শনিবার, ৮ই নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘি আমাদের লাগবেই, নো হাংকি পাংকি: জামায়াত নেতা তাহের

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৩:৫৪ অপরাহ্ন, ৬ই নভেম্বর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, 'সোজা আঙুলে যদি ঘি না উঠে, তাহলে আঙুল বাঁকা করব। কিন্তু ঘি আমাদের লাগবেই। সুতরাং যা বোঝাতে চাই বুঝে নিন। নো হাংকি পাংকি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট লাগবেই।'

আজ বৃহস্পতিবার (৬ই নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পল্টন মোড়ে গণমিছিল-পূর্ব সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, 'আমরা আপনাদের চালাকি বুঝি। আপনাদের চালাকির ভিত্তিতেই দাবি আদায়ের পন্থাও আমরা আবিষ্কার করবো। আমরা এখানো নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলনে আছি।'

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবি ও নির্বাচনের আগে গণভোটসহ ৫ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা আটটি দল। আজ গণমিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ছিল দলগুলোর।

আজ সকাল ১১টার দিকে দলগুলো আলাদা মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে এসে সমবেত হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে দুপুর ১২টার দিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।

এর আগে সমাবেশে জামায়াতের নায়েবে আমির তাহের বলেন, 'নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেও গণভোট করতে আইনি বাধা নেই। এ বিষয়ে সময়ক্ষেপণ অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলবে।'

গণভোটে টাকার অভাব হবে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'অনেকে গণভোটের ক্ষেত্রে খরচের কথা বলেন। একদিনে বাংলাদেশে যে পরিমাণ চাঁদাবাজি হয়, সেই টাকা দিয়ে একটা গণভোট করা সম্ভব।'

জামায়াতের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে জানিয়ে তাহের আরও বলেন, 'সরকারকেও এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে হবে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য জামায়াত একটি কমিটি গঠন করেছে। অন্য দলগুলোও যাতে আলোচনার জন্য কমিটি গঠন করে।'

আলোচনার জন্য আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কল করেও পাননি বলে দাবি করেন তাহের। বলেন, 'মিছিল শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আবারও কল করা হবে। তাকে অনুরোধ করা হবে বিএনপির পক্ষ থেকেও যাতে আলোচনায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত আসে।'

এই জামায়াত নেতার ভাষ্য, 'জাতি মনে করে মেজর দলগুলো বসে শুধু জুলাই সনদ নয়, আগামী নির্বাচন কীভাবে হবে সেই বিষয়েও আলোচনা করবে। সেই আলোচনায় নির্বাচনে ভোট ডাকাতি যে হবে না—দলগুলোকে এই বিষয়ে ঐক্যমত্য পোষণ করতে হবে। জাতির কাছে টেলিভিশনে ওয়াদা করতে হবে—কেন্দ্র দখল হবে না। করলে সেই কেন্দ্রের ভোট বাতিল হবে, এমন ঘোষণা দিতে হবে। প্রধান উপদেষ্টাকেও বলতে হবে, নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে সেটি বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেবেন। এদেশের মানুষ আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না।'

তিনি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে আহ্বান জানান। বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এরপরও উন্নতি না হলে আগামী ১১ই নভেম্বর ঢাকা মহানগরী হবে জনতার নগরী।'

জাতীয় নির্বাচন পেছালেও গণভোট আগে হতে হবে বলে সমাবেশে দাবি জানান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান।

তিনি বলেন, '(জাতীয়) নির্বাচনের সাথে গণভোট হবে না।…যেদিনই নির্বাচন হোক, গণভোট আগে দিতে হবে। নির্বাচন পিছিয়ে গেলেও গণভোট আগে হতে হবে। যারা বলেছে, সংস্কার লাগবে না, তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে না।'

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী ও নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে দুপুর ১২টার দিকে পল্টন থেকে গণমিছিল নিয়ে যমুনার অভিমুখে এগোতে থাকেন দলগুলোর নেতাকর্মীরা। সোয়া ১২টার পর মিছিলটি মৎস্য ভবন এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়।

পরে আট দলের নয়জন নেতার একটি প্রতিনিধিদল যমুনায় প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে যান।

তারা হলেন—জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক মূসা, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি একেএম আনোয়ারুল ইসলাম।

জে.এস/

জামায়াতে ইসলামী গণভোট

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250