ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে। সরকার যদি পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারে তাহলে যে কোনো সময় এক থেকে দেড় লক্ষ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করবে। ইতোমধ্যে বিগত কয়েকদিনে পনের হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ ক্যাও সোয়ে মোয়েকে ডেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব উদ্বেগ জানিয়েছেন। সীমান্তবর্তী এলাকায় সশস্ত্র সংঘাত নিয়ন্ত্রণ এবং রাখাইন থেকে বাংলাদেশে বেসামরিক নাগরিক ও সশস্ত্র ব্যক্তিদের প্রবেশ ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে চলমান যুদ্ধ তীব্রতর হচ্ছে। মংডু টাউনে থাকা সেনা ও বিজিপির দুটি ব্যারাক (ব্যাটালিয়ন) দখলের জন্য মরিয়া আরাকান আর্মি। গোলাগুলির পাশাপাশি দুই পক্ষ থেকে মর্টার শেল, গ্রেনেড-বোমা ছোঁড়া হচ্ছে। মংডুতে এখন যে তীব্র সংঘাত হচ্ছে, তাতে রোহিঙ্গারা আর সেখানে টিকতে পারছে না। তারা মিয়ানমারের সামরিক জান্তা এবং আরাকান আর্মি উভয়ের হামলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
আতঙ্কে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য মংডু সীমান্তে জড়ো হয়েছে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনীর কড়া নজরদারির মধ্যেও নানা কৌশলে তারা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে।
এ দেশের এক শ্রেণির দালাল তাদের টাকার বিনিময়ে ঢুকতে সহায়তা করছে। প্রতিদিনই রোহিঙ্গারা নানা কৌশলে বাংলাদেশে ঢুকছেন। নাফ নদীর পাশাপাশি অন্য সীমান্ত দিয়েও আসছে। তারা যে যেখানে পারছেন, সেখানে অবস্থান নিচ্ছে। যার কারণে ক্যাম্পের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে। প্রথমে তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে। এরপর যাদের ক্যাম্পে আগে আসা আত্মীয়-স্বজন আছে, তাদের মাধ্যমে ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছে।
আরো পড়ুন: সীমান্ত এলাকায় পূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে ফোন নম্বর দিলো বিজিবি
আগে থেকেই বাংলাদেশে ১৫-১৬ লক্ষ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। এমনিতেই ওইসব এলাকায় বাংলাদেশীরা সংখ্যালঘু হয়ে যাচ্ছে। নতুনভাবে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতিদিন নানা ধরনের সংকট তৈরি হচ্ছে। নানা ধরনের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আশ্রয় নিচ্ছে। তারা মাদক ও অস্ত্রের ব্যবসায় যাচ্ছে। যার কারণে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা দিন দিন আরো ভয়াবহ হচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধ এবং বাংলাদেশে অবস্থানরতদের প্রত্যাবর্তন করতে না পারলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা আরো জোরদার করতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান।
এসি/ আই.কে.জে/