শনিবার, ৬ই ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২১শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে ঢাকায়, দাফন দিল্লিতে: সালাহউদ্দিন আহমদ *** ভারতকে ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে’ জ্বালানি তেল সরবরাহ করবে রাশিয়া: পুতিন *** আড়াই ঘন্টা বাইরে থেকে খাঁচায় ফিরল সিংহী ডেইজি *** ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হওয়ার কোনো কারণ দেখছেন না তিনি *** খালেদা জিয়ার জন্য জার্মানি থেকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পাঠাচ্ছে কাতার *** প্রধান উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা মাহফুজ আনামের *** প্রসাধনী শিল্পে ব্যবহৃত তেলের জন্য হাঙর শিকার, বিলুপ্তি ঠেকাতে বৈশ্বিক উদ্যোগ *** শেখ হাসিনাকে ফেরতের ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা *** ‘তারেক রহমান যাকে ইচ্ছা তাকে প্রধান উপদেষ্টা বানাতে পারতেন’ *** শারীরিক অবস্থা ঠিক থাকলে রোববার খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হবে

বিশ্বের সবচেয়ে কৃপণ নারী কে জানেন?

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৪৮ অপরাহ্ন, ১৭ই নভেম্বর ২০২৪

#

ফাইল ছবি (সংগৃহীত)

আমরা আমাদের আশেপাশে কিংবা বন্ধুমহলে অনেক মিতব্যয়ী মানুষকে দেখে থাকি। তবে এটি করার তাদের বিশেষ কারণ থাকে। কম আয়ে কীভাবে ভালোভাবে জীবন চালানো যায় সেই ব্যবস্থা। কম খরচ করে কিছুটা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করাই মূলত উদ্দেশ্য। তবে আজ যে নারীর কথা বলব তিনি বিশ্বের সবচেয়ে কৃপণ নারীর স্বীকৃতি পেয়েছেন।

বিশ্বের সবচেয়ে কৃপণ নারীর নাম হেট্টি গ্রিন। তার পুরো নাম হেনরিয়েটা হাওল্যান্ড গ্রিন হলেও তিনি হেট্টি গ্রিন নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনি ‘ওয়াল স্ট্রিটের ডাইনী’ এবং ‘বিশ্বের সবচেয়ে কৃপণ নারী’ নামে পরিচিতি পান। নিজের অসাধারণ আর্থিক দক্ষতা এবং একই সঙ্গে কঠোর মিতব্যয়িতার কারণে হেট্টি গ্রিন আজও আলোচনায়।

হয়তো ভাবছেন হেট্টি গ্রিন অভাবে পড়ে হয়তো কৃপণতা করতেন। আসলে একেবারেই তেমনটা নয়। হেট্টি গ্রিন ১৮৩৪ সালের ২১শে নভেম্বর ম্যাসাচুসেটসের নিউ বেডফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন ধনী পরিবারের সন্তান। হেট্টির পরিবার তিমি শিকারের ব্যবসা, শিপিং এবং রিয়েল এস্টেটের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছিল। ১৮৬৫ সালে হেট্টির বাবা এবং চাচা মারা যান। ফলে তিনি প্রায় ৭.৫ মিলিয়ন ডলারের বিশাল সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন। সেই সম্পদকে তিনি আরও বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেছিলেন।

হেট্টি গ্রিন ছিলেন একাধারে একজন ব্যতিক্রমী বিনিয়োগকারী এবং মিতব্যয়ী। তিনি তার মূলধনকে বন্ড, রিয়েল এস্টেট, রেলওয়ে শেয়ার এবং ঋণে বিনিয়োগ করতেন। যেখানে বেশিরভাগ নারী সামাজিক এবং পারিবারিক কাজে সময় ব্যয় করতেন, হেট্টি তার সময় এবং মেধা ব্যয় করতেন আর্থিক হিসাব এবং বাজার বিশ্লেষণে।

তবে নিজের বেলায় তিনি এক পয়সাও খরচ করতে চাইতেন না। হেট্টি গ্রিনের কৃপণতার গল্পগুলো তার আর্থিক দক্ষতার মতোই বিস্ময়কর। তিনি এতটাই মিতব্যয়ী ছিলেন যে, শীতকালে গরম করার খরচ বাঁচাতে একমাত্র কালো পোশাক পরতেন। তার এই পোশাকটিও ছিল জরাজীর্ণ। এমনকি তিনি ১৬ বছর বয়সে যে অন্তর্বাস কিনেছিলেন সেটিই জোড়াতালি দিয়ে শেষ বয়স পর্যন্ত পরেছেন।

তিনি নিজের এবং পরিবারের চিকিৎসা ব্যয়ের ক্ষেত্রেও চরম মিতব্যয়িতা দেখাতেন। একবার তার ছেলে নেড গ্রিন পায়ের চোট পান। হেট্টি এতটাই কৃপণ ছিলেন যে তিনি ছেলেকে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা না করানোর কারণে নেডের পা কেটে ফেলতে হয়। এই ঘটনার পর থেকে তিনি সবচেয়ে কৃপণ মা হিসেবেও পরিচিত হন।

আরো পড়ুন : মাত্র আড়াই বছর বয়সে করলো বিশ্বরেকর্ড!

নিজের খাবারের জন্যও তেমন খরচ করতেন না। যদিও তার স্বামীও ছিলেন এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। যার টাকার কোনো অভাব ছিল না। কিন্তু হেট্টি একেবারেই খরচ করতে চাইতেন না। তিনি নিউইয়র্কের কোনো ব্যাংকে নিজস্ব অফিস না রেখে সাধারণ পাবলিক লাইব্রেরিতে বসে কাজ করতেন। কারণ, সেখানে আলোর খরচ লাগত না। এমনকি তিনি তার নিজের খাবারের জন্য অতি সামান্য পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতেন এবং সর্বদা কম খরচে চলার চেষ্টা করতেন।

মুদি দোকানের অবশিষ্ট কেক এবং ভাঙা বিস্কুট খেতেন এবং প্রতিদিনই তার কুকুরের জন্য একটা ফ্রি হাড় পাওয়ার জন্য দোকানীর সাথে ঝগড়া করতেন! তিনি মাত্র দুই সেন্ট দামের একটি পাই খেয়ে বেঁচে ছিলেন বহুদিন। সাবান খরচ বাঁচানোর জন্য তার পোশাক যখন অতিরিক্ত ময়লা হয়ে যেত তখন শুধু ময়লা অংশটুকু ধুয়ে নিতেন।

১৯১৬ সালে ৮১ বছর বয়সে হেট্টি গ্রিনের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর তার বিশাল সম্পদ দুই সন্তান নেড এবং সিলভিয়া গ্রিনের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। তারা তাদের মায়ের মতো কৃপণ ছিলেন না এবং ধীরে ধীরে এই সম্পদ বিলাসী জীবনযাত্রার মাধ্যমে শেষ করে ফেলেন। তবে তার মেয়ে তার মায়ের রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে কিছুটা খরচ করেছিলেন হাসপাতালের জন্য।

সূত্র: ব্রিটানিকা, স্মিথোশিয়ান ম্যাগাজিন

এস/ আই.কে.জে/

কৃপণ নারী

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250