বৃহস্পতিবার, ১৬ই অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে উত্তরের মানুষ... *** সব গণমাধ্যমকে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার *** ‘লং মার্চ টু যমুনা’ স্থগিত, নতুন কর্মসূচি দিলেন শিক্ষকরা *** জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুক্রবারই, বাদ পড়লে পরেও স্বাক্ষর করা যাবে: আলী রীয়াজ *** সাবেক বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা *** সাত কলেজ নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপ গুজব ছড়াচ্ছে: শিক্ষা উপদেষ্টা *** এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা *** আগামীকাল স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে ‘জাতীয় জুলাই সনদ, ২০২৫’ *** ‘দুটি সমাজ ইসলামকে দারুণভাবে ধারণ করছে—একটা যুব, আরেকটা মায়েদের’ *** রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করবে ভারত—ট্রাম্পের দাবির জবাবে যা বলল নয়াদিল্লি

গাজায় ত্রাণ প্রবেশে ফের ইসরায়েলের বিধিনিষেধ, হুমকির মুখে যুদ্ধবিরতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:২২ অপরাহ্ন, ১৫ই অক্টোবর ২০২৫

#

গাজা সীমান্তে প্রবেশের অপেক্ষায় ত্রাণবাহী ট্রাক। ছবি: অনাদোলু

গাজায় কার্যকর হওয়া ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি গতকাল মঙ্গলবারই (১৪ই অক্টোবর) প্রথম পরীক্ষার মুখে পড়েছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাস জিম্মিদের মরদেহ ফেরাতে বিলম্ব করায় গাজায় ত্রাণ প্রবাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে এবং মিসরের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংও পরিকল্পনামতো খোলা হবে না। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মঙ্গলবার রাতে হামাস চার জিম্মির মরদেহ আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করে। আমেরিকার মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এ নিয়ে মোট আটজনের মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়েছে। এখনও ২০ জনের মরদেহের সন্ধান মেলেনি। হামাস জানিয়েছে, সব কবরস্থানের অবস্থান শনাক্ত না হওয়ায় তারা বাধার মুখে পড়েছে।

রেড ক্রস সোমবার সতর্ক করেছিল, গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা একটি ‘বিরাট চ্যালেঞ্জ’, যা সম্পন্ন করতে কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।

কিন্তু ইসরায়েল এ বিলম্বের জন্য হামাসকে ইচ্ছাকৃতভাবে দোষারোপ করে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা ঘোষণা দেয়, গাজায় প্রবেশের অনুমতি পাওয়া ত্রাণবাহী ট্রাকের সংখ্যা দিনে ৬০০ থেকে কমিয়ে ৩০০ করা হবে। পাশাপাশি মিসর সীমান্তের রাফাহ ক্রসিংও অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়—যা ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন।

এই চুক্তির মাধ্যমেই সোমবার হামাস শেষ ২০ জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়, ইসরায়েল প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেয় এবং আংশিকভাবে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে। তবে যুদ্ধবিরতি স্থায়ী করতে এবং দীর্ঘমেয়াদি শান্তির পথে এগোতে গেলে বড় ধরনের ঝুঁকি রয়ে গেছে।

ট্রাম্প হামাসকে অবশিষ্ট মরদেহগুলো দ্রুত ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি গাজা পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপ শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয়। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘একটা বড় বোঝা এখন হালকা হয়েছে, কিন্তু কাজ এখনো শেষ হয়নি। মৃতদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফেরত দেওয়া হয়নি! এখনই দ্বিতীয় ধাপ শুরু হচ্ছে!!!’

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার শুরুতে কিছু টানাপোড়েন হবে—এটা আগেই অনুমান করা হয়েছিল। হামাস ও ইসরায়েল দু’পক্ষই ট্রাম্পের অস্পষ্ট ২০ দফা পরিকল্পনার বাস্তবায়নের সময় নিজেদের পক্ষে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে।

তবুও রাফাহ সীমান্ত খুলে দেওয়া বিলম্বিত করা এবং ত্রাণ সীমিত করার ঘোষণা ছিল অপ্রত্যাশিত। গত সপ্তাহে চুক্তিতে বলা হয়েছিল, বুধবার থেকে রাফাহ ক্রসিং খুলে দেওয়া হবে এবং মার্চের স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতির সময়কার মতো পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। যুদ্ধ চলাকালীন ইসরায়েল গাজায় প্রবেশ ও বহির্গমনপথ বন্ধ করে দেয়, ফলে খাদ্য ও ওষুধের সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এবং গাজার বহু এলাকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।

চুক্তিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি গ্রহণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ‘সব জিম্মিকে—জীবিত বা মৃত—ফেরত দিতে হবে।’ তবে যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে হামাসকে অবশিষ্ট মৃত জিম্মিদের বিষয়ে তথ্য দিতে হবে এবং ‘যত দ্রুত সম্ভব এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’

এদিকে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর সোমবারের উদ্‌যাপনের পর মঙ্গলবার সারাদিন গাজাজুড়ে বিচ্ছিন্ন সহিংসতায় উত্তেজনা আবারও বৃদ্ধি পায়।

শনিবার (১১ই অক্টোবর) ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটি ও আরও কিছু এলাকা থেকে সরে গেলেও, তারা নতুন অবস্থানে থাকা অবস্থায় দুইটি আলাদা ঘটনায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালায়। এতে ছয়জন নিহত হয় বলে খবর পাওয়া গেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনী তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’র পেছনে সরে গেছে, তবে এখনো গাজার অর্ধেকেরও বেশি এলাকা তাদের দখলে রয়েছে।

গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল বলেন, গাজা সিটির শুজাইয়া এলাকায় নিজ বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি দেখতে গিয়ে ড্রোন হামলায় পাঁচজন নিহত হন, এবং খান ইউনিসের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আরও একজন ড্রোন হামলায় মারা যান।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, প্রথম ঘটনায় তারা বারবার সতর্ক করার পরও ‘সন্দেহভাজন’ ব্যক্তিরা তাদের অবস্থানের দিকে এগিয়ে আসছিলেন, যাদের ‘হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে হামাসের একটি পুরনো অস্ত্রভাণ্ডারের কাছে।

জে.এস/

যুদ্ধবিরতি গাজা উপত্যকা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250