ছবি: সংগৃহীত
দুই যুগ ধরে এক টাকায় ইফতারসামগ্রী বিক্রি করেন খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশার চা দোকানি ইকবাল। বাজারে সব কিছুর যখন চড়া মূল্য, ক্রেতারা যখন দিশাহারা, তখন এক টাকায় ইফতারসামগ্রী বিক্রি করে রীতিমতো সাড়া ফেলেছেন তিনি।
রমজান মাসে দুপুর হলেই ব্যস্ততা বেড়ে যায় ইকবালের ‘ইকবাল হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের'। সারাবছর চা বিক্রি করলেও রমজান এলেই এক টাকা করে ইফতারসামগ্রী বিক্রি করেন ক্রেতাদের কাছে। বেগুনি, আলুর চপ, পেঁয়াজু, মরিচের চপ যা-ই কিনবেন, প্রতিটির মূল্য নেওয়া হচ্ছে এক টাকা করে। রয়েছে ছোলাও। তবে সব কিছুই এক টাকা করে বিক্রি হলেও শুধু ভাজা ছোলা বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। ১২০ টাকা কেজিতে ছোলা বিক্রি করছেন ইকবাল।
গণমাধ্যমকে ইকবাল বলেন, শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতা ও সওয়াবের নিয়তে এই কাজ করি। তবে প্রথম বেশ কয়েক বছর তিনি একাই কাজটি করলেও শুরুর তিন থেকে চার বছর পর তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন স্থানীয় কিছু স্বেচ্ছাসেবী। নিজেরাই সেখানে শ্রম দিচ্ছেন। ক্রেতাসাধারণের মধ্যে ইফতারসামগ্রী নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বিক্রি করছেন।
মূল উদ্যোক্তা ইকবাল আরও বলেন, প্রায় ২৪ বছর ধরে তার সেখানে চায়ের দোকান। কিন্তু রমজানে দিনের বেলায় হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় তিনি এক মাস ইফতার তৈরি করে বিক্রির উদ্যোগ নেন।
এবারের রমজানের প্রথমদিন থেকেই ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। প্রতিদিন জোহরের নামাজের পরই ইফতার তৈরি শুরু করেন ইকবালসহ তার সহকর্মীরা। বিকেল ৪টা থেকেই শুরু হয় বিক্রি। আশপাশের ক্রেতাসাধারণ কিনে নিচ্ছেন এসব ইফতারসামগ্রী।
ইকবালকে ইফতার বিক্রিতে সহযোগিতা করছেন মো. পর্বত। তিনি জানান, প্রতিদিন ৭-৮ হাজার পিচ বেগুনি পেঁয়াজু তৈরি করা হয় এবং প্রতিদিনের ইফতার বিক্রিতে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকার মতো ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এগুলো ইকবালসহ তারা সবাই দিয়ে থাকেন। ফলে যারা চড়া দামের ইফতারি কিনতে সামর্থ্যবান নন, তারাও সুযোগ পাচ্ছেন ইফতার কেনার। কেননা, অন্য দোকান থেকে প্রতিদিন এক পরিবারের ইফতারি কিনতে ১৫০ টাকার ওপরে খরচ হয়। সেখানে ইকবালের দোকান থেকে মাত্র ৩০ টাকার মধ্যেই মিলছে ইফতার।
ওআ/এইচ.এস