রবিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নানা মত–ধর্ম–রীতির মধ্যেও আমরা এক পরিবারের সদস্য: প্রধান উপদেষ্টা

বিশেষ প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৩:৪৬ অপরাহ্ন, ১৩ই এপ্রিল ২০২৫

#

ফাইল ছবি (সংগৃহীত)

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বাংলাদেশে নানা মত-ধর্ম-রীতিনীতির মধ্যেও সবাই এক পরিবারের সদস্য।’ সেই সঙ্গে পহেলা বৈশাখকে এ সম্প্রীতির অন্যতম প্রতীক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আজ রোববার (১৩ই এপ্রিল) ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে ‘সম্প্রীতি ভবন’–এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি বরাবরই বলে এসেছি, নানা মত-ধর্ম-রীতিনীতির মধ্যেও আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। এ দেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠী—সব মিলিয়ে এ দেশের মানুষের বিচিত্র ভাষা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য।’

তিনি বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ আমাদের এ সম্প্রীতির অন্যতম প্রতীক। প্রত্যেকে নিজ নিজ উপায়ে, নিজেদের রীতি অনুযায়ী আগামীকাল (সোমবার) উদ্‌যাপন করবেন, সর্বজনীন এ উৎসবে অংশ নেবেন।’

অতি প্রাচীন সময় থেকেই এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল এখানকার বৌদ্ধ বিহারগুলো উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘এগুলো আমাদের ঐতিহ্য ও সভ্যতার নিদর্শন। পৃথিবীর দূর-দূরান্ত থেকে ভিক্ষু ও ছাত্ররা এ বিহারগুলোতে আসতেন। মহামানব বুদ্ধের শান্তি ও সম্প্রীতির বাণী বিশ্বে ছড়িয়ে দিতেন। শুধু ধর্মীয় আচার ও শিক্ষা নয়, সমাজে জনকল্যাণকর কর্মসূচিরও কেন্দ্র ছিল এ দেশের বৌদ্ধ বিহারগুলো।’

তিনি বলেন, ‘গৌতম বুদ্ধ বিশ্বমানবতার কল্যাণে সম্প্রীতি ও সাম্যের বাণী প্রচার করেন। বৌদ্ধধর্ম জীবজগতের সব প্রাণীর মঙ্গল কামনা করে। মহামানব বুদ্ধ বলেছেন, শান্তি, সুখ থেকে আমরা কাউকে বঞ্চিত করতে পারি না; এমনকি ক্ষুদ্র জীবকেও। এ দেশের বৌদ্ধ পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববরেণ্য একজন মহাপণ্ডিত। মহামানব বুদ্ধের বাণী তিনি বহন করে নিয়েছিলেন সেই মহাচীনের তিব্বতে। চীনে এখনো তাকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় শ্রদ্ধা জানানো হয়। বৌদ্ধধর্মের নিদর্শন, স্থাপনা, ঐতিহ্য ও পণ্ডিতগণ মানবসভ্যতার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অন্যতম নিদর্শন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।’

তিনি বলেন, ‘গৌতম বুদ্ধের অহিংসা ও সাম্যের বাণীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং কারিগরি শিক্ষাসহ বিভিন্ন জনকল্যাণকর কর্মসূচি পালন করে আসছে এ বৌদ্ধ বিহার। আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের সম্প্রীতি ভবন বাংলাদেশের সম্প্রীতি ও মানবতার ঐতিহ্য ধারণ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গৌরবময় ভূমিকা রাখবে- এ আমার প্রত্যাশা।’

এইচ.এস/

প্রধান উপদেষ্টা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন