শনিবার, ৬ই ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে ঢাকায়, দাফন দিল্লিতে: সালাহউদ্দিন আহমদ *** ভারতকে ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে’ জ্বালানি তেল সরবরাহ করবে রাশিয়া: পুতিন *** আড়াই ঘন্টা বাইরে থেকে খাঁচায় ফিরল সিংহী ডেইজি *** ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হওয়ার কোনো কারণ দেখছেন না তিনি *** খালেদা জিয়ার জন্য জার্মানি থেকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পাঠাচ্ছে কাতার *** প্রধান উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা মাহফুজ আনামের *** প্রসাধনী শিল্পে ব্যবহৃত তেলের জন্য হাঙর শিকার, বিলুপ্তি ঠেকাতে বৈশ্বিক উদ্যোগ *** শেখ হাসিনাকে ফেরতের ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা *** ‘তারেক রহমান যাকে ইচ্ছা তাকে প্রধান উপদেষ্টা বানাতে পারতেন’ *** শারীরিক অবস্থা ঠিক থাকলে রোববার খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হবে

‘বইমেলা ভবিষ্যতেও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিসর অগ্রসর করবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৪:৩০ অপরাহ্ন, ২৮শে জানুয়ারী ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

সাখাওয়াত টিপু নব্বই দশকের অন্যতম কবি। তিনি প্রাবন্ধিক ও শিল্প-সমালোচক। কবি হয়েও তিনি প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর কাজ করেন কবিতায়, আবার প্রকৃত বুদ্ধিজীবী হয়েও কবির কাজ করেন। তার প্রথম কবিতার বই— ‘এলা হি বরষা’। এই পর্যন্ত বইটির চতুর্থ মুদ্রণ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি নিয়মিত লিখছেন দেশি-বিদেশি সাহিত্য পত্রিকায়। তার লেখা অনূদিত হয়েছে ইংরেজি, ইতালিয়ান, গ্রিক, স্লোভেনিয়ান, স্প্যানিশ, সার্বিয়ান ও চাইনিজসহ এশীয় কয়েকটি ভাষায়।

সাখাওয়াত টিপু ‘প্রতিধ্বনি’ সম্পাদনা করেন। আসন্ন অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে তিনি কথা বলেছেন সুখবর ডটকমের সঙ্গে। বইমেলাকে কেমন দেখতে চাচ্ছেন, বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমির কাছে তার প্রত্যাশা, সর্বাঙ্গীণ সুন্দর মেলার আয়োজনে পরামর্শ এবং নিজের প্রকাশিতব্য নতুন বইয়ের বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুখবরের বিশেষ প্রতিবেদক

সাখাওয়াত টিপু বলেন, ‘একুশের বইমেলা নিয়ে লেখক, পাঠক আর প্রকাশকের আবেগের শেষ নেই। এটি ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে বাংলাভাষার এক ঐতিহাসিক সাংস্কৃতায়ন ঘটিয়েছে। দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক পরিসরকে অগ্রসর করেছে। ভবিষ্যতেও অগ্রসর করবে। কিন্তু প্রকাশনা শিল্পের কথা বিবেচনা করলে ভিন্ন এক চেহারা দৃশ্যমান হয়। আয়োজক হিসেবে বাংলা একাডেমির কাজের এখতিয়ার নিয়ে কিছু প্রশ্ন থেকে যায়।’

তিনি বলেন, ‘বহুদিন ধরে বলে আসছি, বইমেলার আয়োজন করা বাংলা একাডেমির কাজ নয়। একাডেমির সুনির্দিষ্ট কাজের দায় আছে। আবারও বলছি, বাংলা একাডেমিকে বইমেলার দায় থেকে মুক্ত করা হোক। বই প্রকাশনাকে যদি আমরা শিল্প হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, বইয়ের উৎপাদক শ্রেণি তথা প্রকাশকদেরই এই মেলার দায়িত্ব নিতে হবে। বাংলা একাডেমির ঘাড়ের ওপর দিয়ে বইমেলা করে বাংলাদেশে কোনোদিনই প্রকাশনা শিল্প দাঁড়াতে পারবে না। অতীতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বইমেলার আয়োজনের দায়িত্ব প্রকাশকরা নিলে সবচেয়ে সুন্দর হবে। আমি দেখতে চাই, প্রকাশকরা নিজেরাই একুশের বইমেলার আয়োজন করছেন অদূর ভবিষ্যতে। তাতে প্রকাশকদের কাজের পরিসর ও দায়িত্ব একটু বাড়ে। শেষাবধি এটা লেখক ও প্রকাশক— সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে।’   

