ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার রিপন দাস নামে আরেক আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে। শনিবার (১৪ই ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এ নিয়ে হত্যা মামলায় মোট তিন আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর আগে শনিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সংশ্লিষ্ট বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করেন কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান। তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। একটি ওয়াকিটকি হাতে সাদা পাঞ্জাবি অর্থাৎ ‘সিভিল ড্রেসে’ এই কর্মকর্তা প্রবেশের পর পর সেখানে প্রবেশ করেন কোতোয়ালি থানার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। যাদের অনেকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের জন্য নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তারা প্রবেশের পরপর বিচারকের খাস কামরার দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী গণমাধ্যমকে জানান, ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মতে একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি তার নিজের অপরাধের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে থাকেন একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট। যেখানে আসামি আর শুধু বিচারকই থাকতে পারেন। জবানবন্দি রেকর্ড গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এটি বিচারিক প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়।
এক্ষেত্রে বিচারককে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৬৪ ধারা অনুসরণ করতে আসামিকে খাস কামরায় জবানবন্দি দেওয়ার ৩ ঘণ্টা বা পর্যাপ্ত সময় দিতে হয়। আসামিকে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা জবানবন্দি প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে কি না এটি নিশ্চিত হতে হয়। তাছাড়া রিমান্ডের পরপরই জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য হাজির করা হলে আসামির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন আছে কি না সেটি নিশ্চিত হতে হয়।
আরো পড়ুন : সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ শুরু ১৯শে ডিসেম্বর : জরুরি মামলা শুনতে বেঞ্চ গঠন
সুপ্রিম কোর্টের ওই আইনজীবী গণমাধ্যমকে বলেন, জবানবন্দি মূলত অপরাধ করে একজন আসামি অনুতপ্ত হয়ে প্রদান করে থাকেন। তাকে চাপ প্রয়োগ করা কিংবা জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আসামি চাপ অনুভব করে এরকম পরিস্থিতি তৈরি করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে কোতোয়ালি জোনের এসি একজন আসামির জবানবন্দির আগে খাস কামরায় প্রবেশ করে বিচারকের সঙ্গে বৈঠক করাটা কোনোভাবেই উচিত হয়নি। মামলা তদন্ত ও প্রমাণ করা একটি শৈল্পিক বিষয়। এখানে কৌশলই মুখ্য। ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি কাম্য নয়। তদন্ত কর্মকর্তাদের এসব বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।
কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান গণমাধ্যমে বলেছেন, আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় শনিবার আসামি রিপন দাস ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এদিন সন্ধ্যায় রিমান্ড শেষে তাকে বিচারকের খাস কামরায় হাজির করা হলে এ জবানবন্দি প্রদান করেন। এ নিয়ে মামলাটিতে মোট তিন আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
এস/ আই.কে.জে