ছবি: সংগৃহীত
অধ্যাপক ফেই-ফেই লি সাধারণ কোনো নারী নন। তার পড়াশোনার যোগ্যতা অসাধারণ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে অধ্যাপক। এক বছর আগে ‘ওয়ার্ল্ড ল্যাবস’ নামের একটি এআই স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের সূচনা করেন তিনি, যার অর্থমূল্য ইতিমধ্যে ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
‘এআই গডমাদার’ হিসেবে পরিচিত লি সম্প্রতি কুইন এলিজাবেথ প্রাইজ ফর ইঞ্জিনিয়ারিং সম্মাননা অর্জন করেছেন। এআই খাতে বিশেষ অবদানের জন্য যে সাত ব্যক্তি এই সম্মাননা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে তিনি সম্ভবত একমাত্র নারী। তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
ড. হিন্টন, অধ্যাপক বেনজিও এবং ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার সাবেক প্রধান এআই বিজ্ঞানী ইয়ান লেকানকে ‘এআই গডফাদার’ বলা হয়। কিন্তু নারীদের মধ্যে একমাত্র লি–ইকে ‘এআই গডমাদার’ বলা হয়। কর্মজীবনের এই পর্যায়ে পৌঁছাতে তাকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে।
লি–এর জন্ম চীনে। ১৫ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। স্ট্যানফোর্ডের এই অধ্যাপক একটি সাধারণ পরিবারেই বেড়ে উঠেছেন। কিশোর বয়সে তিনি নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের পারসিপ্যানি শহরে মা-বাবাকে ড্রাই-ক্লিনিং ব্যবসা পরিচালনায় সহায়তা করতেন। স্নাতকে পড়ার মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সাত বছর তিনি এই দোকান কাজ করেন। তখন তার বয়স ছিল ১৮ বছর।
ব্লুমবার্গকে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে লি বলেন, ‘আমরা আর্থিকভাবে মোটেই সচ্ছল ছিলাম না। আমার মা-বাবা ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন। আমি চায়নিজ রেস্টুরেন্টে কাজ করতাম। বেঁচে থাকার জন্য সামান্য আয়রোজগার করতে আমার পরিবার ও আমি একটি ছোট ড্রাই ক্লিনারের দোকান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
লি স্নাতকে পড়াশোনা করেছেন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যালটেকে পিএইচডি করেন। তিনি গুগলেও কাজ করেছেন। সেখানে তিনি ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত গুগল ক্লাউডের প্রধান এআই কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সেই বছর বিতর্কিত ‘প্রজেক্ট ম্যাভেন’–সংক্রান্ত ই–মেইল ফাঁসের ঘটনায় লি পদত্যাগ করেন। বর্তমানে তিনি স্ট্যানফোর্ডের হিউম্যান-সেন্টার্ড এআই ইনস্টিটিউটের সহপরিচালক। মানবকল্যাণের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) গবেষণা, শিক্ষা, নীতি ও অনুশীলন উন্নত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে। একই সঙ্গে তিনি ওয়ার্ল্ড ল্যাবসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)।
২০০৬ সালে শুরু করা ‘ইমেজনেট’ প্রকল্পের মধ্য দিয়ে লি ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করেন। প্রকল্পটি কোটি কোটি ডিজিটাল ছবিকে শ্রেণিবদ্ধ করেছিল এবং আধুনিক এআই ভিশন ব্যবস্থার প্রশিক্ষণের পটভূমি তৈরি করেছিল।
ইমেজনেট প্রকল্পের মধ্য দিয়েই মূলত সারা বিশ্বে ‘ডিপ লার্নিং’ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ডিপ লার্নিং এআইয়ের একটি শাখা, যা নিউরাল নেটওয়ার্কের বহুস্তরযুক্ত মডেল ব্যবহার করে ডেটা থেকে জটিল নকশা বা ছক (প্যাটার্ন) শেখে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন