সোমবার, ১লা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে সফলভাবে সম্পন্ন হলো ট্রান্স-জুগুলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোরটো-সিস্টেমিক শান্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১১:১২ অপরাহ্ন, ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪

#

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা ডিভিশন প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের নেতৃত্বে ৪ঠা ফেব্রুয়ারি একদল ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজিষ্ট সফলভাবে একজন লিভার সিরোসিস রোগীর ট্রান্স-জুগুলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোরটো-সিস্টেমিক শান্ট (টিপস) সম্পাদন করেছেন। এই নিয়ে এই টিম দেশে দ্বিতীয়বারের মত সফলভাবে টিপস করলেন। রোববার যে রোগীকে টিপস করা হয়, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ লিভার সিরোসিস রোগে ভুগছেন। লিভার সিরোসিসের কারণে তার ঘন ঘন পেটে পানি আসছিল যা প্রচলিত কোন চিকিৎসাতেই কমানো যাচ্ছিল না। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় রিফ্যাক্টরী এ্যাসাইটিস। পাশাপাশি রোগীর গলায় শিরা ছিড়ে গিয়ে কয়েকদফা রক্ত বমি বা ভ্যারিসিয়াল ব্লিডিংও হয়েছিল। ইতিপূর্বে গত ডিসেম্বরে একই টিম একজন বাড চিয়ারী সিনড্রমে আক্রান্ত রোগীর উপর প্রথমবারেরমত সফলভাবে টিপস সম্পাদন করেন। এক মাসের ব্যবধানে সেই রোগীর সন্তোষজনক উন্নতির পরিপ্রেক্ষিতে এখন থেকে নিয়মিতভাবে তারা টিপস করবেন বলে জানান অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় বাইশ হাজার মানুষ লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, যাদের অধিকাংশই পেটে অনিয়ন্ত্রিতভাবে পানি চলে আসা কিংবা বারবার রক্ত বমির কারণে খারাপ হয়ে যান। এ ধরনের রোগীদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর চিকিৎসাটি হচ্ছে টিপস যা ক্যাথল্যাবে করতে হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যান্ত দুরূহ বলে পৃথিবীতে খুব কম দেশেই হাতে গোনা কিছু সেন্টারে টিপস করা হয়। প্রতিবেশি ভারতেও টিপস করার মত সেন্টারের সংখ্যা হাতে গোনাই। ইতিপূর্বে বাংলাদেশে টিপস করার কোন সুযোগ ছিল না। অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল ও তার টিমের সদ্যসরা এদেশে স্থানীয়ভাবে প্রথমবারেরমত টিপস শুরু করলেন।

বেসরকারী খাতের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনে এই সকল চিকিৎসা সফলভাবে, নিয়মিত করা হচ্ছে এবং এর ফলে সাধারণ মানুষও দেশে বসে, সুলভে এ ধরনের আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণ করে সুস্থ হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। পাশাপাশি ঢাকার বাইরেও এ ধরনের চিকিৎসা সুবিধা উপলব্ধ করার জন্য অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল এবং তার টিমের সদস্যরা কাজ করছেন। এরই মধ্যে সিলেট, রাজশাহী ও কুমিল্লায় সফলভাবে টেইস, স্টেম সেল থেরাপী ও প্লাজমা এক্সচেঞ্জ করা সম্ভবও হয়েছে।

অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীলের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি টিমের অন্যান্য সদস্যরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আব্দুর রহিম ও ডা. শেখ মোহাম্মদ নূর-ই-আলম ডিউ এবং একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. দুলাল চন্দ্র দাস, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ, গাজীপুরের লিভার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ আশরাফুল আলম, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিভার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফয়েজ আহমেদ খন্দকার ও একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রোকসানা বেগম, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের লিভার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আহমেদ লুৎফুল মুবিন, শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্টোলিভার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. আতিকুল ইসলাম এবং শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারীর এ্যানেসথেসিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ইকরামুল হক সজল।

আই.কে.জে/

সফলভাবে সম্পন্ন

খবরটি শেয়ার করুন