশি। একেকটির দাম ৯ টাকা। আমার সাধ্যের বাইরে।’
বরিশাল থেকে লিচু কিনতে আসা ফিরোজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি সব জেলায় ফলের ব্যবসা করি। লিচু কিনে বিভিন্ন জেলায় পাঠাবো। এখানের লিচুর বেশ চাহিদা আছে। কিন্তু এবার দাম বেশি।’
ঢাকা থেকে আসা আরশাদ আলী বলেন, ‘এবার শুরুতেই বাজার চড়া। অনেক লিচু এখনও পুরোপুরি পাকেনি। আবার দুদিন আগে ঝড়ে যেসব গাছের ডাল ভেঙে গেছে সেসব লিচু নিয়ে এসেছেন বাগানি ও চাষিরা। এখনও কিনি নাই। আরও দুই-তিন দেখি, দাম আরেকটু কমলে কিনবো।’
আরো পড়ুন : রাজবাড়ীতে লিচুর বাম্পার ফলন, লাভবান হয়ে খুশি চাষিরা