আজ সোমবার কক্সবাজারে হোটেল বে-ওয়াচে আয়োজিত সংলাপে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। ছবি: পিআইডি
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কক্সবাজারে আয়োজিত অংশীজন সংলাপে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য জাতীয় ঐক্যের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য। তারা একযোগে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আজ সোমবার (২৫শে আগস্ট) কক্সবাজারে হোটেল বে-ওয়াচে আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এমন অভিমত তুলে ধরেন। খবর বাসসের।
সংলাপে অংশ নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ জানান, অতীতে বিএনপির সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সফল প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করেছিল। তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৭ সালে শেখ হাসিনার সরকারের ব্যর্থতায় সংকট আরও জটিল আকার ধারণ করে।
ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, এ ক্ষেত্রে মিয়ানমারের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সমাধান সম্ভব নয়। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার রোহিঙ্গাদের পাশে থাকা মানবিক ও ইসলামি দায়িত্ব হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নিপীড়িত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানো কোরআনের নির্দেশ। তাই রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায়বিচার ও পূর্ণ নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে হবে। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও দায়ীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, মানবিক সহায়তার পাশাপাশি রোহিঙ্গা তরুণদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের কর্মসূচি জরুরি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, রোহিঙ্গারা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তিনি বলেন, আরাকানে গণহত্যার জন্য দায়ীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এর চূড়ান্ত সমাধান হলো রোহিঙ্গাদের মর্যাদা, নিরাপত্তাসহ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো।
এবি পাটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি মানবিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি নেওয়া জরুরি।
এ ক্ষেত্রে সব দলের নেতারাই একমত হন যে রোহিঙ্গা সংকট শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং এটি একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। তাই বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া এ দীর্ঘস্থায়ী সংকটের সমাধান সম্ভব নয়।
অধিবেশনে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকনসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
সেশনটি পরিচালনা করেন পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম। এতে রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
খবরটি শেয়ার করুন