ছবি : সংগৃহীত
একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় হারিয়ে ফেলা ২ মেয়েকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে খুঁজে পেয়েছেন পাকিস্তানি এক মা।
শুক্রবার (৩রা মে) ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দীর্ঘ ৫৩ বছর পর মাকে জড়িয়ে ধরে আনন্দে কাঁদলেন ২ সন্তান। এমন দৃশ্যের সাক্ষী হওয়া সবার চোখই ছিল ছলচলে।
স্বজনরা জানান, পুরনো একটি পারিবারিক ছবির সূত্র ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে এই মা ও সন্তানদের মিলন হয়। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঘটে তাদের বিচ্ছেদের ঘটনা। বিচ্ছিন্ন হয়ে পাকিস্তানি মেয়ে মা চমনারা বেগম ফিরে যান নিজ দেশে। অপরদিকে স্ত্রীকে হারিয়ে ২ মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশি স্বামী এস এম মুসলিম আবারও নতুন করে জীবন শুরু করেন।
স্বজনরা জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্বামীসহ ছোট্ট ২ সন্তান উম্মে মুরসালিনা ও উম্মে তাসলিমাকে হারিয়ে ফেলেন মা চমনারা বেগম। পরে তিনি আশ্রয় নেন ভারতীয় শরণার্থী শিবিরে, সেখান থেকে পাড়ি জমান নিজ দেশ পাকিস্তানে। অন্যদিকে তার স্বামী এস এম মুসলিম মা হারা ২ মেয়েকে বাঁচিয়ে রাখতে শুরু করেন নতুন সংসার। বিয়ে হয় চমনারারও। এরই মধ্যে কেটে যায় অর্ধশত বছর।
আরো পড়ুন : অবশেষে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ হচ্ছে!
২০২২ সালে পারিবারিক একটি ছবির সূত্র ধরে খোঁজ মেলে মা ও সন্তানদের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিটি প্রকাশ করলে ছড়িয়ে পড়ে পাকিস্তানে। এগিয়ে আসেন মুরাদ নামের এক কনটেন্ট ক্রিয়েটর। তার প্রচারণা ও সহযোগিতার কারণেই আজকের সুখের ক্ষণ।
মাকে ফিরে পেয়ে খুব খুশি ২ মেয়ে। উম্মে মুরসালিনা বলেন, মা না থাকা জীবন যে কত কষ্টের তা আসলে বলে বোঝানোর না। কত চাওয়া-না পাওয়ার কথা কাউকে বলা যায় না।
অর্ধশতাব্দী পর ২ মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে চমনারা বেগমও উর্দুতে বলেন, ‘তোদের পেয়ে আমি খুব খুশি’।
এদিকে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশের নাগরিক এস এম মুসলিম কাজ করতেন পাকিস্তান এয়ারলাইন্সে। তখন চমনারা বেগমের সঙ্গে পরিচয় ও বিয়ে হয় তাদের। ২০০৯ সালে মারা যান এস এম মুসলিম।
এস/ আই.কে.জে/