সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৮ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ২৯শে ডিসেম্বর লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া *** ২০শে জানুয়ারির মধ্যে সব পাঠ্যবই সরবরাহের নির্দেশ *** মুম্বাইয়ে অরিজিতের কনসার্টের টিকিটের মূল্য লাখ টাকা *** তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে রাহাত ফতেহ আলী খানের সৌজন্য সাক্ষাৎ *** সাধারণ মানুষ সংস্কার বোঝে না, তারা বোঝে যেন ভোট ঠিকভাবে দিতে পারে : ফখরুল *** বাংলাদেশকে আরও ৪০ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক *** নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চলবে : পরিবেশ উপদেষ্টা *** ‘মহাকালের পাতায় হাসান আরিফের কৃত্তি লেখা থাকবে’ *** দুদক চেয়ারম্যান নিজের সম্পদের হিসাব দিলেন *** ওয়েজ বোর্ড সিস্টেম বাতিল করে সাংবাদিকদের নূন্যতম বেতন চালু করা উচিত : শফিকুল আলম

শ্যামা পূজার উৎপত্তি ও মাহাত্ম্য

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৪:৪৩ অপরাহ্ন, ৩১শে অক্টোবর ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা ও দীপাবলি। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে শ্যামা বা কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের মাধ্যমে ভক্তের জীবনে কল্যাণের অঙ্গীকার নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করেন দেবী কালী বা শ্যামা। জগতের সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তিকে জাগ্রত করতেই ভক্তরা কালী পূজা করে থাকেন। তিনি শ্যামা, আদ্য মা, তারা মা, চামুন্ডি, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়াসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। 

মা কালী মহামায়া মা দুর্গার অন্য একটি রূপ। কালী একটি দানবীর রূপ। যিনি হত যোদ্ধা ও পশুদের আত্মা বহন করেন, যাঁর নাম কালরাত্রি বা কালী। নবদ্বীপের তান্ত্রিক কৃষ্ণানন্দ বাংলায় প্রথম কালীর মূর্তি বা প্রতিমা পূজার প্রচলন করেন। তার আগে বিভিন্ন উপাসকেরা তাম্রপটে বা খোদাই করে মা কালীর সাধনা করতেন।আজকে যে কালী পূজা প্রচলিত তা অষ্টাদশ শতাব্দীতে নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় শুরু করেন। তিনিই কালীপূজাকে জনপ্রিয় করে তোলেন। তারপর ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার বিভিন্ন ধনী জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায় কালীপূজার ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়।

সনাতনধর্মীয় শাস্ত্র অনুযায়ী, মা কালীর আবির্ভাব সম্পর্কে বলা হয়েছে, পুরাকালে শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামের দুই দৈত্য পৃথিবীজুড়ে ভয়ংকর ত্রাসের সৃষ্টি করেছিল। দেবতারাও এই দুই দৈত্যের কাছে যুদ্ধে আত্মসমর্পণ করে।তখন দেবরাজ ইন্দ্র দেবলোক ফিরে পাওয়ার জন্য আদ্যশক্তি মহামায়ার তপস্যা করেন, তখন দেবী সন্তুষ্ট হয়ে তাঁদের কাছে আবির্ভূত হন। সেই দেবীই হচ্ছেন কালী।

আরো পড়ুন : আজ শ্যামাপূজা ও শুভ দীপাবলি

মহালয়ার দিন পিতৃপক্ষ শেষ হয় এবং দেবী পক্ষের সুচনা হয়। পিতৃপক্ষের সময় বিদেহী আত্মারা জল গ্রহণের জন্য মর্ত্যে আসেন। তারপর থেকে অমাবস্যা তিথি পর্যন্ত তাঁরা মর্ত্যে বিচরণ করে পিতৃলোকে ফিরে যান। কিন্তু তাঁরা যেদিন ফিরে যান সেদিন থাকে অমাবস্যা অর্থাৎ অন্ধকার। এই অন্ধকার সময়ে পিতৃপুরুষদের যাতে ফিরে যেতে সমস্যা না হয়, সেজন্য অন্ধকার পথ আলোকিত রাখতে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা হয়। এটাকেই দীপাবলি বলা হয়।

পৌরাণিক কাহিনীতে কথিত আছে, অসুরদের হারানোর পর প্রবল বিজয়নৃত্য শুরু করেন মা কালী। অসুরের মুণ্ড দিয়ে তৈরি করেন কোমরবন্ধ ও গলার মালা। উন্মাদ নৃত্যে স্বর্গ প্রকম্পিত হয়ে উঠলে দেবতারা মহাদেবের স্মরণাপন্ন হন। তখন মহাদেব নিজেই ছুটলেন কালীর নৃত্য বন্ধ করতে। কিন্তু মহাদেবের আহ্বান শুনতে পেলেন না উন্মাদিনী কালী। উপায়ান্তর না দেখে মহাদেব এবার কালীর পায়ের তলায় নিজেকে ছুড়ে দেন।পায়ের নিচে স্বামীকে পড়ে থাকতে দেখে লজ্জিত হন কালী। লজ্জায় তিনি জিব কাটেন। পৌরাণিক এই কাহিনি অবলম্বনে পূজিত হয়ে আসছেন মা কালী। তাই কালী রূপ মানেই তাঁর নগ্ন রূপ আর অসুরদের ধরহীন মুণ্ডর কোমরবন্ধনী ও মালার সঙ্গে সঙ্গে পায়ের তলায় পতি শিব।

মা কালী ত্রিনয়না, তাঁর তিন নয়ন বা চোখ। এই ত্রিনয়ন চন্দ্র, সূর্য ও অগ্নির মতো অন্ধকার বিনাশকারী।ত্রিনয়নের মাধ্যমে দেবী যেমন অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দর্শন করেন, ঠিক তেমনি সত্য, শিব ও সুন্দরকে প্রত্যক্ষ করেন। 

কালী বা কালিকা হচ্ছেন শক্তির দেবী। শিবের অপর নাম কাল, যা অনন্ত সময়কাল বোধক। কালী হচ্ছে কাল-এর স্ত্রীলিঙ্গ বোধক। মা কালী দুর্গা বা পার্বতীর সংহারী রূপ। শাস্ত্রে বলা হয়েছে, কাল শিবহ্। তস্য পত্নতি কালী।  অর্থ্যাৎ শিবই কাল বা কালবোধক। তাঁর পত্নী কালী। তিনি হচ্ছেন মা দুর্গার অপর ভয়াল রুপ। তিনি শক্তি, সংহার ও পরিবর্তনের দেবী।

এস/ আই.কে.জে/

শ্যামা পূজা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন