সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আরশিনগর ঢাকা’র নতুন মঞ্চনাটক ‘সিদ্ধার্থ’ আসছে আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৩:২১ অপরাহ্ন, ৯ই আগস্ট ২০২৩

#

সিদ্ধার্থ সুপুরুষ। সবল, সুদর্শন, সুকুমার কান্তি। সে যখন নগরপথে হাঁটে— তখন তার উন্নত ললাট, রাজোচিত চোখ আর একহারা গঠন দেখে ব্রাহ্মণ কুমারীদের হৃদয়ে প্রেমের ঢেউ জাগে। সিদ্ধার্থের ধীশক্তি ও জ্ঞানতৃষ্ণা দেখে পিতার মন আনন্দে ভরে ওঠে। কী সুন্দর ভঙ্গিতে সে তার মাকে প্রণাম করে। সে যখন ধ্যান করে তখন মনে হয়, এক আশ্চর্য আলোর আভা তাকে ঘিরে রেখেছে।

আজ (৯ আগস্ট বুধবার) সে আসছে। ‘আরশিনগর ঢাকা’র প্রযোজনা ‘সিদ্ধার্থ’। উপন্যাস : হেরমান হেসে। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা : রেজা আরিফ।

শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে। প্রদর্শনী চলবে : ৯ আগস্ট, সন্ধ্যা ৭.৩০, ১০ আগস্ট, সন্ধ্যা ৭.৩০, ১১ আগস্ট, বিকাল ৪.০০, ১১ আগস্ট, সন্ধ্যা ৭.৩০, 

টিকেট লিংক:

প্রয়োজনে— ০১৬১৬২১৪৪৪০  নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে। অগ্রিম ও গুচ্ছ টিকেটে রয়েছে বিশেষ ছাড়।


আরশিনগর

২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর একাডেমিক থিয়েটার এর অঙ্গন থেকে আসা একদল তরুণ সৃজনের আনন্দ নিয়ে শুরু করেছিলো একটি নাট্যদল। নটবাউলাদের সেই দলের নাম- আরশিনগর। ক্রমে সেখানে যুক্ত হয়েছে অনেক স্বপ্নসাথী। পত্র-পল্লবে কুসুমিত হয়েছে তারা দৃশ্যকাব্য পিপাসুদের মাঝে বাংলা নাটকের চিরায়ত রূপ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে। 

এর আগে তিনটি প্রযোজনা মঞ্চে এনেছে আরশিনগর। এর মধ্যে শহীদুল জাহির এর উপন্যাস ‘সে রাতে পূর্ণিমা ছিল’ এবং অভিজিৎ সেন এর উপন্যাস ‘রহু চণ্ডালের হাড়’ দেশে ও দেশের বাইরে দর্শকের মুগ্ধতা কুড়িয়েছে। আরশিনগর তার চতুর্থ প্রযোজনা হিসেবে মঞ্চে আনলো নোবেল বিজয়ী জার্মান সাহিত্যিক হেরমান হেসের উপন্যাস ‘সিদ্ধার্থ’।

নিয়মিত নাট্য মঞ্চায়নের পাশাপাশি আরশিনগর নাট্য-গবেষণা, নাট্য-কর্মশালা ও সেমিনার আয়োজন এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড উদযাপনের সাথে যুক্ত।


সিদ্ধার্থ

গৌতম বুদ্ধের পিতৃপ্রদত্ত নাম সিদ্ধার্থ। তবে হেরমান হেসের সিদ্ধার্থ সরাসরি গৌতম বুদ্ধ নয়- আবার একইসাথে গৌতম বুদ্ধ-ও। গৌতম বুদ্ধের ঔজ্জ্বল্যে আড়াল হয়ে পড়া গৌতমের ব্যক্তিগত মনোজগতের রঙে সিদ্ধার্থকে আঁকা হয়েছে। ব্রাহ্মণ কুমার সিদ্ধার্থ পিতার অমতে ঘর ছাড়ে- সন্ন্যাস গ্রহণ করে। দীর্ঘ তিনবছর সন্ন্যাসব্রতের কঠোর সাধনা, আত্ম-নিগ্রহ, উপবাস, দৈহিক নির্যাতনের পর সন্ন্যাস ত্যাগ করে। এরপর সৌভাগ্য হয় বুদ্ধের সাক্ষাৎ লাভ ও উপদেশ শোনার আশ্চর্য অভিজ্ঞতার। 

কিন্তু বুদ্ধের শিষ্যত্ব গ্রহণ না করে পথে বেরিয়ে পড়ে। পথে দেখা হয় নগরের শ্রেষ্ঠ বারাঙ্গনার, পরিচয় হয় নতুন এক জীবনের সাথে। সে 

জীবনের নাম সংসার-সন্তান লাভের খেলা। দীর্ঘ কুড়ি বছর সে জীবনের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকার পর সিদ্ধার্থের মনে হয় এ খেলা শেষ হয়েছে। এ খেলা একবার, দুবার, দশবার ভালো লাগে- কিন্তু বারবার এ খেলার প্রয়োজন আছে কী?

মাত্রাতিরিক্ত ভুরিভোজনের পর যেমন খাদ্যের উপর আকর্ষণ চলে যায়, খাদ্য দেখলে যেমন বমিভাব হয়, সংসারের উপর সিদ্ধার্থের তেমনই বিতৃষ্ণা জাগে। সিদ্ধার্থ সে জীবন ত্যাগ করে আশ্রয় নেয় নদীর কাছে। নদীর কাছে থাকতে থাকতে সিদ্ধার্থ শেখে নদীর ভাষা। উপলব্ধি করে জীবনের বৃহত্তর মানে। জীবন ও মৃত্যু, পাপ ও পূণ্য, জ্ঞান ও নির্বুদ্ধিতা- সবকিছুরই প্রয়োজন আছে জীবনে। এ সকল অভিজ্ঞতা জীবনকে পূর্ণ করে। এ অভিজ্ঞতার নামই জ্ঞান। যা কাউকে শেখানো যায় না, অর্জন করতে হয়।

প্রযোজনাটির অভিনয় পরিকল্পনা মূখ্যত চরিত্রানুগ হলেও কখনো কখনো বর্ণনার আশ্রয়ও গৃহিত হয়েছে। মঞ্চ নিরাভরণ। পোষাক নাট্যধর্মী। আলোর প্রয়োগ সামান্য। প্রযোজনাটির চূড়ান্ত মনোযোগ সিদ্ধার্থের জীবনোপলব্ধির প্রতি, বাহ্যিক আভরণে নয়।


আই. কে. জে/


আরশিনগর ঢাকা সিদ্ধার্থ মঞ্চনাটক

খবরটি শেয়ার করুন