শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গম চাষে ৪ গুণ বেশি ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:২১ অপরাহ্ন, ২৭শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

ভাতের পরই বাংলাদেশে যে খাদ্যটির চাহিদা বেশি সেটি হলো আটা বা ময়দা। আর আটা বা ময়দা আসে গম থেকে। দেশের মানুষের সকালের নাস্তার একটা বিরাট অংশজুড়ে থাকে গমের আটা বা ময়দার পরোটা। যদিও বাংলাদেশে গমের চাষ যতটা প্রসার লাভ করার কথা ছিল ততটা হয়নি, তবুও যে পরিমাণ জমিতে গমের চাষ হয় সেই জমিতে আধুনিক চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করলে গমের ফলন বেশি পাওয়া যেতে পারে।

খাদ্যের চাহিদা মেটাতে গম চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন মাটিরাঙ্গার কৃষকরা। মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসের আগ্রহে গত বছর থেকেই গম চাষ শুরু করা হয়। ফলন ভালো হওয়ায় এবার আরো বেশি জমিতে গম চাষে আগ্রহ হয় কৃষকদের। মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গমের লক্ষ্যমাত্রা ৩ হেক্টর জমি, অর্জিত হতে পারে ৭ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৪ গুণ বেশি।

গম থেকে যে আটা হয় তার প্রতি ১০০ গ্রাম আটায় আমিষ ১২.১ গ্রাম, শর্করা ৬৯.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৮ মিলিগ্রাম, লৌহ ১১.৫ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ২৯ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১ ০.৪৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২ ০.২৯ মিলিগ্রাম, আাঁশ ১.৯ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ২.৭ গ্রাম এবং জলীয় অংশ থাকে ১২.২ গ্রাম।

এদিকে কাঞ্চন-১, রোগ প্রতিরোধ ও ফলন বিবেচনায় বারি গম ৩২ ও ৩৩ নামে নতুন জাতের গমের ফলন হয় মাটিরাঙ্গায়। যেটি কাঙ্খিত ফলনের পাশাপাশি ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী হওয়ায় এই জাতটি মাটিরাঙ্গার কৃষকদের মাঝে বেশ সমাদৃত হয়েছে। তাছাড়া বারি গম ৩৩ গমের প্রথম ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জিংক সমৃদ্ধ জাত।

সরেজমিনে মাটিরাঙ্গার বাইল্যাছড়ি এলাকায় মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বসন্তের মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে গমের শীষ, রাস্তা ও নদীর ধারে বিধায় দূর থেকে দেখে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। সবুজে শ্যামলে যেন মিলেমিশে একাকার। নিজস্ব জমিতে এক পাশে ধান চাষ অপর পাশে খন্ড খন্ড জমিতে প্লট সিস্টেমে মো. নুরনবী, ৬০ শতক, মো. এনাম ৪০ শতক, মোনাফ মিয়া ৪০ শতক বাচ্চু মিয়া ৪০ শতক, আব্দুল মতিন ৪০ শতক জাকির হোসেন ৪০ শতক, আলম হোসেন ৪০ শতকসহ সর্বমোট ৩০০ শতক জমিতে গম উৎপাদন করেন।

বিঘা প্রতি ১৫ মণ গম উৎপাদনের আশা করে কৃষক নুরনবী বলেন, ভালো বীজ বপন করায় গম চাষ খুব ভালো হয়েছে। তাই আশা করছি, ফলন ভালো হবে। অপর কৃষক মোনাফ বলেন, গমের আবাদে পানি খরচ কম লাগে, মাটির প্রকারভেদে গম চাষে সাধারণত ২-৩টি সেচের প্রয়োজন হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূল বিধায় গমের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি।

আরো পড়ুন: ভালো দামে দারুণ খুশি কুড়িগ্রামের পেঁয়াজ চাষিরা

একই প্লটের কৃষক এনাম বলেন, গম চাষের প্রতি আমি তেমন আগ্রহী ছিলাম না। মাটিরাঙ্গা কৃষি অফিস কর্তৃক আমাকে গম চাষে উদ্বুদ্ধ করতে আমাকে জেলা থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ সার এবং সর্বদা পরামর্শ দিয়েছে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সবুজ আলী বলেন, মাটিরাঙ্গায় এবার বড় পরিসরে গম আবাদ করা হয়েছে। একই মাঠে ১ হেক্টর জমিতে গম আবাদ করা হয়েছে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। জমিতে গমের অবস্থা বিবেচনায় এবার ভালো ফলন হবে বলে মনে করছেন তিনি।

এসি/ আই. কে. জে/ 



কৃষক গম চাষ

খবরটি শেয়ার করুন