ছবি - সংগৃহীত
পৃথিবীর মানুষকে ভ্রমণ করাতে চান মঙ্গল গ্রহে, গড়ে তুলবেন মহাকাশে রেলপথ থেকে শুরু করে পাঁচতারকা হোটেল। এমনকি সেখানে নির্মাণ করবেন সিনেমাও। এ সবই তার ভবিষ্যতের পরিকল্পনার ছোট্ট কিছু অংশ। সিনেমার কল্পজগতকেও যেন বাস্তবে রূপ দিতে চান তিনি। তার মস্তিষ্কে সর্বদাই ঘুরপাক খায় নতুন নতুন স্বপ্নের ঝড়। হ্যাঁ, বলছি স্পেস এক্স ও টেসলার প্রতিষ্ঠাতা, বিশ্বখ্যাত উদ্ভাবক ইলন মাস্কের কথা।
ইলন মাস্ক শুধু অবাস্তব কিছু করে দেখান না, বরং তার থেকেও বড় স্বপ্নও দেখান। অবাস্তবকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার ক্ষমতা রাখা এই মানুষটি কেবল কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ নন, তিনি পৃথিবীকে নতুন চোখে দেখতে শিখিয়েছেন। কিন্তু পৃথিবীর শীর্ষ ধনীদের তালিকায় থাকা এই মানুষটি থাকেন কোথায়?
হ্যাঁ, ইলন মাস্কের বাড়ি কোনো রাজপ্রাসাদ নয়। বরং, তিনি বেছে নিয়েছেন টেক্সাসের বোকাচিকায় ৩৭৫ বর্গফুটের ছোট্ট একটি বাড়ি। দাম? মাত্র পঞ্চাশ হাজার ডলার! মাত্র দুটি রুম নিয়ে সাজানো এই বাড়িতেই কাটে তার দিন। আর এখানেই কেন বেছে নিয়েছেন এমন জীবনযাপন? আসুন, জেনে নেওয়া যাক, মাস্কের জীবনের এই সাদামাটা অধ্যায়ের গল্প।
ইলন মাস্কের এই বাড়িটি অবস্থিত বোকাচিকা নামক এক ছোট্ট এলাকায়, যা মেক্সিকো উপসাগরের কাছেই। এখানে রয়েছে স্পেস এক্স-এর স্টারশিপ উৎক্ষেপণ সাইট। বোকাচিকার এই ফ্ল্যাটটি ছোট হলেও অত্যাধুনিক সব আসবাবপত্রে সুসজ্জিত। মাস্ক নিজেই জানিয়েছেন, বোকাচিকাতে থাকার প্রধান কারণ হলো এটি স্পেসএক্স-এর গুরুত্বপূর্ণ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র, যেখানে তাদের মহাকাশ অভিযানের স্বপ্ন বাস্তব রূপ পায়।
ইলন মাস্ক ২০২০ সালে ঘোষণা করেন, তিনি সাদামাটা জীবনযাপন করবেন। এরপর তিনি নিজের পাঁচটি বাড়ির বিজ্ঞাপন দেন এবং ২০২১ সালে নিজের শেষ বাড়িটিও বিক্রি করেন তিন কোটি ডলারে।
একসময় যিনি সম্পদের মোহে পড়েছিলেন, তিনি এখন জীবনের অন্য মানে খুঁজছেন। মাস্কের কাছে ধনসম্পদ যেন শুধুই এক মাধ্যম, বিলাসিতা নয়। তিনি জীবনের রূপকথাকে ভিন্ন চোখে দেখতে চেয়েছেন, যেখানে অনাবিল শান্তি খুঁজে পান সাদামাটার মধ্যেই।
ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত জীবনেও রয়েছে নানা চড়াই-উৎরাই। ইলন নিজেই বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তার বাবা মাস্ককে কঠিন ও নিয়ন্ত্রণপ্রবণ মানুষ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ছোটবেলায় বাবার কঠোর আচরণ তার জন্য ছিল মানসিক চ্যালেঞ্জিং। এমনকি তিনি বাবার সাথে সম্পর্ককে বিষাক্ত হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।
বলা হয়ে থাকে ইলন মাস্ক এমনই একজন ব্যক্তি, যিনি কেবল স্বপ্ন দেখেন না, সেই স্বপ্নকে বাস্তবেও রূপ দিতে পারেন। তিনি চেয়েছেন সবার চোখে নতুন করে পৃথিবী ও মহাকাশকে দেখাতে। তার জীবনযাত্রার গল্প যেন বলে দেয়, সাদামাটার মধ্যেও লুকিয়ে থাকে অনন্ত সম্ভাবনা।
আই.কে.জে/