ছবি: সংগৃহীত
‘খবরটি প্রথমে বার্তার মাধ্যমে পেয়েছিলাম। আমাকে বলা হয়েছিল, কাউকে যেন কিছু না জানাই। তখন আমার মুখে আনন্দের এক অগাধ হাসি ফুটে উঠেছিল। আমি পরিবারকে বলেছিলাম, দল ঘোষণার দিকে চোখ রাখতে। সত্যিই সেটা ছিল আমার জীবনের এক অনন্য, স্মরণীয় মুহূর্ত’—ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলে প্রথমবারের মতো ডাক পাওয়ার অভিজ্ঞতা এভাবেই জানিয়েছেন দিয়েদ স্পেন্স।
আগামী শনিবার (৬ই সেপ্টেম্বর) অ্যান্ডোরা এবং বুধবার সার্বিয়ার বিপক্ষে খেলবে ইংল্যান্ড। ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ দুটির জন্য স্পেন্সকে ডেকেছেন কোচ টমাস টুখেল। ম্যাচ দুটির একটিতে মাঠে নামলেই স্পেন্স হবেন ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের প্রথম মুসলিম খেলোয়াড়।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব টটেনহামের এই ফুলব্যাকের সঙ্গে টুখেলের আগে কখনো কথা হয়নি। তাই আচমকা জাতীয় দলে ডাক পাওয়ায় যেমন বিস্মিত হয়েছেন, তেমনি সম্মানিত বোধও করছেন।
তিনিই যে ইংল্যান্ড জাতীয় দলে ডাক পাওয়া প্রথম মুসলিম ফুটবলার, তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম থেকেই জেনেছেন স্পেন্স। এ বিষয়ে এফএ (ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন) ওয়েবসাইটকে তিনি বলেছেন, ‘আমি খবরটা দেখেছি। এটা আমার কাছে আশীর্বাদ, অসাধারণ ব্যাপার। প্রথমে শুনে অবাক হয়েছিলাম। কী বলব বুঝতে পারছিলাম না।’
প্রথম মুসলিম ফুটবলার হিসেবে চাপ অনুভব করছেন কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘হতে পারে, আবার নাও পারে। আসলে আমি তেমন চাপ নিই না। শুধু হাসিমুখে ফুটবল খেলি, খুশি থাকার চেষ্টা করি, বাকি আপনাআপনি হয়ে যায়।’
স্পেন্সের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ধর্মীয় বিশ্বাস, যা তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়ই তুলে ধরেন। ধর্ম নিয়ে আবারও বললেন, ‘প্রথম কথা হলো সৃষ্টিকর্তাই সর্বশ্রেষ্ঠ। আমি অনেক প্রার্থনা করি, সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। জীবনের সবচেয়ে কঠিন আর অন্ধকার সময়গুলোতেও আমি বিশ্বাস করেছি, সৃষ্টিকর্তা আমার পাশে আছেন। আর যখন আমি সফল হই, খুশির মুহূর্ত আসে, তখনো তাকে স্মরণ করি। তার প্রতি বিশ্বাসই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।’
দিয়েদ স্পেন্সের জন্ম ২০০০ সালের ৯ই আগস্ট লন্ডনে। তার বাবা জ্যামাইকান, মা কেনিয়ান। বাবার নাম সিমোন স্পেন্স, মায়ের নাম আয়শা। মায়ের ধর্মই তিনি গ্রহণ করেছেন। তার বড় বোন কার্লা-সিমোন স্পেন্স ব্রিটেনের বেশ পরিচিত অভিনয়শিল্পী। কার্লা-সিমোন অবশ্য নিজের মাকে কখনো কেনিয়ান হিসেবে পরিচয় দেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বাবা-মাকে ব্রিটিশ-জ্যামাইকান হিসেবে তুলে ধরেছেন।
যুব ফুটবলে দিয়েদ স্পেন্সের শুরুটা হয় ২০১৬ সালে, লন্ডনেরই ক্লাব ফুটবলকে দিয়ে। পেশাদার ফুটবলে তার অভিষেক ২০১৮ সালে, মিডলসবরোর হয়ে। ক্লাবটিতে চার বছর থাকলেও ২০২১-২২ মৌসুম ধারে খেলেছেন নটিংহাম ফরেস্টে। সেবারই নটিংহাম ২৩ বছর পর প্রিমিয়ার লিগে উঠে আসে। স্পেন্সের পারফরম্যান্সও অনেকের নজরে আসে।
খবরটি শেয়ার করুন