রবিবার, ২রা নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** জাকির নায়েকের সম্ভাব্য সফর নিয়ে দিল্লির বক্তব্যের জবাব দিলো ঢাকা *** প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানদের সাক্ষাৎ, নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা *** বঙ্গভবন থেকে মুজিবের ছবি নামানো ‘অন্যায়’ হয়েছে: সেলিম *** ভারতের ভেঙ্কটেশ্বর মন্দির যে কারণে আজ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনামে *** আমরা মদিনার ইসলামের চর্চা করি, মওদুদীর ইসলামের অনুসারী নই: সালাহউদ্দিন *** নাজমুল শান্তই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক *** ২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭ শতাংশ কমতে পারে, বাংলাদেশে কী হবে *** গোল্ডেন বুট হাতে এমবাপ্পে বললেন, রিয়ালে আরও বহু বছর থাকতে চাই *** ‘দুই দিনের মধ্যে’ এশিয়া কাপের ট্রফি চায় ভারত, না হলে... *** লজ্জায় স্কুলে যেতে চায় না ইমরান হাশমির ছেলে, যা বললেন অভিনেতা

চুম্বন বিতর্ক থেকে পালিয়ে বিয়ে, আলোচিত সেই অভিনেত্রীর জন্মদিন আজ

বিনোদন ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:০১ অপরাহ্ন, ১লা নভেম্বর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

মাত্র ৭ বছর বয়সে অভিষেক, ১৫ বছর বয়সে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার; তাকে হিন্দি সিনেমার আগামীর তারকা ভেবেছিলেন অনেকেই। পরে অনেক সিনেমা করেছেন, যেগুলোর বেশ কয়েকটি হিটও হয়েছে; কিন্তু বলিউডের শীর্ষ তারকা হতে পারেননি তিনি। ক্যারিয়ারজুড়েই নানা বিতর্ক। এই অভিনেত্রী আর কেউ নন, পদ্মিনী কোলহাপুরী। আজ ১লা নভেম্বর অভিনেত্রীর জন্মদিন, ৬০ বছরে পা দিলেন তিনি। জন্মদিন উপলক্ষে আলো ফেলা যাক তার জীবন ও ক্যারিয়ারে। ইন্ডিয়াডটকম, ইন্ডিয় টুডে অবলম্বনে। 

জন্ম ও শুরুর গল্প

১৯৬৫ সালের ১লা নভেম্বর মুম্বাইয়ে জন্ম পদ্মিনীর। ১৯৭২ সালে ‘জিন্দেগি’ সিনেমা দিয়ে শিশুশিল্পী হিসেবে ৭ বছর বয়সে চলচ্চিত্রে অভিষেক। মাত্র ১৫ বছর বয়সে ‘ইনসাফ কা তারাজু’ সিনেমায় অভিনয় করে পার্শ্ব চরিত্রে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। এটা ১৯৮০ সালের ঘটনা। তিন বছর পরেই ঋষি কাপুরের সঙ্গে করেন ‘প্রেম রোগ’, সিনেমাটির জন্য ফিল্মফেয়ারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন।

প্রেমে পড়া, পরিবার ছেড়ে পালিয়ে বিয়ে

২১ বছর বয়সে পদ্মিনী খবরের শিরোনামে আসেন অন্য কারণে। পরিবারের আপত্তি উপেক্ষা করে প্রযোজক প্রদীপ শর্মার সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করেন। ১৯৮৬ সালে তারা বিয়ে করেন, তবে সেই বিয়ের গল্প সিনেমার চিত্রনাট্যের মতোই নাটকীয়। পরিবারের প্রবল আপত্তি, সমাজের বাধা, আর শেষ পর্যন্ত এক রোমাঞ্চকর পালিয়ে বিয়ে—সব মিলিয়ে একদম বলিউডি প্লট। পদ্মিনী কোলহাপুরী তখন বলিউডের উদীয়মান নায়িকা, আর প্রদীপ শর্মা ছিলেন তার ছবির প্রযোজক। ১৯৮৬ সালের ‘আইসা প্যার কহাঁ’ ছবির শুটিং চলাকালীনই তাদের মধ্যে জন্ম নেয় ভালোবাসা। শুরুর দিকে দুজনেই সম্পর্কটি আড়াল রাখার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাদের মধ্যে যে বোঝাপড়া তৈরি হয়েছিল, তা সেটে থাকা সবার চোখেই পড়ে যায়।

তবে প্রেমের খবর ঘরে পৌঁছাতেই শুরু হয় বিপত্তি। পদ্মিনীর পরিবার ছিল রক্ষণশীল মহারাষ্ট্রীয় ব্রাহ্মণ বংশের, আর প্রদীপ রাজস্থানের বাসিন্দা। সম্প্রদায়গত পার্থক্যের কারণে পরিবারের প্রবল আপত্তি ছিল এই সম্পর্কের বিরুদ্ধে।

তবে ভালোবাসা থেমে থাকেনি। তখন পদ্মিনীর পাশে দাঁড়ান বোন শিবাঙ্গী কাপুর ও দুলাভাই শক্তি কাপুর। সেই সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু অভিনেত্রী পুনম ঢিলোঁনও এগিয়ে আসেন। পরে পালিয়ে বিয়ে করেন দুজন।

