ছবি: সংগৃহীত
‘ইটস কামিং হোম’—বেশ স্বস্তি নিয়েই বললেন জামাল ভূঁইয়া। শুধু জামাল নয়, সব ফুটবলারের মধ্যে তখন ঘরে ফেরার উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ছিল। দেশের বাইরে কোথাও গেলে ফেরার একটা তাড়না মনের কোনায় থেকে যায় সব সময়ই। জামালদের এবারের ফেরাটা অবশ্য অন্য রকম। গত তিন দিনের অধীর অপেক্ষার পর অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ই সেপ্টেম্বর) দেশের মাটি ছুঁয়ে দেখেছেন তারা।
বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে করে নেপাল থেকে বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে ঢাকায় আসে খেলোয়াড়, কোচ, স্টাফদের ৩৮ জনের বহর। একই ফ্লাইটে ফেরানো হয় ম্যাচ কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদেরও। কাঠমান্ডুর ক্রাউন ইম্পিরিয়াল হোটেল থেকে সকালেই বিমানবন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশ দল। ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে অপেক্ষা করতে থাকে বিশেষ ফ্লাইটের।
কুর্মিটোলার এ কে খন্দকার সামরিক ঘাঁটিতে বিমান অবতরণের পরই উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন ফুটবলাররা। অথচ কয়েক ঘণ্টা আগেও তাদের মুখে ছিল বিমর্ষ ছাপ। ফেরার দিনক্ষণ নিশ্চিত হওয়ার পরও যেন কোনোভাবেই কাটছিল না মানসিক ধাক্কা। নেপালে গিয়ে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে, সেটা হয়তো কল্পনাও করতে পারেননি তারা।
মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে বাফুফে। সামরিক ঘাঁটিতে ব্রিফিংয়ে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘চিকিৎসা পদ্ধতি অনুযায়ী, এমন পরিস্থিতির পর মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা দেওয়া দরকার। যাদের প্রয়োজন হবে, তারা অবশ্যই এই সহায়তা পাবে। আবার যাদের দরকার নেই, তাদের ক্ষেত্রেও আমরা মূল্যায়ন করব—সামগ্রিকভাবে মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য।’
শারীরিক আঘাতের শঙ্কার বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বাফুফে সভাপতি, ‘এ ধরনের ট্রমার সময় অনেক ক্ষেত্রে শারীরিক আঘাতও থেকে যেতে পারে, যা প্রাথমিক ধাক্কার কারণে সহজে ধরা পড়ে না। শারীরিক আঘাতের বিষয়েও আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। বাংলাদেশ আর্মড ফোর্স সব ধরনের সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত ছিল এবং রয়েছে।’
দুঃসময় পেছনে ফেলে এবার মাঠে ফেরার পালা। ঘাঁটিতে নেমে অনেকেরই গন্তব্য ছিল নিজ নিজ ক্লাবে। কারণ, ১৯শে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ঘরোয়া ফুটবলের নতুন মৌসুম। চ্যালেঞ্জ কাপে সেদিন বসুন্ধরা কিংসের মুখোমুখি হবে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ২৬শে সেপ্টেম্বর শুরু হওয়ার কথা রয়েছে প্রিমিয়ার লিগ।
তাই আর কিছুদিন বাদেই মাঠে ফিরবেন জামাল-তপুরা। কিন্তু নেপালের সেই দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা মনে দাগ কেটে রইবে আজীবন!
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন