বৃহস্পতিবার, ৩রা জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৯শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি জাতীয় সংসদ ছাড়া কেউ করতে পারবে না: আমীর খসরু *** তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে সব দল একমত: আলী রীয়াজ *** পার্বত্য চট্টগ্রামের ১০০ স্কুলে এ বছরই ই-লার্নিং চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার *** এনবিআরের তিন সদস্য ও এক কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসর *** প্রথমবার নারী এশিয়ান কাপে বাংলাদেশ *** অপতথ্য মোকাবিলায় জাতিসংঘকে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার *** সবজি সংরক্ষণে ১০০ হিমাগার নির্মাণ করছে সরকার *** বিপিএলের দল বাছাই আগস্টে, ড্রাফট অক্টোবরে *** দালাই লামার মৃত্যুর পর একজন উত্তরসূরি থাকছেন *** প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে পোস্ট দেওয়া সেই ঊর্মি অবশেষে...

ফোনে ইংরেজিতে চাকরির অফার, প্রতারণার নতুন কৌশল

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:০৯ পূর্বাহ্ন, ৩রা এপ্রিল ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

অনলাইনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা দিনকে দিন বাড়ছে। মোবাইল কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে টেক্সট পাঠানোর পাশাপাশি ফোন করেও দেওয়া হচ্ছে 'ঘরে বসে আয় করার সুযোগ'।

অপরপ্রান্তে থাকা ব্যক্তি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিজেকে কোনো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন, কথা বলেন ইংরেজিতে। কখনো কখনো আবার বাংলাদেশি কোনো ডিজিটাল এজেন্সি বা মার্কেটিং এজেন্সির কর্মী বলেও দাবি করেন।

সম্প্রতি এই ধরনের ফোন কল পাওয়া কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলেছে সুখবর। যারা ফোন করছেন তারা কারা, তা জানতে যে নম্বর সংগ্রহ করে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে বেশীরভাগ নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। দুই একটি কল রিসিভ করে অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি বলেছেন, এই ধরনের কোনো চাকরির অফার তারা দেননি, এমনকি এ বিষয়ে তাদের কোনো ধারণাও নেই।

গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি মোবাইলে এমনই একটি চাকরির অফার পান সুবর্ণা (ছদ্মনাম)।

তিনি সুখবরকে বলেন, 'আমার কাছে একটা বাংলাদেশি নম্বর থেকে কল এসেছিল। নারীকণ্ঠের একজন ইংরেজিতে কথা বলছিলেন। তিনি জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কল করেছেন। আমি ঘরে বসে চাকরি করতে চাই কি না জানতে চান।'

সুবর্ণাকে বলা হয়, তিনি যদি তাদের পাঠানো দুটো ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেন তাহলে তার ফোনে ৩০০ টাকা পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, 'আমার কাছে কিছুটা খটকা লাগে। তখন আমি বাইরে ছিলাম। তাই কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দেই। কিন্তু আমার কাজের প্রয়োজন। তাই পরে আমি ওই নম্বরে কল করে কথা বলার চেষ্টা করি। তখন একজন বয়োজ্যেষ্ঠ বাংলাদেশি নারী ফোন ধরেন। আমি চাকরির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রীতিমতো আকাশ থেকে পড়েন। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে তিনি আমাকে কখনো কল করেননি এবং এ ধরনের কোনো চাকরির অফারও দেননি। অথচ আমার কাছে ওই নম্বর থেকেই কলটি এসেছিল।'

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতারকরা মূলত 'ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল' বা ভিওআইপি ব্যবহার করে এই কলগুলো করছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) উত্তরের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সহকারী কমিশনার (এডিসি) জুনায়েদ আলম সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, 'মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস (যেমন বিকাশ) প্রতারণাসহ এই ধরনের আর্থিক প্রতারণার সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা কিছু অ্যাপ ব্যবহার করে এই ফোনগুলো করে থাকে। এই সার্ভিসটাকে বলে ভিওআইপি।'

তিনি বলেন, 'যার কলটা আপনি রিসিভ করছেন, তিনি আসলে ভিওআইপি ব্যবহার করে অন্য কারো কলার আইডি ব্যবহার করে আপনাকে কল দিচ্ছে। এর মাঝে কয়েকটা ধাপ আছে। এই কলের ব্যাকএন্ডে গেলে কোন দেশ থেকে বা কোন অ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে সেটা জানা যায়।'

বিষয়টি নিয়ে আইটি বিশেষজ্ঞরা বলেন, 'ভয়েস ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে ভিওআইপি। এ প্রক্রিয়ায় ভয়েসকে ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তর করে সেটা ইন্টারনেট প্রটোকলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।'

আরো পড়ুন: দেশের ১৬ লাখেরও বেশি পরিবারের নেই নিজস্ব ঘরবাড়ি : বিবিএস জরিপ

তারা বলেন, 'বাংলাদেশে টেলিকম অপারেটর ও আইপি টেলিসেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তসংযোগের ক্ষেত্রে বিটিআরসি অনুমোদিত ইন্টার কমিউনিকেশন এক্সচেঞ্জ বা আইসিএক্স প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নেয়। যদি দেশের বাইরে থেকে কোনো ভয়েস আসে, সেটা পৌঁছে দিতে কাজ করে ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে বা আইজিডব্লিউ।'

অবৈধ ভিওআইপির মাধ্যমে কল এসেছে কি না সেটা বোঝার উপায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা গ্রাহকের পক্ষে বোঝা সম্ভব না।'

সুবর্ণার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে আইটি বিশেষজ্ঞরা বলেন, 'কোনো মোবাইল নম্বর ক্লোন করে সেটা থেকে কল করা এখন প্রায় অসম্ভব। তবে নম্বর মাস্কিং (যার মাধ্যমে দুই পক্ষ একে অপরের কাছে প্রকৃত ফোন নম্বর প্রকাশ না করে কথা বলতে পারে) করার মাধ্যমে হয়তো এটা হতে পারে।'

পুলিশ বলছে, আকর্ষণীয় বেতনে ঘরে বসে পার্টটাইম ও ফুলটাইম চাকরির প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ১০-১২ লাখ টাকাও হারিয়েছেন এই ধরনের অভিযোগ তারা নিয়মিত পেয়ে থাকেন।

চক্রগুলো সাধারণত প্রথমে অল্প পরিমাণ টাকা দিয়ে বিশ্বাস স্থাপন করে। তারা তাদের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে অতিরিক্ত সুদসহ অর্থ ফেরত দেবে, বড় অঙ্ক পাঠালে বেশি সুদ পাওয়া যাবে—এমন প্রলোভন দেখিয়ে তারা অর্থ হাতিয়ে নেয়।

এসি/  আই.কে.জে

চাকরি ইংরেজি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন