ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য কমায় দেশের বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৫ টাকা কমিয়ে ১৬৯ টাকা এবং ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮২৫ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি লিটার খোলা পাম তেলের দাম ৪ টাকা কমিয়ে ১২৪ টাকা করা হয়েছে।
একই প্রভাব পড়েছে দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জেও। তবে এই বাজারে মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে লিটারে ৫ টাকা কমে সয়াবিন তেল ১৫০ টাকায় এবং পাম তেল ১১৯ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা সরকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে অন্তত ১০ টাকা কম।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা গেছে।
তবে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রতি লিটারে ৫ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হয়েছে। মূলত বাজারে ক্রেতা সংকটের কারণে তেলের দাম কমাতে বাধ্য হয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
ভোজ্যতেলের দাম কমার বিষয়ে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের খুচরা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, এক সপ্তাহ ব্যবধানে সয়াবিন তেল ও পাম তেলের দাম ৭০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
আরেক খুচরা ব্যবসায়ী চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আব্বাস সওদাগরের ম্যানেজার জাফর আহমদ বলেন, আমরা খুচরা পর্যায়ে দেখছি চাহিদা কমছে। যে লোক আগে ৫ কেজি সয়াবিন তেল কিনতো, সে এখন কয়েক মাসের জন্য ২ কেজি সয়াবিন তেল কিনছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিদিনেই কমছে ভোজ্যতেলের বুকিং রেট। কয়েকদিনের ব্যবধানে অন্তত ৭০ ডলার কমে প্রতি টন সয়াবিন ১ হাজার ৩০ মার্কিন ডলার এবং পাম অয়েল ৮৯০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
এরই প্রভাব দেশের বাজারে পড়ছে উল্লেখ করে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স সবুজ কমার্শিয়ালের মালিক শাহেদ উল আলম বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে। তাই স্বাভাবিকভাবে দেশের বাজারেও দাম কমছে।
খুচরা বাজারে ক্রেতা সংকট এবং দাম কমার প্রভাবে বড় ধরনের ধ্বস নেমেছে ভোজ্যতেলের পাইকারি পর্যায়েও। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আর এম এন্টারপ্রাইজের মালিক আলমগীর পারভেজ বলেন, সরকার প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৬৯ টাকা এবং পাম তেলের ১২৪ টাকা নির্ধারিত করে দিয়েছে। তারপরেও কিন্তু আমরা আমাদের স্থানীয় বাজারে পণ্যের ক্রেতা পাচ্ছি না।
আরো পড়ুন: সয়াবিন তেলের দাম কমানোর ঘোষণা
প্রসঙ্গত, বছরে বাংলাদেশে প্রায় ২৩ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। যা দেশের ৮ থেকে ১০টি প্রতিষ্ঠান আমদানির পর পরিশোধনের মাধ্যমে বাজারজাত করছে।
বাংলাদেশের ভোজ্যতেলের বাজার প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। তাই বিদেশি বুকিং রেটের ওপর নির্ভর করে দেশের বাজারে এই তেলের দর উঠানামা। তবে এখন যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের ভোজ্যতেলের বুকিং রেট কম রয়েছে, তাই তার প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে। ফলে কমছে ভোজ্যতেলের দাম। একই সঙ্গে ভোক্তা পর্যায়ে তেলের চাহিদা কমে যাওয়ায় তেলের বাজার এখন নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভোজ্যতেলের দাম কমানোর ঘোষণা দেয়।
এতে বলা হয়, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য কমায় দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমানো হয়েছে। ফলে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৫ টাকা কমিয়ে ১৬৯ টাকা এবং ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮২৫ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি লিটার খোলা পাম তেলের দাম ৪ টাকা কমিয়ে ১২৪ টাকা করা হয়েছে।
নতুন এ দাম রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন