ছবি : সংগৃহীত
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পাহাড় জেলার ছোট্ট গ্রাম মাওলাইনং। সুন্দর রুচির ছাপ সর্বত্র। ডাস্টবিনগুলোও সুন্দর, অদ্ভুত। এই গ্রামে বাঁশের তৈরি ঝুড়িতে ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। সেগুলো দিয়ে তৈরি হয় কৃষি কাজে ব্যবহৃত জৈব সার। পলিথিন ব্যবহার ও ধূমপান নিষিদ্ধ এখানে। এ গ্রামের সব বাসিন্দাই শিক্ষিত। তারপরও কৃষিই তাদের মূল জীবিকা।
সবুজের ফাঁকে ফাঁকে এক একটি বাড়ি। প্রতিটি বাড়ি ঘিরে সাজানো রঙিন সব ফুলের গাছ। ফুলে ফুলে উড়ে বেড়াচ্ছে রঙিন সব প্রজাপতি। যেন রূপকথার রাজ্য থেকে উঠে আসা গ্রাম এটি! গ্রামের অধিবাসীরা খুবই নম্র-ভদ্র। গ্রামটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন এখানকার অধিবাসীরাই।
শিলং থেকে ৯০ কি.মি দূরত্বে অবস্থিত মাওলাইনং গ্রাম। ‘বরাক উপত্যকার প্রবেশদ্বার’ হিসেবে পরিচিত কালাইন, যা মাওলাইনং থেকে ১৮৭ কি.মি দূরে অবস্থিত। অপরদিকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একেবারেই কাছাকাছি এই গ্রাম, পৌঁছতে সময় লাগে মাত্র দুই ঘণ্টা। প্রতিদিনই অসংখ্য পর্যটক আসেন এখানে। তারপরও গ্রামটি খুবই পরিচ্ছন্ন।
ছোট্ট এই গ্রামটি সবুজ-শ্যামল পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। গ্রামের কোনও বাসিন্দাই যত্রতত্র আবর্জনা ফেলেন না, বরং তারা এখন প্লাস্টিকের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করার ওপর জোর দিয়েছে। গ্রামের জঙ্গল এবং সবুজায়ন রক্ষা করতে মাওলাইনং গ্রামের সবাই নিয়মিত গাছ লাগান। এর সঙ্গে সঙ্গে সবার সাথে ভালো ব্যবহার করার উপর সবসময়ই জোর দিয়ে থাকেন বাসিন্দারা।
আরো পড়ুন : এবার ডেটিংয়ের জন্য ছুটি দিচ্ছে অফিস!
মাওলাইনং গ্রামের লোকদের উর্পাজনের প্রধান উৎস কৃষি। সুপারি তাদের প্রধান ফসল ও শস্য ৷ এই গ্রামে দলবদ্ধ হয়ে খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা বসবাস করে। শান্তিপ্রিয় এ গ্রামে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা প্রচলিত। মাওলাইনং সমাজে পরিবারের জেষ্ঠ্য কন্যা মায়ের সকল সহায়-সম্পত্তির উত্তরাধিকারী। মায়ের নামের অংশও পদবী হিসেবে ব্যবহার করতে হয় মেয়েকে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্যে ভারতের এই মাওলাইনং গ্রামটি পৃথিবী বিখ্যাত। ২০০৩ এবং ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক ট্র্যাভেল ম্যাগাজিন থেকে এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম হিসেবে স্বীকৃতি পায় মাওলিননং। এছাড়া ২০০৫ সালে ভারত সরকার সবচেয়ে পরিষ্কার গ্রাম হিসেবে ঘোষণা দেয়। ২০১৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই গ্রামের মোট জনসংখ্যা ৫০০ জন। ২০১৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মাওলাইনং-এ পরিবার আছে ৯৫টি।
এস/কেবি