পদ্মিনীর হঠাৎ নিখোঁজ হওয়া ও বিয়ের খবর ছড়িয়ে পড়তেই বলিউডে শুরু হয় তুমুল আলোড়ন। ‘আইসা প্যার কহাঁর’ শুটিং বন্ধ রাখতে হয়েছিল কয়েক দিন। পরে তার দৃশ্যগুলো আবার নতুন করে শুট করা হয়।

তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। অনেক আলোচনার পর পরিবারও মেনে নেয়। চার দশকেরও বেশি সময় পার করে তারা আজও একসঙ্গে আছেন। তাদের একমাত্র পুত্র প্রিয়াঙ্ক শর্মাও অভিনয় ও প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত।

রাজকীয় অতিথিকে চমকে দেওয়া ‘চুমু’ বিতর্ক

১৯৮০ সালে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স চার্লস ভারত সফরে এসেছিলেন। সেই সফরেই ঘটে যায় এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত—তরুণী পদ্মিনী কোলহাপুরী হঠাৎ প্রিন্স চার্লসের গালে চুমু খান!

এই ঘটনা তৎকালীন মিডিয়ায় তীব্র আলোচনার জন্ম দেয়। কেউ বলেছিল এটি সাহসিকতা, কেউ বলেছিল বেপরোয়া আচরণ। তবে এতে এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায়,পদ্মিনী ছিলেন নির্ভীক, আত্মবিশ্বাসী ও স্বাধীনচেতা একজন নারী, যিনি সামাজিক প্রথার ভয় করতেন না।

ঋষি কাপুরকে ৮ বার থাপ্পড়!

‘প্রেম রোগ’ ছবির শুটিংয়ের সময় রাজ কাপুর দৃশ্যের বাস্তবতা ধরে রাখার জন্য চেয়েছিলেন আসল থাপ্পড়। ফলে পদ্মিনীকে সহ-অভিনেতা ঋষি কাপুরকে সত্যিই চড় মারতে হয়।

এক সাক্ষাৎকারে পদ্মিনী বলেন, ‘শট নিতে গিয়ে বারবার টেক নষ্ট হচ্ছিল। আলো, ক্যামেরা—সব গন্ডগোল। ঋষিজি বললেন, “কোনো সমস্যা নেই, চালিয়ে যাও।” তারপর আমি তাঁকে সাত-আটবার চড় মেরে ফেললাম!’

ঋষি তখন হেসেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন ঘটনাটি। পরে ১৯৮৫ সালে ‘রাহি বদল গয়ে’ ছবিতে একই রকম একটি দৃশ্যে তিনি নিজেই টেকটি একবারেই শেষ করেন।

রাজ কাপুরকে ‘না’

‘সত্য শিবম সুন্দরমে’ ছোট রূপার চরিত্রে অভিনয়ের পর থেকেই পদ্মিনীর ক্যারিয়ার উড়ে যায়। এরপর রাজ কাপুরের ‘প্রেম রোগে’ অভিনয় তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয়।

কিন্তু আশির দশকের মাঝামাঝি রাজ কাপুর তাকে অফার দেন তার নতুন ছবি ‘রাম তেরি গঙ্গা মৈলি’র জন্য। পদ্মিনী ছবিটি না করেন।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সব ছবি করা যায় না। রাজজি জানতেন আমার কিছু দ্বিধা ছিল। আমি স্ক্রিনে চুমুর দৃশ্য করতে স্বচ্ছন্দ ছিলাম না।’

পরবর্তী সময় সেই চরিত্রটি পান মন্দাকিনী ও ছবিটি হয়ে ওঠে ব্লকবাস্টার। যদিও পদ্মিনীর কোনো আক্ষেপ নেই—‘মন্দাকিনী দারুণ কাজ করেছে, গানগুলোও সুন্দর ছিল,’ বলেন তিনি।

‘রাম তেরি গঙ্গা মৈলি’ মুক্তি পায় ১৯৮৫ সালে।

আগের মতো পদ্মিনী আর অভিনয়ে নিয়মিত নন। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে সংগীতশিল্পী হিসেবেও পরিচিত ছিলেন তিনি। পরের দিকে গান বা অভিনয়; কোনোটাই আর নিয়মিত চালিয়ে যাননি। তবে এখনো সিনেমা বা টিভি সিরিয়ালে অভিনয় করেন।

পদ্মিনী জানান, তিনি এখন নিজের মতো করে থাকতেই ভালোবাসেন। অভিনয় আর খুব একটা টানে না। দুই–একটা প্রস্তাব পছন্দ হলেও শুধু অভিনয় করেন। ‘আগের মতো আর শুটিংয়ের ঝক্কি সামলাতে ইচ্ছা করে না। তারপরও অনেকে অনুরোধ করেন, তখন আর না বলতে পারি না,’ বলেন তিনি।

জে.এস/

পদ্মিনী কোলহাপুরী

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250