ইরানে আমেরিকার হামলায় ধ্বংসস্তূপের চিত্র। ছবি: রয়টার্সের
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আজ রোববার (২২শে জুন) যখন নিজ কার্যালয়ে বক্তব্য দেওয়ার উদ্দেশ্যে মঞ্চে দাঁড়ালেন, তখন দেশের জনগণের উদ্দেশে হিব্রু ভাষার পরিবর্তে তিনি ইংরেজিতে ভাষণ দেন। এ সময় তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করেন। খবর বিবিসির।
নেতানিয়াহু সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশে কথা বলেন এবং তার অনেক প্রশংসা করেন। কারণ, আমেরিকা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় বোমা হামলা চালিয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে নেতানিয়াহু তার আমেরিকান মিত্রদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, শুধু সামরিক হামলার মাধ্যমে এবং শুধু আমেরিকান অস্ত্র ব্যবহার করে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করা সম্ভব।
এদিকে ইরান কত দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে বা এ নিয়ে আদৌ কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না, সে বিষয়ে ইসরায়েলের মূল্যায়নকে সমর্থন করেনি ট্রাম্প প্রশাসনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। যদিও মাত্র ১০ দিন আগে শুরু হওয়া এ সংঘাতজুড়ে ইসরায়েল সরকার ও সেনাবাহিনী বারবার জোর দিয়ে বলেছে, তারা একাই ইরানের হুমকি মোকাবিলা করতে সক্ষম।
তবে এ বিষয়ে কেউ অজানা ছিল না যে, শুধু আমেরিকার কাছেই এমন ভয়ংকর অস্ত্র আছে, যা ইরানের সবচেয়ে সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলো, বিশেষ করে পর্বতের গভীরে স্থাপিত ফর্দো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ধ্বংস করতে পারে।
গতকাল শনিবার (২১শে জুন) রাতে ইরানের যেসব পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা ফেলা হয়েছে, সেগুলো সত্যিই যদি অচল হয়ে যায়, তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী তার যুদ্ধের মূল লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে বলে ঘোষণা দিতে পারবেন, যা এ সংঘাতকে হয়তো সমাপ্তির কাছাকাছি নিয়ে যাবে। অন্যদিকে ইরান বলছে, তারা স্থাপনাগুলো থেকে আগেই পারমাণবিক উপকরণ সরিয়ে ফেলেছে।
গতকাল শক্তিশালী আমেরিকান বি-২ বোমারু বিমান নিশ্চিতভাবেই যুদ্ধের গতি বদলে দিয়েছে। এখন যুদ্ধ আরও তীব্র হবে কি না, তা নির্ভর করছে ইরান ও তার মিত্রদের প্রতিক্রিয়ার ওপর।
গত সপ্তাহে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, আমেরিকা যুদ্ধে অংশ নিলে তাদের পাল্টা আঘাত করা হবে। খামেনি বলেন, ‘আমেরিকানদের জানা উচিত, আমেরিকার যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ নিঃসন্দেহে অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে আনবে।’
ইতিমধ্যে গতকাল ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতিরা হুমকি দিয়েছিল যে যুদ্ধ শুরু হলে তারা লোহিত সাগর দিয়ে যাতায়াত করা আমেরিকার জাহাজে হামলা চালাবে। এখন মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত আমেরিকান সেনা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও নাগরিকেরা সম্ভাব্য নিশানায় পরিণত হয়েছেন।
তবে ইরান অনেক উপায়েই আমিরকার হামলার জবাব দিতে পারে। যেমন- যুদ্ধজাহাজ বা তার উপসাগরীয় ঘাঁটিগুলোয় হামলা চালানো ও উপসাগর থেকে তেল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটিয়ে বিশ্বজুড়ে জ্বালানির দাম বাড়ানো।
আরএইচ/
ডোনাল্ড ট্রাম্প বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ ইরানে আমেরিকার হামলা
খবরটি শেয়ার করুন