মঙ্গলবার, ৩রা জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২০শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের তাৎপর্য ও গুরুত্ব

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০২:৫৩ অপরাহ্ন, ৭ই এপ্রিল ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

৭ই এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। ১৯৪৮ সালের এ দিনেই প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ (ডব্লিউএইচও)। সেই থেকে প্রতিবছর নানা প্রতিপাদ্যের আলোকে দিবসটি পালন হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য হলো- ‘জন্ম হোক সুরক্ষিত, ভবিষ্যৎ হোক আলোকিত’। এ প্রতিপাদ্য মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যকে কেন্দ্র করে নির্ধারণ করা হয়েছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে যে, এর মাধ্যমে দেশে দেশে সরকার ও স্বাস্থ্য সম্প্রদায়কে প্রতিরোধযোগ্য মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যু রোধ করার প্রচেষ্টা জোরদার করার এবং নারীদের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য ও কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাবে। এটি বছরব্যাপী প্রচারণা করা হবে।

১৯৪৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ অর্থনীতি ও সমাজ পরিষদ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সম্মেলন ডাকার সিদ্ধান্ত নেয়। একই বছরের জুন ও জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাংগঠনিক আইন গৃহীত হয়। 

১৯৪৮ সালের ৭ই এপ্রিল এ সংস্থার আইন আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। ডব্লিউএইচও প্রতিষ্ঠার দিনটিই বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস হিসেবে নির্ধারিত হয়। দিবসটি এদিন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয়। দিবসটিকে ঘিরে প্রতিবছর সংস্থাটি এমন একটি স্বাস্থ্য ইস্যু বেছে নেয়, যা সারা পৃথিবীর জনস্বাস্থ্যের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিষ্ঠার আগে বেশ কয়েকটি সংস্থা ছিল। লিগ অব নেশনের হেলথ অরগানাইজেশন, দ্য অফিস ইন্টারন্যাশনাল ডিহাইজিন পাবলিক ও ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজ- এ তিন সংস্থা একত্রিত করে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

১৯৪৮ সালে সংস্থাটির যাত্রা হলেও এদের কাজ শুরু হয় ১৯৫১ সালে। কারণ, প্রথম দিকে সংস্থাটির সম্পদের অভাব ছিল। 

এবারের বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মণ্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সেমিনার আয়োজন, স্যুভেনির প্রকাশ, স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদর্শনী, জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, সড়কদ্বীপ সজ্জিতকরণ, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে স্বাস্থ্য সমস্যার ওপর আলোচনা অনুষ্ঠান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস (ওয়ার্ল্ড হেলথ ডে) একটি মূল্যবান প্লাটফর্ম, যা সার্বজনীন স্বাস্থ্য উন্নতির পথে মানুষকে একসঙ্গে আনার জন্য ব্যবহৃত হয়। যা একটি স্বাস্থ্যবিধানের উদ্দেশ্যে সামাজিক ও ব্যক্তিগত পরিবর্তন উন্নত করতে কাজ করে। এটি সব সময়ে আমাদের মানবিক জীবনে স্বাস্থ্য সম্পর্কে মনোনিবেশ ও বৈদেশিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। 

ডব্লিউএইচও’র ৭৭ বছরের দীর্ঘ যাত্রায় ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ নিশ্চিতে অনেক অর্জন রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পোলিও এবং অত্যন্ত সংক্রামক গুটিবসন্ত নির্মূল। বিগত কয়েক দশকে কলেরা, ডায়রিয়া, ইবোলা, এভিয়ান ফ্লু, সার্স এবং কোভিড-১৯ মহামারি থেকে মানুষকে রক্ষায় অনন্য ভূমিকা রেখেছে সংস্থাটি। কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের বিকাশ ও বিতরণে সমন্বয়ের মাধ্যমে মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করেছে ডব্লিউএইচও।

পরিবেশগত স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষায় উন্নত ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংস্থাটি। ডব্লিউএইচও’র সন্তান জন্মদানে দক্ষ সহায়তাকারীর সংখ্যা বাড়ানো, টিকাদান কর্মসূচি, অসুস্থ শিশুর সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা (আইএমসিআই), অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং জরায়ুর ক্যান্সার নির্মূল উদ্যোগের ফলে পাঁচ বছর বয়সী শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের মৃত্যুহার অর্ধেকে নেমে এসেছে।

এইচ.এস/


বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন