বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পর্বতে রাশিয়ার ঘাঁটি ‘এরিয়া ৫১’, আছে রেলপথ, হেলিপ্যাড

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:১৮ অপরাহ্ন, ৩০শে জুন ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

কয়েক দশক পেরোলেও রহস্যঘেরা এক পর্বতে গোপনে কী কার্যক্রম চালাচ্ছে রাশিয়া তা আজও উদ্ধার করেতে পারেনি আমেরিকা। সেই ১৯৯৫ সালে স্যাটেলাইট ইমেজে উরাল পর্বতমালায় রাশিয়ার গোপন কার্যক্রম ধরা পড়ে।

কিন্তু সেখানে আরও কয়েক দশক আগে থেকে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে রাশিয়া। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ রাশিয়ার রহস্যময় এই প্রজেক্ট নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে। কিন্তু রাশিয়ার কথিত ‘এরিয়া ৫১’ আজও গোয়েন্দাদের কাছে রহস্যে ঘেরা।

রাশিয়ার বাশকোর্তোস্তান অঞ্চলের বেলোরেতস্কি জেলায় অবস্থিত রহস্যে মোড়া মাউন্ট ইয়ামান্তাউ। এটি দক্ষিণ উরাল বিভাগের সর্বোচ্চ পর্বত এবং দক্ষিণ উরাল নেচার রিজার্ভের মধ্যে অবস্থিত একটি পর্বত। পর্বতটির চারদিক ঘন জঙ্গলে মোড়া। কিন্তু কেন এই পর্বত ভয়ংকর এবং রহস্যে মোড়া? মনে করা হয়, ইয়ামান্তাউের নিচে পুরোদস্তুর একটি সামরিক ঘাঁটি তৈরি করে রেখেছে রাশিয়া। কারও কারও মতে এটি পৃথিবীর বৃহত্তম সামরিক বাঙ্কারও।

আরো পড়ুন: যে দেশে দাঁতের ডাক্তার আছেন মাত্র ২ জন!

যদিও রাশিয়ার সরকার কখনও সেখানে সামরিক ঘাঁটি বা বাঙ্কারের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করেনি। তবে ওই বাঙ্কারের অস্তিত্ব সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রমাণ বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ্যে এসেছে। ১৯৮০ সালের গোড়ার দিকে ইয়ামান্তাউ পর্বতের বাঙ্কার নিয়ে প্রথম জল্পনা-কল্পনা তৈরি হয়। স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যায়, ওই পর্বতের দক্ষিণ দিকে একটি বিস্তৃত বনাঞ্চল কেটে ফেলেছে রাশিয়া। তার পর থেকেই নাকি সেখানে লাগাতার কাজ চালিয়ে গেছে দেশটি। ধারণা করা হয়, আশির দশকের শেষের দিকে পর্বতের নিচে বাঙ্কার তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছিল রাশিয়া।

শোনা যায়, ইয়ামান্তাউ পর্বতের ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার ১০০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ এবং ৬০০ মিটারেরও বেশি গভীর। ওই বাঙ্কারে নাকি, বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার ওই গোপন সামরিক ঘাঁটি পরমাণু হামলা রোধ করতেও সক্ষম। নিমেষে শত্রুপক্ষের বিমান ধ্বংস করতে পারে এমন ‘ভূমি থেকে আকাশ’ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাঙ্করোধী ক্ষেপণাস্ত্র, এমনকি যুদ্ধবিমানও নাকি মজুত রয়েছে বাঙ্কারটিতে।

রাশিয়া ওই বাঙ্কারের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রও মজুত রেখেছে বলে শোনা যায়। রয়েছে গবেষণাগারও। সেখানে বিপজ্জনক সব সামরিক অস্ত্র নিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়। রাশিয়ার গোপন ওই বাঙ্কারের কয়েক হাজার মানুষ একসঙ্গে থাকতে পারেন। থাকতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, এ জন্য বাঙ্কারের মধ্যেই নাকি হাসপাতাল, খাবার উৎপাদনের ব্যবস্থা, জল পরিশোধন ব্যবস্থা, এমনকি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও রয়েছে। রয়েছে হেলিপ্যাড এবং রেলপথও।

তবে রাশিয়া পর্বতের নিচে ওই বাঙ্কার থাকার বিষয়টি বরাবর গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তাই ইয়ামান্তাউ পর্বতকে ঘিরে তৈরি হওয়া রহস্যের কোনও সমাধান হয়নি। সত্যিই যদি ইয়ামান্তাউ পর্বতের নিচে কোনও বাঙ্কার থেকে থাকে, তাহলে সেটি কোন উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে, তাও স্পষ্ট নয়। তবে অন্য কোনও দেশের সঙ্গে যুদ্ধ বাধলে রাশিয়ার হয়ে নেতৃত্ব দিতে পারে ভূগর্ভস্থ ওই বাঙ্কার। অনেকে এ-ও মনে করেন যে, যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে রাশিয়ার শীর্ষ নেতাদের সুরক্ষিত রাখতে ওই বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছে।

এইচআ/


রাশিয়া ‘এরিয়া ৫১’

খবরটি শেয়ার করুন