সাখাওয়াত টিপু বলেন, ‘একুশের বইমেলা আমাদের দেশে একটি প্রথাগত সংস্কৃতি। এটি ক্রমশ উৎসবে পরিণত হয়েছে। দেশের বইকে কেন্দ্র করে দুনিয়ার অন্য দেশে এমন প্রথাগত উৎসব বিরল। যে কোনো দেশের প্রথাগত সংস্কৃতির রূপ বদলানো খুব কঠিন বিষয়। বাংলাদেশেও সেটা ব্যতিক্রম নয়। তাই এবারের বইমেলা অতীতের মতোই হবে। কিছু বইয়ের স্টলের অদল-বদল হওয়া ছাড়া গুণগত পরিবর্তন আশা করা ভুল।’

তার মতে, ‘মেলার গুণগত পরিবর্তনের জন্য যেমন সৃষ্টিশীল নেতৃত্ব দরকার, সেটা বাংলা একাডেমিতে নেই। শামসুজ্জামান খান (বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক) আর মোহাম্মদ আজমের (বর্তমান মহাপরিচালক) মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই! ফলে প্রত্যাশা করাটাও এখানে অদরকারি বিষয়।’

সর্বাঙ্গীণ সুন্দর মেলার আয়োজনে কবি সাখাওয়াত টিপুর পরামর্শ- ‘কোনো দেশ যখন গণতান্ত্রিক হয়ে ওঠে, সেখানে সবকিছুই সুন্দরের দিকে যাত্রা করে। আমরা ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কাছে সুন্দর বইমেলার প্রত্যাশা করতে পারি। তবে বাংলাদেশ এখন বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। ফলে মেলার আয়োজকদের সবদিক থেকে সতর্ক থাকার প্রয়োজন। যাতে লেখক, পাঠক ও প্রকাশকরা যথাযথভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রথাগত বইমেলায় সামিল হতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকার বাইরে বইমেলার আয়োজন করাও বাংলা একাডেমির কাজ নয়। দেশে এটি জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের উদ্যোগে হয়ে থাকে সাধারণত। যেহেতু দেশের একাডেমিগুলো অতীতে দলীয়করণের কারণে অকার্যকর হয়ে গেছে, সেটাকে ভবিষ্যতে তার কার্যকর পথে ফিরিয়ে আনা কঠিন চ্যালেঞ্জের কাজ।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভালো বই একমাসের মেলার জন্য লেখা হয় না। লেখা হয় বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্যও। ফলে বইকে কেন্দ্র করে সারাদেশে নানা আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কাছে বেশি প্রত্যাশা করা সমীচীন হবে কী না জানি না, তবে এটুকু আশা করতে পারি, দেশের একাডেমিগুলো জাতীয় প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠুক। সবচেয়ে ভালো বিষয়- উদ্যোক্তারা নিজেরা নিজেদের বই নিয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করুক।’       

তিনি জানান, ‘বইমেলাকে কেন্দ্র করে আমি বই লিখি না। বছরের যে কোনো সময় আমি বই প্রকাশে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। সেভাবেই প্রকাশিত হয় আমার বই। সম্প্রতি নোবেল প্রাইজ ফাউন্ডেশন আমাদের প্রকাশনা প্রতিধ্বনিকে ১২টির মতো নোবেল বক্তৃতার বাংলা কপিরাইট দিয়েছে। লেখক, সমালোচক পলাশ মাহমুদ প্রতিধ্বনির সঙ্গে সেটা নিয়ে অনেকদিন ধরে কাজ করছেন। আমরা নির্বাচিত নোবেল বক্তৃতা শিরোনামের একটি বই প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

হা.শা/কেবি

অমর একুশে বইমেলা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250